এ বার রেশন পাবে শিমূলডিহি

সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করে খাদ্য দফতর। তাতে বেমালুম বাদ গিয়েছিল খয়রাশোলের পারশুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমূলডিহি নামক পুরো গ্রামটাই। তার ফলে গোটা গ্রামের মানুষ রেশন থেকে বাদ পড়েছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খয়রাশোল শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ০২:৪৭
Share:

প্রায় এক বঞ্চিত থাকার পরে ফের রেশন পেতে চলেছে খয় রাশোলের শিমূলডিহি গ্রামের বাসিন্দারা। সৌজন্যে রাজ্য খাদ্য ও সরবরাহ দফতর। বৃহস্পতিবার জেলার গণবণ্টন ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে সিউড়ি এসেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। সেখানেই সুখবর শোনান মন্ত্রী।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর এবং পুরসভাগুলি থেকে আর্থ-সামাজিক ও বর্ণ সমীক্ষা করা হয়েছিল। সেই সমীক্ষা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে একটি তালিকা তৈরি করে খাদ্য দফতর। তাতে বেমালুম বাদ গিয়েছিল খয়রাশোলের পারশুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমূলডিহি নামক পুরো গ্রামটাই। তার ফলে গোটা গ্রামের মানুষ রেশন থেকে বাদ পড়েছিলেন। বহু আবেদন, নিবেদন করার পরে ফের রেশন চালু হতে চলায় স্বস্তিতে গ্রামের মানুষ।

সংশ্লিষ্ট দফতর ও খয়রাশোল ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ডিজিটাল রেশন কার্ড হাতে না পেলেও মার্চ মাসের রেশন পাবে ওই গ্রামের ১২২টি পরিবার। বিডিও সঞ্জয় দাস বলছেন, ‘‘প্রতি পরিবারকে চার সপ্তাহের চারটি করে কুপন দেওয়া হবে। আজ, শনিবারই কুপন বিলি হবে। যেগুলি নিয়ে গেলে গ্রামের রেশন ডিলার প্রত্যেক পরিবারকে বরাদ্দ খাদ্যসামগ্রী দেবেন। এপ্রিলেই রেশন কার্ড হাতে পাবেন বাসিন্দারা।’’

Advertisement

সমস্যা হল, খসড়া এবং চূড়ান্ত কোনও তালিকাতেই পারশুণ্ডি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার শিমূলডিহি গ্রামের নাম ছিল না। ওই তালিকা ধরেই প্রস্তুত হয় কেন্দ্রীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অন্তর্ভুক্তি। ২০১৬ সালের গোড়ায় ডিজিটাল রেশন কার্ড পাওয়া শুরু হয়। কিন্তু, শিমূলডিহির এক জনও কার্ড পাননি। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের বাইরে থেকে গিয়েছেন, এমন কিছু মানুষ ছিলেন যাঁরা সত্যিই খাদ্য সুরক্ষার আওতায় আসতে পারেন। তাঁদের সকলকে প্রকল্পের সুবিধার মধ্যে নিয়ে আসতে রাজ্য সরকার রাজ্য খাদ্য প্রকল্প, খাদ্যসাথী নিয়ে আসে। পদ্ধতিগত জটিলতায় সেই তালিকাতে নাম তুলতে পারেননি ওই গ্রামের বাসিন্দারা। তিন, তিন বার আবেদন করেও ব্যর্থ হন।

গত ফেব্রুয়ারি থেকেই কার্ড ছাড়া রেশন ডিলাররা সামগ্রী দেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পরই বেকায়দায় পড়ে যান গ্রামের মানুষ। শুরু হয় আন্দোলন। জোরালো হয় দাবি। সেই দাবি ব্লক, জেলা প্রশাসন হয়ে পৌঁছয় রাজ্য খাদ্য দফতরের। সংশ্লিষ্ট দফতর ব্লক প্রশাসনের মাধ্যমে গ্রামের প্রতিটি পরিবার ও সেই পরিবারগুলির সদস্য বিষয়ক বিস্তারিত তথ্য চেয়ে নেয়। তারপরেই ওই গ্রামের বাসিন্দাদের রেশন দেওয়ার ব্যবস্থা হয়। খাদ্যমন্ত্রী বলছেন, ‘‘আর অসুবিধা থাকবে না ওই গ্রামে।’’

গ্রামের কবিতা চক্রবর্তী, খগেন্দ্রনাথ কর্মকার, পবন বাদ্যকর, সাধু বাউড়িরা বলছেন, ‘‘অনেক কষ্টের পর শেষ পর্যন্ত চালু হচ্ছে রেশন।’’ তবে গ্রামের মানুষের আক্ষেপ রয়েছে এখনও। তাঁদের দাবি, সমীক্ষায় নাম না থাকায় শুধু রেশন বন্ধ নয়। আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া, স্বনির্ভর দল তৈরি করা এখনও বন্ধ। রেশন চালু হওয়ার পরে বাকি সমস্যা মেটাক প্রশাসন।

সবই ধাপে ধাপে হবে, আশ্বাস ব্লক ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন