বারাক ওবামা প্রশাসনের তরফে তাঁকে আগেই আমেরিকা যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ডেমোক্র্যাটরা জিতলে গত সেপ্টেম্বরেই মার্কিন মুলুকে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু রিপাবলিকান পার্টির ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এ বার কি তা কেটে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলছে?
ট্রাম্প প্রশাসন ক্ষমতায় আসার পরে এই প্রথম আর্থিক ও বাণিজ্যিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যে আসছেন ওয়াশিংটনের প্রতিনিধিরা। ঘটনাচক্রে যদিও তাঁরা সবাই মার্কিন সেনা অফিসার। ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের ন’জন সেনা কর্তা তাঁদের প্রশিক্ষণের অঙ্গ হিসাবে রাজ্যের অর্থনীতি ও বাণিজ্য পরিস্থিতি দেখতে আসছেন। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে দিন দু’য়েকের জন্য ওই মার্কিন সেনা অফিসারদের রাজ্যে আসার কথা।
কলকাতার মার্কিন কনস্যুলেটের তরফেও জানানো হয়েছে, ওয়াশিংটনের ন্যাশনাল ওয়ার কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি দল ভারতের সংস্কৃতি ও অর্থনীতির সঙ্গে পরিচিত হতে আসছেন। কলকাতায় তাঁরা সরকারি অফিসার এবং বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে কথা বলবেন।
প্রশাসন সূত্রের খবর, মার্কিন সেনা অফিসারদের যে প্রতিনিধি দলটি আসছে তাতে রয়েছেন ব্রিটন হপার, এডওয়ার্ড অ্যান্ডারসন, এরিন পিটারসন, জেমস ফাওলার, জোসেফ কিং, মার্ক সাপিরো, পিটার গ্রাইজেন, রবার্ট পেন এবং ভিক্টর ওট। অনেকেরই প্রশ্ন, হঠাৎ মার্কিন সেনা অফিসারদের দল কেন রাজ্যের অর্থনীতি নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে?
প্রশাসনিক কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ন্যাশনাল ওয়ার কলেজে বিভিন্ন স্তরের সেনা অফিসারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তাঁদের যেমন যুদ্ধবিদ্যা ও রণকৌশল শেখানো হয় তেমনই পরিচিত করে তোলা হয় পৃথিবীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অংশের সঙ্গে। দেওয়া হয় সমসাময়িক ইতিহাস, ভূগোল, অর্থনীতি এবং কৌশলগত শিক্ষার পাঠ। সেই বিচারেই পশ্চিমবঙ্গকে বেছেছে মার্কিন প্রশাসন। ভারত সরকারের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির ‘স্প্রিং বোর্ড’ হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ। রাজ্যের ভূকৌশলগত অবস্থানের গুরুত্ব বোঝাতেই মার্কিন সেনা অফিসারদের বাংলায় আনা হচ্ছে বলে মনে করছেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা।
বাংলাদেশ, মায়ানমার-সহ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বাণিজ্যিক সম্পর্ক বাড়ানোর মাধ্যম হয়ে উঠবে পশ্চিমবঙ্গ। আগামী দিনে চিনও বঙ্গোপসাগরে তাদের সক্রিয়তা বাড়াতে পারে বলে ধারণা ওয়াশিংটন ও দিল্লির। মার্কিন সেনা অফিসাররা তাই এই অঞ্চলের পরিস্থিতি দেখে যেতে চান।