‘ট্রোল’ থেকে রেহাই নেই মিমি-নুসরতের

সোমবার প্রথম সংসদে গিয়েছেন তৃণমূলের দুই তারকা সাংসদ। সংসদ ভবনের সামনে কখনও একা, কখনও বা দু’জনে একসঙ্গে ছবি তুলেছেন।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৯ ০৩:০৭
Share:

সংসদে প্রথম দিনে মিমি, নুসরত। ছবি: টুইটার থেকে গৃহীত।

প্রার্থী হয়েছেন। জিতেছেন। সংসদে পৌঁছেছেন। সম্পূর্ণ হয়েছে বৃত্ত। তবু নেট দুনিয়ার ‘ট্রোল’ থেকে নিস্তার নেই নুসরত জাহান এবং মিমি চক্রবর্তীর।

Advertisement

সোমবার প্রথম সংসদে গিয়েছেন তৃণমূলের দুই তারকা সাংসদ। সংসদ ভবনের সামনে কখনও একা, কখনও বা দু’জনে একসঙ্গে ছবি তুলেছেন। মিমির পরনে ছিল নীল ডেনিম ও সাদা শার্ট। খয়েরি ফরম্যাল সুটে ছিলেন নুসরত। সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আসতেই দুই সাংসদকে ‘ট্রোল’ করা শুরু হয়।

কারও মন্তব্য, ‘‘ওটা কি শুটিংয়ের জায়গা!’’ কেউ লিখেছেন, ‘‘এঁরা কোনও কাজ করবেন না। শুধু ফোটোশুট করে বেড়াবেন।’’ অনেকে দাবি করেছেন, বাঙালি হিসেবে ‘লজ্জা’ পাচ্ছেন তাঁরা। শাড়ি পরিহিতা বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের ছবি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘এটাই ভারতীয় সংস্কৃতি।’’ দুই সাংসদকে ব্যঙ্গের প্রতিযোগিতায় সিপিএম এবং বিজেপি সমর্থক বলে পরিচয় দেওয়া প্রোফাইল দেখা গিয়েছে সমান ভাবেই।

Advertisement

বিতর্কিত টুইট করেছেন পরিচালক রামগোপাল বর্মা-ও। মিমি-নুসরতের একটি ‘টিকটক ভিডিয়ো’ তুলে দিয়ে তিন বার ‘ওয়াও’-সহ রামগোপাল লিখেছেন, ‘‘ভারত সত্যিই উন্নতি করছে। এমন সাংসদদের দেখতে পাওয়াটা চোখের আরাম।’’

প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার প্রথম দিন থেকেই নুসরত-মিমিদের জন্য বরাদ্দ ছিল টিকা-টিপ্পনী। প্রশ্ন উঠেছিল, তাঁরা যোগ্য কি না? এই ‘ট্রোলিং’কে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ যাদবপুরের সাংসদ মিমি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি জানি, কী করছি আর কী করব। এগুলোতে কিছু এসে যায় না। কোনও রুলবুকে লেখা নেই যে কোথাও ছবি তুলতে পারব না। এটাও লেখা নেই যে এই জামা পরে এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না।’’ যাদবপুরে দু’লক্ষের বেশি ব্যবধানে জিতেছেন মিমি। সেই প্রসঙ্গও তুলে তৃণমূলের তারকা-মুখ বলেন, ‘‘লোকে ভালবেসেছেন বলেই তো এমন ব্যবধানে জিতেছি। তাই দু-পাঁচটা বা পঞ্চাশটা লোক আমায় খারাপ বললে তাতে মনোযোগ দিই না। কারণ, ৫০ লক্ষ মানুষ আমাকে ভালবাসেন।’’ প্রতিক্রিয়া মেলেনি বসিরহাটের সাংসদ নুসরতের। তবে ভোট পর্বে এই ধরনের ক্ষেত্রে তাঁর বক্তব্য ছিল, ‘‘নেতিবাচক বিষয় নিয়ে মাথা ঘামাই না।’’

এ বিষয়ে সমাজকর্মী দোলন গঙ্গোপাধ্যায়ের ব্যাখ্যা, ‘‘শুধু মহিলা বলেই কুরুচিকর মন্তব্যের ঝড় বয়ে যাচ্ছে। দেবও তো সাংসদ। তাঁর পোশাক, চেহারা নিয়ে কেউ বলছেন? রাজনীতিতে মহিলারা এমনিই সংখ্যালঘু। এ ধরনের কথা বলে তঁাদের আরও নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।’’ তাঁর মতে, নুসরত-মিমির রাজনৈতিক ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হতে পারে। কিন্তু এ ধরনের ‘আক্রমণ’ নারী বিদ্বেষের আর এক রূপ। সমাজকর্মী মীরাতুন নাহারের মতে, রাজনীতির আঙিনায় যাঁরা আসেন, তাঁদের ব্যক্তিত্ব নিয়ে অন্য রকম প্রত্যাশা থাকতেই পারে। কিন্তু জামাকাপড় মন্তব্য করার কোনও বিষয়ই নয়।

শিবসেনা নেত্রী প্রিয়ঙ্কা চতুর্বেদী কিন্তু মিমি-নুসরতেরই পাশে। অভিননন্দন-সহ প্রিয়ঙ্কার টুইট, ‘‘বদলানো সময়ের সঙ্গে তাল রেখে আপনাদের পোশাক আমার ভাল লেগেছে। কিপ রকিং!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন