Madrasa Exam

Madrasa exam: পাশে সদ্যোজাত, নতুন মা দিচ্ছে মাধ্যমিক! চার কন্যার মনের জোরকে কুর্নিশ শিক্ষা দফতরের

মুর্শিদাবাদের হাই মাদ্রাসার এক পরীক্ষার্থী রবিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন তাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে ভোরবেলা সেখানেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। পরিবারের পক্ষ থেকে সে খবর পৌঁছয় স্কুলে। স্কুলের তরফ যোগাযোগ করা হয় শিক্ষা দফতরে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

মুর্শিদাবাদ শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২ ০৬:৫২
Share:

ফাইল চিত্র।

শরীর কোনও মতেই সঙ্গ দিচ্ছিল না। কিন্তু তার মধ্যেও মনের জোরে চালিয়ে যাচ্ছিল লড়াই। রাজ্যের তিন জেলার চার নাবালিকা সদ্য সন্তানের জন্ম দিয়ে তার পরে বসল জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষায়। তাদের মধ্যে এক জন দিল মাদ্রাসার পরীক্ষা। তার ছিল ইতিহাস পরীক্ষা। বাকি তিন নাবালিকা মা বসল মাধ্যমিকের অঙ্ক পরীক্ষায়।

Advertisement

অন্তঃসত্ত্বা অবস্থাতেই এই চার কন্যা এত দিন ধরে অন্য বিষয়গুলোর পরীক্ষা দিয়ে এসেছে। এ দিন পরীক্ষা দিল সদ্যোজাত সন্তানদের পাশে নিয়ে।

মুর্শিদাবাদের হাই মাদ্রাসার এক পরীক্ষার্থী রবিবার সন্ধ্যা থেকেই প্রসব যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়ে। পরিবারের লোকজন তাকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে গেলে ভোরবেলা সেখানেই কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। পরিবারের পক্ষ থেকে সে খবর পৌঁছয় স্কুলে। স্কুলের তরফ যোগাযোগ করা হয় শিক্ষা দফতরে। শেষ পর্যন্ত তাদের তৎপরতায় হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেয় ওই ছাত্রী। এই জেলারই আর এক পরীক্ষার্থীরও রবিবার রাত থেকেই প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয় বলে পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে। সকালবেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সে-ও সেখানে সন্তানের মা হয়। হাসপাতালে বসেই পরীক্ষা দেয় সে।

Advertisement

সন্তানের জন্ম দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই মাধ্যমিকে বসে দক্ষিণ ২৪ পরগনার এক ছাত্রীও। সোমবার এক সরকারি হাসপাতাল থেকেই পরীক্ষা দেয় সে। বছর দেড়েক আগে নাবালিকা ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়। শনিবার জীবন বিজ্ঞান পরীক্ষা দিয়ে বাড়ি ফিরে অসুস্থ বোধ করে। রবিবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন পরিবারের লোকজন। সোমবার সকাল ১০টা নাগাদ সেখানেই সন্তান প্রসব করে মেয়েটি। প্রসবের পরেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানায়, সে পরীক্ষা দিতে চায়। তড়িঘড়ি হাসপাতালের তরফে ব্লক প্রশাসন এবং পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। প্রশাসনের সহযোগিতায় হাসপাতালে একটি ঘরে পরীক্ষা দিয়েছে সে-ও।

পশ্চিম মেদিনীপুরের জনজাতি গোষ্ঠীর এক নাবালিকা রবিবার গভীর রাতে সন্তানের জন্ম দিয়েছে। তার পরে এ দিন মাধ্যমিক দেয় সে। গত বছর করোনা-কালে বিয়ে হয় ওই নাবালিকার। জনজাতি গোষ্ঠীর ওই কন্যাশ্রীর পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। এই ঘটনায় অন্য একটি উদ্বেগের দিকও সামনে আসছে। নাবালিকা বিয়ে রুখতে সচেতনতা প্রচার থেকে শুরু করে কন্যাশ্রী, রূপশ্রীর মতো প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। তার পরেও নাবালিকা বিয়ের ঘটনায় উদ্বিগ্ন বিভিন্ন মহল। তবে এই চার সদ্য মায়ের মনের জোরকে কুর্নিশ করেছেন তাদের পরিবারের লোকজন ও শিক্ষা দফতর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন