ফেরাতে পারিনি কর্মসংস্কৃতি, খেদ খাদ্যমন্ত্রীর

পরিবর্তনের জমানা। কিন্তু কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন যে বিশেষ হয়নি বা হচ্ছে না, তৃণমূল সরকারের এক জন মন্ত্রী অন্তত তা স্বীকার করে নিলেন। নিজের দফতরে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে তিনি ব্যর্থ বলে শুক্রবার বিধানসভায় জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর স্বীকারোক্তি, অনেক কাজ করলেও ৩৪ বছরের কর্মসংস্কৃতি বদলাতে পারেননি তিনি। তাঁর আক্ষেপ, এক শ্রেণির কর্মী কাজের বদলে ইউনিয়ন করতেই ভালবাসেন! অথচ পরিবর্তনের ডাক দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি কর্মীদের মধ্যে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৪ ০৩:২৪
Share:

পরিবর্তনের জমানা। কিন্তু কর্মসংস্কৃতির পরিবর্তন যে বিশেষ হয়নি বা হচ্ছে না, তৃণমূল সরকারের এক জন মন্ত্রী অন্তত তা স্বীকার করে নিলেন।

Advertisement

নিজের দফতরে কর্মসংস্কৃতি ফেরাতে তিনি ব্যর্থ বলে শুক্রবার বিধানসভায় জানান খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তাঁর স্বীকারোক্তি, অনেক কাজ করলেও ৩৪ বছরের কর্মসংস্কৃতি বদলাতে পারেননি তিনি। তাঁর আক্ষেপ, এক শ্রেণির কর্মী কাজের বদলে ইউনিয়ন করতেই ভালবাসেন!

অথচ পরিবর্তনের ডাক দিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারি কর্মীদের মধ্যে কর্মসংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। ইউনিয়নের নামে আন্দোলন করা যাবে না বলে প্রশাসনিক মহলে তাঁর প্রায় অলিখিত বার্তাই রয়েছে। সরকারি অফিসই হোক বা কল-কারখানা, যে-কোনও ক্ষেত্রের সমস্যা আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নেওয়ার কথাই বলছেন তিনি। কিন্তু পরিবর্তনের জামানাতেও সার্বিক ভাবে কর্মসংস্কৃতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন হয়নি বলে অনেক মন্ত্রীরই অভিমত। জ্যোতিপ্রিয়বাবু এ দিন সেটা স্বীকার করে নিয়েছেন মাত্র।

Advertisement

এ দিন বিধানসভায় খাদ্য দফতরের বাজেট-বরাদ্দ অনুমোদনের সময় কোনও বাম বিধায়ক ছিলেন না। কংগ্রেসের কয়েক জন ছিলেন। জবাবি বক্তৃতায় জ্যোতিপ্রিয়বাবুর দাবি, রেশন ব্যবস্থা ঢেলে সাজার সঙ্গে সঙ্গে ভুতুড়ে রেশন কার্ড বাতিল, প্রতিটি জেলায় দফতরের অফিস খোলা, চা-বাগানের কর্মহীন শ্রমিক ও দুঃস্থদের কাছে দু’টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পৌঁছে দেওয়ার জন্য চেষ্টার কসুর করছেন না তিনি। বেশ কিছু কর্মী-অফিসারও এই প্রয়াসে সামিল হয়েছেন। কিন্তু খাদ্য ভবনের এক শ্রেণির কর্মী এখনও কাজের বদলে ইউনিয়ন করতেই ভালবাসেন। উদাহরণ দিয়ে খাদ্যমন্ত্রী জানান, তিনি হয়তো আধিকারিকদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করছেন। তখনই দেখা গেল, এক দল কর্মী ঝান্ডা হাতে স্লোগান দিতে দিতে মিছিল করছেন। মন্ত্রীর মন্তব্য, “ইউনিয়নটা কম করতে হবে।”

কংগ্রেসের অসিত মিত্র তখন বিধানসভায় ছিলেন। পরে তিনি জানান, খাদ্য দফতরের অধীন অত্যাবশ্যক পণ্য নিগমে ‘এমপ্লয়িজ কংগ্রেস’ নামে তাঁদের একটি সংগঠন রয়েছে। বছরে সেই ইউনিয়নের তিন-চার দিন কর্মসূচি থাকে। সরকারি কাজে ব্যাঘাত ঘটানো তাঁদের ইউনিয়নের উদ্দেশ্য নয়।

খাদ্যমন্ত্রীর সুরেই রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের (খাদ্য দফতর) সাধারণ সম্পাদক সমীরণ রায় জানান, খাদ্য দফতরের এক শ্রেণির কর্মী কাজের বদলে ইউনিয়ন করতে ভালবাসেন। আবার খাদ্য দফতরেরই সাব-অর্ডিনেট ফুড সাপ্লাই সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী মনে করেন, দফতরে কর্মী ও পরিকাঠামোর অভাব আছে। ফলে কর্মসংস্কৃতিতে খামতি থাকবেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন