কাড়াকাড়ি: বল নিয়ে। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক
কখনও বক্সের বাইরে থেকে গোলমুখী দুরন্ত শট। কখন ড্রিবল করে বিপক্ষের রক্ষণকে তছনছ করে এগিয়ে যাওয়া। এ পার এবং ও পার বাংলার প্রাক্তন ফুটবলারদের মারপ্যাঁচ দেখে হাজার পাঁচেক দর্শক তখন উল্লাসে ফেটে পড়ছেন।
মঙ্গলবার গোপালনগর থানার নহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে ঢাকা সম্মিলনী ও এ দেশের পুলিশের একটি দলের মধ্যে ম্যাচটি হয়ে গেল। আয়োজক, নহাটা উচ্চ বিদ্যালয়। দর্শকদের উচ্ছ্বাস দেখে দৃশ্যতই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েন বাংলাদেশ থেকে খেলতে আসা সৌকত হোসেন, মহম্মদ আমিরুল আলি, আব্দুল আলিম খানেরা। অনেকে বলে গেলেন, মনে হচ্ছে বিদেশে নয়, বাংলাদেশেরই কোনও মাঠে বল নিয়ে দৌড়োচ্ছেন।
খেলা নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে উৎসাহ তৈরি হয়েছিল আগেই। ম্যাচের দিন অনেকে গালে দু’দেশের জাতীয় পতাকা এঁকে এসেছিলেন। হাতেও ছিল জাতীয় পতাকা। খেলা শুরুর আগে দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। তাতে দর্শকেরাও গলা মেলান। দু’দেশের খেলোয়াড়েরা যখনই ভাল খেলেছেন, হাততালি দিয়ে উৎসাহ দিয়েছেন দর্শকেরা। ফুটবলারেরাও পাল্টা হাত নেড়ে দর্শকদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
আব্দুল আলিম বাংলাদেশের নামকরা ফুটবলার ছিলেন। খেলা শেষে বলেন, ‘‘এখানে দর্শকদের এত ভালবাসা পাব, ভাবতেই পারিনি। দু’শের মধ্যে কোনও কাঁটাতার আছে, ভুলে গিয়েছিলাম। দর্শকদের উৎসাহ দেখে মনে হচ্ছিল, আমার যৌবনে যেন বাংলাদেশেরই মাঠে কোনও ম্যাচ খেলছি। ভবিষ্যতে সুযোগ পেলে ফের এ দেশে খেলতে আসব।’’
দু’দলেই খেলেছেন অতীতে কলকাতার বিভিন্ন দলে খেলা এবং ঢাকার ক্লাব দলে খেলা ফুটবলারেরা। হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত এ দেশের দলটি হারিয়ে দেয় ঢাকা সম্মিলনীকে। খেলার ফল ২-০। পুলিশ দলের হয়ে গোল করেছেন মদন সাহা ও অনুপ সাহা।
আয়োজক নহাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিখিলরঞ্জন তালুকদার বলেন, ‘‘দু’দেশের মানুষের মধ্যে সম্প্রীতি আরও গাঢ় হবে, এই আশায় ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছিল। এ ধরনের উদ্যোগ যত বেশি হবে, দু’দেশের মানুষের সম্পর্কের ততই উন্নতি ঘটবে।’’