উদ্ধার হওয়া সোনা। —নিজস্ব চিত্র।
এ যেন জালের মধ্যেই জাল বিছানো!
হাওড়া প্ল্যাটফর্মে এক পাচারকারীর থেকে সোনা হাতাতে শুল্ক দফতরের অফিসারের পরিচয় দিয়ে জাল বিছিয়ে রেখেছিল ৭ জনের একটি দল। ঠিক প্ল্যাটফর্মের বাইরেই বিছিয়ে রাখা হয়েছিল আরও একটি জাল। শুল্ক দফতরের অফিসারের পরিচয়ের আড়ালে চলা এই চক্রকে ‘রঙ্গে হাত’ ধরার একটি জাল। প্রথম জালটি সোনা পাচার চক্রের আর দ্বিতীয় জালটি হল হাওড়া সিটি পুলিশের।
শুক্রবার হাওড়া প্ল্যাটফর্মের বাইরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই যে চক্রকে হাতেনাতে পাকড়াও করে হাওড়া সিটি পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে মোট ৮ জনকে। ধৃতেরা হল, অনুতোষ খাসনবীশ, অরবিন্দ দাস, অতনুবিকাশ কাঞ্জিলাল, অনিল মজুমদার, মিলন রায়, সঞ্জয়কুমার মাহাতো এবং বিজয় তামাং। এদের মধ্যে বিজয় সোনা পাচারকারী। তার কাছে থেকে সোনা হাতাতেই ছক সাজিয়েছিল ধৃত বাকি ৭ জনের চক্রটি। যার মধ্যে রয়েছে শুল্ক দফতরের দুই প্রাক্তন অফিসার অনুতোষ- অরবিন্দ এবং স্পেশ্যাল ব্রাঞ্চে কর্মরত অফিসার অতনুবিকাশ।
পুলিশ জানিয়েছে, শিলিগুড়ির বাসিন্দা বিজয় ৫ কিলোগ্রাম সোনা পাচার করতে কলকাতায় আসছিল। যার বাজার মূল্য ১ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। শিলিগুড়ি থেকে কামরূপ এক্সপ্রেসে ওঠে সে। তার অনুসরণ করে ওই ট্রেনেই উঠে পড়ে ৭ জনের ওই দলটি। সারা রাস্তা বিজয়ের উপর নজর রেখেছিল তারা। সকালে হাওড়া স্টেশনে নামার সঙ্গে সঙ্গেই বিজয়কে পিছন থেকে জামা টেনে ধরে তারা। শুল্ক দফতরের অফিসারের পরিচয়পত্র দেখিয়ে তাকে টেনেহিচড়ে প্ল্যাটফর্মের বাইরে নিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: ‘ঠিক দুপুর দুটোয় নবান্ন উড়িয়ে দেব’, হুমকি ফোনে হুলুস্থুল কাণ্ড
উদ্দেশ্য ছিল, বাইরে এনে তার থেকে সোনা নিয়ে সদলবলে সেখান থেকে চম্পট দেওয়া। সেই মতো প্ল্যাটফর্মের বাইরে একটি গাড়িও প্রস্তুত রাখা হয়েছিল। কিন্তু তারা ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি যে তাদের ধরতে আগে থেকেই ফাঁদ পেতে রেখেছে পুলিশ। প্ল্যাটফর্মের বাইরে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গেই তাদেরও ঘিরে ফেলে হাওড়া সিটি পুলিশ। গ্রেফতার করা হয় বিজয়-সহ ৮ জনকেই।
হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, এক সময় শুল্ক দফতরে কাজের সুবাদে খুব দক্ষতার সঙ্গে পাচারকারীদের কাছে থেকে সোনা হাতিয়ে নিত অনুতোষ-অরবিন্দরা। তাদের সাহায্য করত অতনুবিকাশ। বেশ কয়েক দিন ধরেই এই চক্রটির উপর নজর রাখছিল শুল্ক দফতর ও পুলিশ। এ দিন গোপন সূত্রে খবর পেয়ে হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয় পাচারকারীদের।