বৈঠক নিয়েই অভিযোগ

নয়া সিন্ডিকেটে দোষী সাব্যস্ত অর্থ অফিসার

শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচন এড়িয়ে সিন্ডিকেট গঠন নিয়ে বিতর্ক বহাল। তার মধ্যেই মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত সিন্ডিকেটের প্রথম বৈঠক এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযোগ ওঠায় বেড়ে গেল বিতর্কের মাত্রা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৬ ০৩:০১
Share:

শিক্ষক-প্রতিনিধি নির্বাচন এড়িয়ে সিন্ডিকেট গঠন নিয়ে বিতর্ক বহাল। তার মধ্যেই মঙ্গলবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবগঠিত সিন্ডিকেটের প্রথম বৈঠক এবং গৃহীত সিদ্ধান্ত নিয়ে অভিযোগ ওঠায় বেড়ে গেল বিতর্কের মাত্রা।

Advertisement

নতুন সিন্ডিকেটের বৈঠকে মূল আলোচ্য ছিল আর্থিক দুর্নীতি এবং তার তদন্ত রিপোর্ট। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সাসপেন্ড হওয়া ফিনান্স অফিসার হরিসাধন ঘোষের বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্টে শাস্তির সুপারিশ আছে এবং সিন্ডিকেটও তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছে। তবে হরিসাধনবাবুকে আত্মপক্ষ সমর্থনের একটা সুযোগ দিয়েছেন সিন্ডিকেটের সদস্যেরা।

নির্বাচিত শিক্ষক-প্রতিনিধি ছাড়া সিন্ডিকেট গঠন নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সংগঠন কুটা এবং যৌথ মঞ্চ। এ ভাবে সিন্ডিকেট গড়ার প্রতিবাদে আচার্য-রাজ্যপালের কাছে চিঠিও পাঠিয়েছে তারা। এ-হেন সিন্ডিকেটে তদন্ত রিপোর্ট পেশ এবং তার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়াটা অগণতান্ত্রিক বলে কুটা এবং যৌথ মঞ্চের অভিযোগ। সিন্ডিকেটের বৈঠকের আগে যৌথ মঞ্চের সদস্যেরা এ দিন বিক্ষোভেও সামিল হন।

Advertisement

২৮ এপ্রিল সিন্ডিকেটের মেয়াদ ফুরোনোর মাস দুয়েকের মধ্যে নতুন সিন্ডিকেট গড়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ শিক্ষক-নির্বাচনের পথে হাঁটেননি। শুধু যাঁরা পদাধিকারবলে সদস্য, তাঁদের এবং মনোনীত সদস্যদের নিয়ে তৈরি হয়েছে নতুন সিন্ডিকেট। এতে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘিত হয়েছে এবং এর জেরে পঠনপাঠনও মার খাবে বলে অভিযোগ তুলে আচার্যের কাছে প্রতিবাদপত্র পাঠিয়েছেন শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, নির্বাচন এড়িয়ে সিন্ডিকেট গড়ায় গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত তো হয়েছেই। তার উপরে প্রথম বৈঠকে আর্থিক দুর্নীতির বিষয়টিকে মূল আলোচ্য করায় সেই আলোচনায় শিক্ষক-প্রতিনিধিদের বক্তব্য জানানোর সুযোগই দেওয়া হল না।

অস্থায়ী উপাচার্য সুগত মারজিত এখন বিদেশে। রেজিস্ট্রার সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়ও ছুটিতে। তার মধ্যেই এ দিন জরুরি ভিত্তিতে নতুন সিন্ডিকেটের প্রথম বৈঠক ডাকা হয় এবং হরিসাধনবাবুর বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে গড়া কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা হয়। সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) স্বাগত সেন জানান, শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির তদন্ত অনুযায়ী হরিসাধন ঘোষ দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। সেই রিপোর্টের প্রতিলিপি হরিবাবুর কাছে পাঠানো হচ্ছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য ২১ দিন সময় দেওয়া হবে তাঁকে। তার পরে ফের সিন্ডিকেটের বৈঠকে তাঁর বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত হরিবাবুকে চাকরি থেকে বরখাস্ত অথবা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। প্রধান অভিযোগকারিণী, সহ-উপাচার্য (অর্থ) সোনালী বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রধান করে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ সেই সময় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। সেই কমিটির তদন্তে দোষী সাব্যস্ত করা হয় হরিবাবুকে। কিন্তু অভিযোগকারিণী কী ভাবে তদন্ত কমিটিতে থাকেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষকদের একাংশ। তার পরে আচার্য-রাজ্যপালের হস্তক্ষেপে একটি শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি তৈরি করতে বাধ্য হন বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন