তথ্য যাচাইয়ে সীমান্তের চার জেলা এগিয়ে

উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলাতেই ইভিপি-আগ্রহ বেশি।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০২:৪৯
Share:

ছবি: সংগৃহীত।

ইলেক্টরস ভেরিফিকেশন প্রোগ্রাম (ইভিপি) বা নির্বাচক তথ্য যাচাই কর্মসূচি শুরু হয়েছে ১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে অনলাইনে ২৮ লক্ষের কিছু বেশি ভোটার এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর। এবং সেই ২৮ লক্ষের মধ্যে সংখ্যার বিচারে শীর্ষে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে সাড়ে পাঁচ লক্ষ ভোটার ইভিপি-তে যোগ দিয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনা ছাড়াও নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরের মতো সীমান্তবর্তী জেলাতেই ইভিপি-আগ্রহ বেশি।

Advertisement

সংশ্লিষ্ট শিবিরের পর্যবেক্ষণ, এই উৎসাহের পিছনে অনেকটাই কাজ করছে ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেন্স (এনআরসি) বা নাগরিক পঞ্জি নিয়ে আতঙ্ক-উৎকণ্ঠা। এনআরসি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও ঘোষণা হয়নি। তা সত্ত্বেও গলার শিরা ফুলিয়ে কেন্দ্রের শাসক দলের নেতানেত্রীরা বিভিন্ন রাজ্যের নাগরিক পঞ্জি নিয়ে বিভিন্ন মন্তব্য করে চলেছেন। সে-সবই এখন আমজনতার অন্যতম প্রধান আলোচ্য। নাগরিক পঞ্জি-কেন্দ্রিক বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহের প্রক্রিয়াও শুরু করেছেন অনেকে। সেই তালিকায় চাকুরিজীবী, ব্যবসায়ী, উঁচু পদের সরকারি কর্তা ও কর্মী থেকে শ্রমজীবী— সকলেই রয়েছেন।

এই আবহের মধ্যেই নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী ইভিপি কর্মসূচি চলছে। অসমে এনআরসি নিয়ে ত্রাসের ছোঁয়া লেগেছে অন্যান্য রাজ্যেও। এনআরসি-র সঙ্গে ইভিপি-কে মিলিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে জনমনে। যদিও নির্বাচন কমিশন সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ইভিপি-র সঙ্গে নাগরিক পঞ্জির কোনও সম্পর্ক নেই।

Advertisement

প্রথম চারে

• নদিয়া: ১০
• মুর্শিদাবাদ: ৮
• উত্তর ২৪ পরগনা: ৭
• উত্তর দিনাজপুর: ৬


*হিসেব শতাংশে
তথ্যসূত্র : নির্বাচন কমিশন

এ-পর্যন্ত ভোটার-তথ্য যাচাইয়ের নিরিখে উত্তর ২৪ পরগনা শীর্ষে থাকলে দ্বিতীয় স্থানে আছে নদিয়া। সেখানে প্রায় সাড়ে চার লক্ষ ভোটার ইভিপি-তে যোগ দিয়েছেন। তৃতীয় স্থানে মুর্শিদাবাদ। সেখানে তথ্য যাচাই করেছেন প্রায় চার লক্ষ ২৫ হাজার ভোটার। উত্তর দিনাজপুরে প্রায় এক লক্ষ ভোটার কমিশনের এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। নদিয়ার তুলনায় উত্তর ২৪ পরগনা বড় জেলা। ফলে সেখানে ভোটার-সংখ্যা বাড়বে বলেই মত সংশ্লিষ্ট মহলের। তবে ভোটার-সংখ্যার নিরিখে শতাংশের হারে শীর্ষে নদিয়া, দ্বিতীয় মুর্শিদাবাদ, তৃতীয় উত্তর ২৪ পরগনা। এবং চতুর্থ স্থানে রয়েছে উত্তর দিনাজপুর।

কমিশনের এই তথ্য বিশ্লেষণ করে অনেক পর্যবেক্ষকের মত, ইভিপি-তে শীর্ষে থাকা চারটি জেলাই সীমান্তবর্তী। সেখানে নাগরিক পঞ্জির জুজু অনেকাংশেই ভোটারদের গ্রাস করছে, এ কথা বললে ভুল হবে না। সেই জন্যই ইভিপি-তে দ্রুত এগোচ্ছে সীমান্ত লাগোয়া ওই চারটি জেলা। অনলাইনের মাধ্যমে ইভিপি-তে যোগ দেওয়ার সুযোগ কলকাতায় অনেকটাই সহজ। কারণ, এখানে নেটওয়ার্কের সমস্যা কম, অনলাইনে ভোটারেরাও অনেকাংশে স্বচ্ছন্দ। কিন্তু ভোটার-সংখ্যার নিরিখে কলকাতায় এখনও পর্যন্ত ইভিপি-তে এক শতাংশেরও কম মানুষ যোগ দিয়েছেন! লোকসভা ভোটে পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য কেন্দ্রের তুলনায় উত্তর এবং দক্ষিণ কলকাতা আসনে ভোট পড়েছিল অনেক কম।

তবে প্রযুক্তিগত কারণে ইভিপি-র জন্য খোলা ওয়েবসাইট ন্যাশনাল ভোটারস সার্ভিস পোর্টাল (https://www.nvsp.in) এবং ভোটার হেল্পলাইন অ্যাপে মাঝেমধ্যেই সমস্যা হচ্ছে। ফলে অনেকে অনলাইনে ভোটার তথ্য যাচাই করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছেন। কমিশন-কর্তাদের দাবি, ওয়েবসাইট বা অ্যাপের ত্রুটির অভিযোগ মাঝেমধ্যে আসছে। তবে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করে পত্রপাঠ সমস্যা মেটানো হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন