প্রতীকী ছবি।
এলাকায় দলের প্রার্থীর হারের ‘দায়’ মাথায় নিয়ে কি পদত্যাগ করলেন পুরসভার মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি—শুক্রবার দিনভর এ জল্পনা জিইয়ে রইল আসানসোলে। বৃহস্পতিবার গণনাকেন্দ্রে দাঁড়িয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেবেন বলে ঘোষণা করেন জিতেন্দ্র। এ দিন তিনি মন্তব্য করেননি। তবে মেয়র-ঘনিষ্ঠ বলে পুর-রাজনীতিতে পরিচিত মেয়র পারিষদ (জল) পূর্ণশশী রায় বলেছেন, ‘‘মেয়র যা বলেন, সেটাই করেন।’’
ভোটের আগে জিতেন্দ্র দাবি করেছিলেন, দলের প্রার্থী মুনমুন সেনকে আসানসোল লোকসভা আসনে জেতাতে না পারলে তিনি মেয়র পদ ছেড়ে দেবেন। এ দিন বেলা গড়াতেই তৃণমূলের নানা সূত্র দাবি করতে শুরু করে পদত্যাগপত্র তৃণমূলের জেলা সভাপতি ভি শিবদাসনের কাছে পাঠিয়েছেন জিতেন্দ্রবাবু। তৃণমূলের কেউ কেউ বলতে থাকেন, ‘‘সাংবিধানিক পদ থেকে পদত্যাগের চিঠি কী ভাবে দলের জেলা সভাপতি গ্রহণ করবেন?’’ তবে শিবদাসন বলেন, ‘‘মেয়রের কাছ থেকে চিঠি পাইনি। এ বিষয়ে আর কিছু বলব না।’’
এই পরিস্থিতিতে শুধু জিতেন্দ্রবাবুর পদত্যাগ করা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের অন্দরে ও পুরসভায় তাঁর ঘনিষ্ঠেরা। তাঁদের বক্তব্য, আসানসোল লোকসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় ১,৯৭,৬৩৭ ভোটে হারিয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনকে। ভোটের ফলে দেখা গিয়েছে, লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রেই পিছিয়ে তৃণমূল। কিন্তু জিতেন্দ্রবাবু যে এলাকার বিধায়ক, সেই পাণ্ডবেশ্বরেই তৃণমূল সব থেকে কম—৬,০২১ ভোটে হেরেছে। বিজেপি প্রার্থীর সব থেকে বেশি ‘লিড’ ৫৩,৮২০ এবং তা আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা এলাকা থেকে। এমনকি, রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটকের বিধানসভা আসানসোল উত্তর থেকে ২০,৩১৪ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন বাবুল সুপ্রিয়।
লোকসভা ভোটের আগে হিন্দিভাযী ভোট এককাট্টা করার চেষ্টাতেই হোক বা তৃণমূল প্রার্থীকে ওয়ার্ড থেকে ‘লিড’ দিতে পারলে কাউন্সিলরদের উন্নয়ন খাতে টাকা বরাদ্দ করার বিতর্কিত
ঘোষণাতেই হোক—নানা চেহারায় ভোট-ময়দানে দেখা গিয়েছে জিতেন্দ্রকে। সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে তাঁর অনুগামীদের একটা বড় অংশ দাবি করছেন, ‘‘ভোটে হারলে দাদা যা করবেন বলেছিলেন, করেছেন। পদত্যাগের চিঠি যথাস্থানে পৌঁছে গিয়েছে।’’