জঙ্গলে বাঘ! শিকারে যাবেন না, আর্জি বনকর্তার

এডিএফও (মেদিনীপুর) পূরবী মাহাতো আদিবাসী সমাজের প্রবীণ নেতাদের পা ধরে অনুরোধ করলেন, ‘‘বন্যপ্রাণীদের বাঁচার অধিকার আছে। এ ভাবে জঙ্গলে ঢুকে শিকার করবেন না। ওদের বাঁচতে দিন।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০৪:১১
Share:

লালগড়ে পায়ে ধরে নিবেদন বনকর্মী পূরবীদেবীর। নিজস্ব চিত্র

জঙ্গলে বাঘ। অথচ সেই লালগড় জঙ্গলে ‘শিকার’ করতে হাজির আদিবাসীরা। মঙ্গলবার এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে গাঁধীগিরির পথে হাঁটল মেদিনীপুর বন বিভাগ। এডিএফও (মেদিনীপুর) পূরবী মাহাতো আদিবাসী সমাজের প্রবীণ নেতাদের পা ধরে অনুরোধ করলেন, ‘‘বন্যপ্রাণীদের বাঁচার অধিকার আছে। এ ভাবে জঙ্গলে ঢুকে শিকার করবেন না। ওদের বাঁচতে দিন।’’

Advertisement

আদিবাসী সমাজের প্রথা ‘শিকার উৎসব’। বিভিন্ন তিথিতে সেই উৎসব পালিত হয়। বনকর্মীরা মোটামুটি নিশ্চিত, লালগড়ের জঙ্গলে বাঘ রয়েছে। ফলে চিন্তায় ছিল বন দফতর। এ বার জঙ্গলে যাতে কেউ শিকারে না যান সে জন্য প্রচারও করা হয়েছিল। লালগড়ের স্থানীয় আদিবাসীদের একাংশ সেই
আবেদনে সাড়া দিয়েছেন। কিন্তু তিথি মেনে উৎসবে যোগ দিতে এ দিন সকাল থেকেই গাড়িতে, পিক আপ ভ্যানে, বাসে করে দূরদূরান্ত থেকে আদিবাসীরা হাজির হন লালগড় বিট অফিস লাগোয়া মাঠে। বনকর্মীরা সকলকে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু সে অনুরোধ না মেনে জোর করে জঙ্গলে ঢুকতে যান অনেকে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে বাদানুবাদ শুরু হয়।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে এডিএফও পূরবীদেবী শিকারি দলের নেতৃত্বে থাকা প্রবীণদের পা ধরে আবেদন নিবেদন শুরু করেন। একজন মহিলা বন আধিকারিক এ ভাবে আবেদন করায় দ্বিধায় পড়ে যান শিকারিদের একাংশ। পূরবীদেবীর আবেদনে সাড়া দিয়ে শিকারি দলের কাদু মুর্মু, সাহেবরাম হাঁসদা, সুকুমার কিস্কুর মত অনেকেই ফিরে যান। কিন্তু তরুণ শিকারিদের একাংশ জোর করে ঝিটকা, পডিহা ও বুড়া বাবা থান লাগোয়া জঙ্গলে ঢুকে পড়েন। ডিএফও (মেদিনীপুর) রবীন্দ্রনাথ সাহা নিজেও এ দিন লালগড় গিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর কথায়, ‘‘আদিবাসীদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল। ঝাড়গ্রাম ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় আমরা সে কাজে সফল হয়েছি। এ বার বন্যপ্রাণী হত্যা প্রায় ৯৫ শতাংশ কমানো গিয়েছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement