গ্রামের পথে:বৃহস্পতিবার সকালে বুরুলে মণ্ডপে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে কালী প্রতিমা। ছবি: উৎপল সরকার।
সকাল শুরু হয়েছিল শরতের মেজাজে। কিন্তু দুপুরে সাগর থেকে নিম্নচাপটি উপকূলের দিকে এগোতেই বদলে গেল পরিবেশ। মেঘলা আকাশের সঙ্গে মিলল কয়েক পশলা বৃষ্টিও। কালীপুজো আর দীপাবলির মেজাজের সঙ্গে যা নিতান্তই বেমানান।
আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রবিবার বঙ্গোপসাগরে একটি নিম্নচাপ দানা বেঁধেছিল। সেটি জোর বাড়িয়ে ওডিশা উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছে। তার ফলেই আবহাওয়ার এমন ভোলবদল। নিম্নচাপটি জোর বাড়িয়ে গভীর নিম্নচাপের চেহারা নেবে। আজ, শুক্রবার ভোরে সেটি ওডিশার পুরী ও চাঁদবালির মাঝামাঝি কোনও জায়গা দিয়ে স্থলভূমিতে ঢুকবে। তার ফলে কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই বৃষ্টি হবে। কোনও কোনও এলাকায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কাও আছে।
এ দিন দুপুরেই এক পশলা বৃষ্টি হয়েছিল। বিকেলের পরে এবং রাতেও বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টি হয়েছে। দীপাবলির সন্ধেয় এমন উটকো বৃষ্টিতে মুষড়ে পড়েছেন অনেকেই। বিরাটির স্কুলপড়ুয়া ঈশানী সেন এ বছর বাজির বদলে ফানুস কিনেছিল। সন্ধের বৃষ্টি দেখে কাঁচুমাচু মুখে মাকে প্রশ্ন করলো, ‘‘বৃষ্টির মধ্যে তো ফানুস উড়বে না। তা হলে কী হবে?’’ ঈশানীর আনন্দ অবশ্য মাঠে মারা যায়নি। বৃষ্টির ফাঁকেই আকাশে আলোর প্রদীপ উড়িয়েছে সে। বৃষ্টিকে আমল না দিয়েই পু়ড়েছে আতসবাজি। দেদার শব্দবাজির আওয়াজও মিলেছে।
তবে এই বৃষ্টিতে কিছুটা স্বস্তিতে পরিবেশবিদেরা। তাঁরা বলছেন, কালীপুজো, দীপাবলির সময়ে ইদানীং যে পরিমাণ আতসবাজি ফাটে তার দূষিত ধোঁয়া বাতাসে জমে থাকে। তা থেকে শ্বাসকষ্ট ও ফুসফুসের ক্ষতি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কয়েক পশলা বৃষ্টি হলে ভাসমান দূষিত কণাগুলি ধুয়ে যাবে। ঠিক যেমন ভাবে বর্ষার সময়ে কলকাতার বায়ুদূষণ এক লপ্তে অনেকটাই কমে যায়।
আমজনতার প্রশ্ন, দূষণ না হয় কমল। কিন্তু এই বর্ষার আবহাওয়া পিছু ছাড়বে কবে? হাওয়া অফিস সূত্রের ব্যাখ্যা, বর্ষা বিদায় নিয়েছে। নিম্নচাপের ফলে বর্ষার ছায়া রয়েছে শুধু। শনিবার থেকে নিম্নচাপের প্রভাব উত্তরবঙ্গে চলে যাবে। দক্ষিণবঙ্গে আবহাওয়ার উন্নতি শুরু হবে।
ক’দিন আগে বর্ষা বিদায় নিতেই উত্তুরে হাওয়া মালুম হচ্ছিল। কিন্তু নিম্নচাপের প্রভাবে তা বন্ধ হয়েছে। নিম্নচাপের প্রভাব কাটলেই ফের উত্তুরে হাওয়া মালুম হবে বলে মনে করছেন আবহবিজ্ঞানীরা।