আমজনতা জীবন বিমা করে কেন? সকলেই কি অসময়ে মৃত্যু নিয়ে ভীত? না কি, এজেন্ট এসে ধরাধরি করে তাই? না কি, কিছু একটা করে টাকা জমিয়ে না রাখলে পকেটের সব খসে যায়, সে কারণে?
যে কারণেই করুন, যদি বিমা করতেই হয়, আগেভাগে জেনে রাখা ভাল, কত ধানে কত চাল।
সরকারি চাল ভাতে বাড়ে
উদারীকরণের পরে বেশ কিছু বেসরকারি বিমা সংস্থা নানা রকম পলিসি নিয়ে বাজারে এসেছে। কিন্তু এখনও ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের প্রিমিয়ামই সবচেয়ে কম। তাদের গ্রাহক সংখ্যা ও আমানতের পরিমাণ এখনও সবচেয়ে বেশি, নিশ্চয়তাও তাই বেশি।
আপনার পলিসি
কোন পলিসি আপনি করবেন তা পুরোপুরি নির্ভর করছে, কেন আপনি বিমা করছেন তার উপরে। বিমার মূল উদ্দেশ্য গ্রাহকের অকালমৃত্যুর ক্ষেত্রে তাঁর পরিবারকে আর্থিক সুরাহা দেওয়া। কিন্তু অকালমৃত্যু না হলে যেহেতু লাভসুদ্ধু টাকা ফেরত আসে, বিমাকে স্রেফ বিনিয়োগ হিসেবেও দেখেন কেউ কেউ।
বিমা মানে বিমাই
যদি শুধু বিমা করাই উদ্দেশ্য হয়, তা হলে ‘টার্ম পলিসি’ করা উচিত। বিমার মেয়াদ পর্যন্ত আপনি সুরক্ষিত। মেয়াদ শেষে একটি টাকাও পাবেন না। কিন্তু প্রিমিয়াম সবচেয়ে কম।
বহু মধ্যবিত্তের কাছে অবশ্য শুধু বিমা করাটা বিলাসিতা। বরং খেয়ে না খেয়ে প্রিমিয়াম দেওয়া টাকা লাভ-সহ ফিরলেই তাঁদের মঙ্গল। বিমা আর বিনিয়োগ একই সঙ্গে চাই তাঁদের।
বিনিয়োগে লক্ষ্মী
যদি বিনিয়োগের দিকটাও মাথায় থাকে, ‘এনডাওমেন্ট’ বা ‘মানি ব্যাক’ পলিসি বাছতে পারেন। প্রথমটায় মেয়াদ শেষে থোক টাকা দেওয়া হয়, দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ৫ বছর অন্তর কিছু টাকা ফিরিয়ে, বাকিটা দেওয়া হয় মেয়াদ শেষে। মূল্যবৃদ্ধির দেশে ‘মানি ব্যাক’ করলে লাভ বেশি, তাই প্রিমিয়াম বেশি।
সন্ততি স্বপ্নে থাক
সন্তানের মুখ চেয়ে আজকাল ‘চিলড্রেন পলিসি’ করে রাখেন বহু বাবা-মা। যাতে তাঁদের অবর্তমানে বা যৌবনে পৌঁছে সন্তান একটা থোক টাকা হাতে পেয়ে যায়। সন্তানেরা কি বাবা-মায়ের কথা ততটা ভাবে? যদি না-ও ভাবে, ক্ষতি নেই। ‘পেনশন পলিসি’ থাকলে বুড়ো বয়সে মাসে-মাসে নির্দিষ্ট টাকা আসবে হাতে। ব্যাঙ্কের মতো সুদ কমার ভয় নেই।
শেয়ারে সাবধান
অনেক সময়ে ‘ইউনিট লিঙ্কড’ পলিসি ছাড়ে বিমা সংস্থাগুলি। তাতে মেয়াদ শেষে নির্দিষ্ট টাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় না। টাকা খাটে শেয়ারে। বাজারের ওঠানামা অনুযায়ী মেলে টাকা। এ দেশে এই ধরনের পলিসিতে তিক্ত অভিজ্ঞতাই হয়েছে বেশির ভাগ গ্রাহকের।