এ যেন দু’পা এগিয়ে ফের এক পা পিছিয়ে আসা। এ ভাবেই পা ফেলছে রাজ্য পরিবহণ নিগম।
যাত্রীদের তথ্য জানাতে প্রযুক্তির পাশাপাশি পুরনো পদ্ধতির মেলবন্ধন ঘটানোর কাজ শুরু হবে আগামী সপ্তাহ থেকেই। তাই অ্যাপ এবং ডিজিটাল বোর্ড নির্ভর রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাসে গন্তব্য জানাতে ছাপানো বোর্ড বাধ্যতামূলক হচ্ছে। পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সরকারি বাসের রুট, সময় এবং গন্তব্য জানাতে বছর খানেক আগে ‘পথদিশা’ নামের অ্যাপ চালু করা হয়। সংস্থার বাসে রয়েছে ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডও। যেখানে গন্তব্যের নাম ফুটে ওঠে।
তা সত্ত্বেও আগামী সপ্তাহের মধ্যেই পরিবহণ নিগমের কমবেশি সাতশো বাসে ওই ছাপানো বোর্ড বসানো শুরু হবে। পাশাপাশি, কোন বাস কখন ছাড়বে তা জানাতে ছাপানো সময়সারণীও শহরের প্রায় সব বাসস্ট্যান্ডে আবশ্যিক হচ্ছে।
এমনটা কেন?
পরিবহণ দফতর সূত্রে খবর, রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাসে দিনে ছয় লক্ষের বেশি যাত্রী যাতায়াত করলেও বেশির ভাগই অ্যাপ ব্যবহার করেন না কোন বাস, কোথায় যাচ্ছে তা মূলত বাসের সামনে লেখা দেখেই তাঁরা বোঝেন। ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ডও মাঝেমধ্যেই অচল থাকে বলে অভিযোগ ওঠে। এ ছাড়া নির্দিষ্ট জায়গায় না দাঁড়ানোর অভিযোগ সরকারি বাসের বিরদ্ধে ভূরিভূরি। এই সব ত্রুটির জন্য সরকারি বাসের আয় ধাক্কা খাচ্ছে বলে অভিযোগ।
এক পরিবহণ কর্তা জানান, বেসরকারি বাস ও মিনিবাসে নির্দিষ্ট গন্তব্য ও যাত্রাপথের বিবরণ বাসের গায়ে অনেকটা জায়গা জুড়ে লেখা থাকে। ওই সব বাসের কর্মীরা নিজেদের তাগিদে গন্তব্য হেঁকে বাড়তি যাত্রী তুলে নেন।
অথচ সরকারি বাসে স্বাচ্ছন্দ্য এবং সময়ানুবর্তিতা তুলনায় অনেকটা ভাল হওয়া সত্ত্বেও দেখা যায় একই রুটে বেসরকারি বাসের তুলনায় কম যাত্রী পাচ্ছে সরকারি বাস। শুধুমাত্র গন্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে না পারার কারণে বহু যাত্রী সরকারি বাস এড়িয়ে যান বলে অভিযোগ। এই জায়গাগুলোতেই মার খাচ্ছে সরকারি বাস।
নিগমের কর্তাদের মতে, ভাল পরিষেবার পাশাপাশি উপযুক্ত প্রচারও দরকার। তাই তিন ফুট দৈর্ঘ্য ও দু’ফুট প্রস্থের ওই বোর্ড বাসের সামনে লাগানো থাকবে। এক আধিকারিক বলেন, “সরকারি বাস কোথায় যাচ্ছে সেই সংশয় মেটানো গেলে, যাত্রীদের বাসে ওঠার আগ্রহ বাড়বে।” স্ট্যান্ডে বাসের সময়সারণি লাগানো আবশ্যিক করাও তারই অঙ্গ। আধিকারিক আরও জানান, বাস চলাচলের সাফল্য নির্ভর করে প্রচার ও সময়ানুবর্তিতার উপরে। সরকারি বাসে সময়ানুবর্তিতা থাকলেও প্রচারে যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। ফলে পরিকাঠামোর আশানুরূপ ফল মেলে না। প্রচারের মাধ্যমে সেই দূরত্ব মেটাতে প্রযুক্তির পাশাপাশি সাবেক বোর্ড রাখার সিদ্ধান্ত।