মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলার বিচার এ রাজ্য থেকে সরিয়ে অন্য রাজ্যের আদালতে করতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করা হয়েছে। সেই মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত কলকাতার নগর দায়রা আদালতে বিচার প্রক্রিয়া মুলতুবি রাখার আবেদন জানিয়েছিলেন হত্যা মামলায় অভিযুক্ত বিমল গুরুঙ্গ-সহ অন্যদের আইনজীবীরা। মঙ্গলবার আদালতের মুখ্য বিচারক কুন্দনকুমার কুমাই জানালেন, নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার উপর সর্বোচ্চ আদালত স্থগিতাদেশ দিয়ে না থাকলে, তিনি বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ রাখবেন না। কারণ, কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ রয়েছে, ১৭ অগস্টের মধ্যে মামলার চার্জ গঠন শেষ করতে হবে।
মুখ্য বিচারকের ওই নির্দেশ পেয়ে সিবিআই এ দিন আদালতে দাবি করল, ঘটনার মাসখানেক আগে থেকেই অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগের সভাপতি মদন তামাঙ্গকে খুনের ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল।
আরও পড়ুন: পাহাড়ে সব দলকে ডাক মুখ্যমন্ত্রীর
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আরও দাবি, মদন খুনে অভিযুক্তরা নিজেদের মধ্যে মোবাইল ফোনে মদনের উপর হামলার ছক কষেন। মোবাইল ফোনে তাঁরা যে সব কথাবার্তা বলেছিলেন, আড়ি পেতে তা ‘টেপ’ করা হয়। সেই ‘টেপ’-এর ফরেন্সিক
পরীক্ষার রিপোর্টও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণ করবে।
এই যুক্তি দেখিয়েই মোর্চা সভাপতি গুরুঙ্গ-সহ ৪৮ জন চার্জশিট থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার যে আবেদন করেছেন, তার বিরোধিতা করেন সিবিআই কৌঁসুলি অরুণকুমার ভগত।
অভিযুক্তদের কৌঁসুলি দেবাশিস রায় ও সায়ন দে পাল্টা দাবি করেন, মোবাইলে কথাবার্তার ‘টেপ’ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে বলে সুপ্রিম কোর্টেও জানিয়েছে সিবিআই। ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে সব তথ্যপ্রমাণ থাকবে, তদন্তকারীদের তা অভিযুক্তদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। কিন্তু ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট, কথাবার্তার ‘টেপ’ ইত্যাদি কিছুই অভিযুক্তদের দেয়নি সিবিআই। অভিযুক্তদের আইনজীবীদের পাল্টা অভিযোগ, সিবিআই ‘টেপ’-এর কথোপকথন (ট্রান্সক্রিপশন) বা ফরেন্সিক পরীক্ষার রিপোর্ট, কোনওটাই আদালতে জমা পড়েনি। সেই সব নথি অভিযুক্তদের হাতে না আসা অবধি চার্জশিট থেকে নাম বাদ দেওয়ার আবেদনের শুনানি কী করে হবে, সেই প্রশ্ন তোলেন আইনজীবীরা। সিবিআই অবশ্য এ দিন আদালতে জানিয়েছে, সঠিক সময়ে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের প্রশ্নের জবাব দেওয়া হবে।
মুখ্য বিচারক জানিয়েছেন, আজ, বুধবার চার্জশিট থেকে অভিযুক্তদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদনের পরবর্তী শুনানি হবে।