BJP

এফআইআর বিজেপি প্রধানের বিরুদ্ধে

আইনজীবীদের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আদালত কর্মীর থেকে অভিযোগ পেয়ে বিচারক সিদ্ধার্থশংকর রায়চৌধুরী গত ১৯ ডিসেম্বর ধানতলা থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন।

Advertisement

সুদেব দাস

রানাঘাট শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:০২
Share:

—প্রতীকী ছবি।

আদালতের নির্দেশ মতো জবরদখল উচ্ছেদের নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন আদালত কর্মী। তাঁকে আটকে রেখে হেনস্থা ও খুনের হুমকির অভিযোগ উঠেছে বিজেপির পঞ্চায়েত প্রধান-সহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে। নদিয়ার ধানতলা থানা এলাকার ওই ঘটনায় এফআইআর করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। পুলিশ এফআইআর দায়েরও করেছে। তবে তার পর তিন দিন কেটে গেলেও অভিযুক্তদের কেউ ধরা পড়েনি।

Advertisement

গত ১৮ ডিসেম্বর ধানতলা থানার কামালপুর পঞ্চায়েতের ব্রিজপাড়া এলাকায় উচ্ছেদের নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন রানাঘাট আদালতের কর্মী সুব্রতকুমার পাল। তাঁর অভিযোগ, নিজেকে আদালত কর্মী পরিচয় দেওয়ার পরেও স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ তাঁকে হেনস্তা করে। খুনের হুমকিও দেওয়া হয়। গন্ডগোলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান বিজেপির বুলু আধিকারী। অভিযোগ, তাঁর ইন্ধনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। খবর পেয়ে প্রায় ঘণ্টা খানেক পরে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ। শেষ পর্যন্ত কোনও মতে প্রাণ হাতে নিয়ে ফেরেন ওই কর্মী। ওই দিনই বিচারকের কাছে তিনি লিখিত আকারে বিষয়টি জানান। অভিযোগপত্রে সুব্রত জানিয়েছেন, ওই পঞ্চায়েতের প্রধান ছাড়াও উপস্থিত কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক তাঁকে শাসিয়েছেন এবং ফৌজদারি মামলার হুমকি দিয়েছেন।

আইনজীবীদের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের শুরুতে রানাঘাট-পানিখালি রাজ্য সড়কের পাশে থাকা একটি জমির মালিকানা নিয়ে আদালতে মামলা করেন কামালপুরের এক বাসিন্দা। বর্তমানে ওই জমিতে অস্থায়ী টিনের ঘর করা রয়েছে। বিচারক ওই জমি থেকে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদের নির্দেশ দিয়েছেন। সেই নির্দেশের প্রতিলিপি সরবরাহ ও কার্যকর করার জন্য এলাকায় গিয়েছিলেন সুব্রত।

Advertisement

আইনজীবীদের একাংশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই আদালত কর্মীর থেকে অভিযোগ পেয়ে বিচারক সিদ্ধার্থশংকর রায়চৌধুরী গত ১৯ ডিসেম্বর ধানতলা থানাকে এফআইআর করার নির্দেশ দেন। পর দিন এফআইআর দায়ের করে থানা। লোক সেবককে কাজে বাধা, সরকারি নির্দেশ অমান্য করা, শারীরিক নিগ্রহ, প্রাণনাশের হুমকি ইত্যাদি ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তবে ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের কেউ গ্রেফতার হয়নি।

সুব্রত বলেন, ‘‘আদালতকে সব জানিয়েছি। নতুন করে মন্তব্য করতে চাই না।’’ পঞ্চায়েতের প্রধান বিজেপির বুলু অধিকারী বলেন, ‘‘ওই দিন পুলিশ পৌঁছনোর পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশের কথা মতো আমি উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা করি। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ আনা হয়েছে।’’ বিষয়টি নিয়ে বিজেপি অবশ্য প্রধানের পাশে দাঁড়ায়নি। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। ঘটনা যদি সত্যি হয়, প্রধানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’’

পুলিশের দাবি, ওই আদালত কর্মী কেন পুলিশকে না জানিয়ে নোটিস ধরাতে গিয়েছিলেন, সেই কথাই তাঁকে বলা হয়েছিল। হুমকি দেওয়া হয়নি। একাধিকবার চেষ্টার পরেও রানাঘাট পুলিশ জেলা সুপার কুমার সানি রাজের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা যায়নি, তাই প্রতিক্রিয়া মেলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন