Calcutta High Court

কাপুরুষ ও বেকার বলে স্বামীকে গঞ্জনা, বাড়ি থেকে আলাদা করাটা ‘নিষ্ঠুরতা’! বলল কলকাতা হাই কোর্ট

২০০১ সালে বিয়ে হয় এই দম্পতির। আদালতের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে স্বামী-স্ত্রী দু’জন আলাদা রয়েছেন। এত দিন পরে তাঁদের বৈবাহিক জীবন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে লাভ নেই। বহাল থাকবে নিম্ন আদালতের রায়ই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৩ ১৪:৫৫
Share:

বাবা-মায়ের থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য করলে স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদ দেওয়ার মধ্যে অন্যায় নেই স্বামীর, পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের। —প্রতীকী ছবি

বাবা-মায়ের থেকে আলাদা থাকতে বাধ্য করলে স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদ দেওয়ার মধ্যে অন্যায় নেই স্বামীর। স্বামীকে অপমান করার মধ্যে স্ত্রীর নিষ্ঠুর মানসিকতার পরিচয় প্রকাশ পায়। বিবাহবিচ্ছেদের এক মামলায় রায়তে এমনই পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের। উচ্চ আদালতের মতে, স্ত্রীর বিরুদ্ধে স্বামীর উপর মানসিক নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। তিনি স্বামীকে ‘ভীতু’, ‘কাপুরুষ’ বা ‘বেকার’ বলে ডাকেন। স্বামীকে তাঁর বাবা-মায়ের থেকে আলাদা করার চেষ্টা করেছেন স্ত্রী। তাই ওই স্ত্রীকে বিবাহবিচ্ছেদ দিতেই পারেন স্বামী।

Advertisement

কয়েক বছর আগে স্ত্রীর বিরুদ্ধে সংসারে শান্তিভঙ্গের অভিযোগ তুলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা করেন পশ্চিম মেদিনীপুরের এক যুবক। মেদিনীপুরের আদালত তাঁর সেই আবেদনে সাড়া দেয়। নিম্ন আদালতের ওই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে আসেন স্ত্রী। এই মামলায় স্বামীর দাবি, পরিবারের ছোটখাটো কোনও বিষয় নিয়ে ঝগড়া করেন স্ত্রী। তার জন্য বার বার বাবা-মাকে কাঠগড়ায় তোলা হয়। একাধিক বার সমাধান করার চেষ্টা করলেও বিফলে যায়। এই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণে বিয়ের আগে স্ত্রীর ডায়েরির লেখার অংশ উঠে আসে। ওই ডায়েরিতে স্ত্রী লিখেছেন, ‘‘আমি সেই কাপুরুষকে ঘৃণা করি যাঁকে আমি বিয়ে করতে চলেছি। আমি অন্য কোথাও বিয়ে করতে চাই।’’ বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি উদয় কুমারের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, পিতামাতাকে সন্তান দেখভাল করবেন, তাঁদের সঙ্গে একই পরিবারে বসবাস করবেন ভারতীয় সংস্কৃতিতে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া পরিবার থেকে স্বামীকে আলাদা করার চেষ্টা স্ত্রীর নির্মমতার পরিচয়। ফলে এ ক্ষেত্রে স্বামী সংসারের শান্তির জন্য বিবাহবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন।

Advertisement

২০০১ সালে বিয়ে হয় এই দম্পতির। আদালতের মতে, দীর্ঘ দিন ধরে স্বামী-স্ত্রী দু’জন আলাদা রয়েছেন। এত দিন পরে এই মামলায় তাঁদের বৈবাহিক জীবন পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করে লাভ নেই। তাই নিম্ন আদালতের রায়ই বহাল থাকবে। তবে স্বামীকে স্ত্রী এবং তাঁদের একমাত্র সন্তানের উপযুক্ত ভরণপোষণ দিতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন