ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের সাবস্টেশনের কাজ আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল রাজ্য বিদ্যুৎ দফতর। সরস্বতী পুজোর পর পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষকে পরবর্তী পদক্ষেপ করার পরামর্শ দেবে সরকার। জেলা প্রশাসনকে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসে সমাধান খোঁজার চেষ্টা করতে বলা হয়েছে।
গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা ভাঙড়ে হাড়োয়া রোড প্রায় পাঁচ ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে। জেলা প্রশাসন ও বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধিদের বৈঠকে ঠিক হয়, পাওয়ার গ্রিড কাজ বন্ধ রাখবে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে কাজ বন্ধ থাকলেও, উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গা অঞ্চলে হাইটেনশন লাইন টানার কাজ চলছিল। সোমবার রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সাবস্টেশন তৈরি নিয়ে যাঁদের ক্ষোভ রয়েছে, জেলা প্রশাসন তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে। ’’ তিনি জানান, পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশনের প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
ভাঙড়ে ১৩ একর জমির উপরে পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশনটি তৈরি হয়ে গিয়েছে। বসে গিয়েছে টাওয়ারও। লাইন টানার কাজ চলছিল। কিন্তু গ্রামবাসীদের নিয়ে আন্দোলন শুরু করে জমি-জীবিকা, বাস্তুতন্ত্র ও জমি রক্ষা কমিটি। তৃণমূলের পক্ষ থেকে অবশ্য ভাঙড়ে গিয়ে পাল্টা সভা করে সাবস্টেশন চালু করার পক্ষে সওয়াল করা হয়েছে। সাবস্টেশনটি হলে ওই অঞ্চলের মানুষের কী উপকার হবে, তা-ও বোঝানোর চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় রাজ্য প্রশাসন ধীরে চলো নীতি নিচ্ছে।
প্রশাসনের এক কর্তা জানান, উত্তর ২৪ পরগনার মহিষপোতায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার একটি সাবস্টেশন চালু করার কাজ গ্রামের মানুষের আপত্তিতে আট বছর বন্ধ ছিল। সম্প্রতি প্রশাসনের পক্ষ থেকে গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলোচনায় সমাধান মিলেছে। ডিসেম্বরে সাবস্টেশনটি চালু হয়েছে। ওই কর্তার দাবি, আলিপুরদুয়ারেও পাওয়ার গ্রিডের একটি সাবস্টেশন চালু করা নিয়ে এলাকার মানুষের আপত্তি ছিল। সেখানেও বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়। কিন্তু মানুষের সঙ্গে আলোচনা করে সেটিও চালু করা গিয়েছে। ভাঙড়েও আলোচনাতেই সমাধান মিলবে বলে ওই কর্তার আশা। পাওয়ার গ্রিডের সাবস্টেশনটি চালু হলে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে বিদ্যুৎ পরিষেবার মান যে আরও ভাল হবে, এলাকার অনেকেই তা মানছেন। বছর দেড়েক আগেও যখন ভাঙড়ে এই সাবস্টেশনটি নিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল, তখনও আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান পাওয়া যায়। আন্দোলন নতুন করে মাথা চাড়া দিল কেন, রাজ্য তা জানার চেষ্টা করছে।