কয়েন নিতে নারাজ ব্যাঙ্ক থেকে বাজার

নোট বাতিলের পরে লক্ষ্মীর ভাঁড় ভেঙে সংসার চালিয়েছিলেন অনেকে।ভাঁড় থেকে বেরিয়ে আসা লক্ষ-লক্ষ কয়েন নিয়ে এখন হিমশিম ব্যাঙ্ক থেকে বাজার। বহু জায়গাতেই হাল এমন দাঁড়িয়েছে যে দু’-পাঁচ টাকার চা-বিস্কুট খেয়ে কয়েন দিতে গেলেও দোকানি তেড়ে উঠছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৪ মার্চ ২০১৭ ০৩:৩৪
Share:

নোট বাতিলের পরে লক্ষ্মীর ভাঁড় ভেঙে সংসার চালিয়েছিলেন অনেকে।

Advertisement

ভাঁড় থেকে বেরিয়ে আসা লক্ষ-লক্ষ কয়েন নিয়ে এখন হিমশিম ব্যাঙ্ক থেকে বাজার। বহু জায়গাতেই হাল এমন দাঁড়িয়েছে যে দু’-পাঁচ টাকার চা-বিস্কুট খেয়ে কয়েন দিতে গেলেও দোকানি তেড়ে উঠছেন। দু’একটা মারপিটও হয়ে গিয়েছে।

কিছু দিন আগেই এক বার রটে গিয়েছিল, দশ টাকার অনেক কয়েন জাল। কেউ নিচ্ছিল না। এখন আবার রটেছে, এক টাকার নতুন ছোট কয়েন জাল। নবদ্বীপ থেকে মায়াপুর যেতে নৌকায় ভাগীরথী পেরোতে এক টাকা টিকিট লাগে। নবদ্বীপ ফেরিঘাটে তিন লক্ষ টাকার কয়েন জমেছে। কেউ ছোট কয়েন নিতে না চাইলে তাদের জানাতে বলে প্রচার চালাচ্ছে উত্তর ২৪ পরগনার হাবরা থানা।

Advertisement

কিন্তু শুধু এক টাকার কয়েন নয়, অন্য কয়েন নিয়েও গোলমাল হচ্ছে। মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুর গাড়িঘাটে ঝামেলা লেগেছে চায়ের দোকানে। চেনা খদ্দের টেবিলে গেলাস নামিয়ে খুচরো বাড়াতেই দোকানদার তা টান মেরে ছুড়ে ফেলেছেন ফুটপাথে। বেলডাঙা পাঁচরাহা মোড়ে চাল কিনে কিছু কয়েন দিতে গিয়েছিলেন এক জন। দোকানদার তাঁর হাত থেকে চাল কেড়ে নিয়েছেন। এই নিয়ে মারপিট বেধে গিয়েছে। নদিয়ার কৃষ্ণনগর থেকে শান্তিপুর, ছবিটা একই। রাজাপুরের মুদির দোকানি তরুণ পোদ্দারের আক্ষেপ, “কয়েক দিনে আমার ঘরেই প্রায় দেড় লক্ষ টাকার খুচরো জমে গিয়েছে। ব্যাঙ্ক তা জমা নিতে চাইছে না।” কেন এই অবস্থা? বেঙ্গল প্রভিনশিয়াল ব্যাঙ্ক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের নদিয়া জেলা কমিটির নেতা আশিস চক্রবর্তীর মতে, “এত খুচরো গুনে নেবে কে? রিজার্ভ ব্যাঙ্কও প্রচুর কয়েন দিচ্ছে। ভল্টে এত জায়গা নেই।” ইউবিআই থেকে এলাহাবাদ ব্যাঙ্ক— প্রায় সব ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারেরা বলছেন, লেনদেনের সময়ে এত কয়েন গোনার মতো কর্মী তাদের নেই। তবে কিছুটা কয়েনে দিলে তারা জমা নিতে পারে।

বীরভূমের লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার দীপ্তেন্দ্রনারায়ণ ঠাকুরের বক্তব্য, ‘‘আমার কাছে কোনও অভিযোগ নেই। তবে কাউন্টারে বসে খুচরো গুনে নেওয়া বেশ সমস্যার ব্যাপার।’’ নদিয়ার একটি ব্যাঙ্কের রিজিওন্যাল ম্যানেজার তপন ভট্টাচার্য বলেন, “ব্যাঙ্ক কখনওই কয়েন জমা নিতে অস্বীকার করতে পারে না। তবে এক সঙ্গে প্রচুর খুচরো জমা দিতে গেলে ম্যানেজারের সঙ্গে যোগাযোগ করে যাওয়াই ভাল।” তবে গুজব রুখতে প্রশাসনের যে ভূমিকা নেওয়া দরকার ছিল, বহু জায়গাতেই তা করা হয়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন