সব ক্লাস হচ্ছে কি, তথ্য তলব

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বছরের প্রথমেই স্কুলের জন্য ছুটি আর পরীক্ষার একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার বানিয়ে দেয়।

Advertisement

মধুমিতা দত্ত

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০১
Share:

ফাইল চিত্র।

অভাবটা মূলত শিক্ষক-শিক্ষিকার। তার জেরে বিশেষ করে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে ঠিকঠাক ক্লাস হয় না বলে অভিযোগ উঠছে বারবার। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণবঙ্গের প্রত্যন্ত এলাকার স্কুলে পঠনপাঠন কেমন হচ্ছে, তা জানতে এ বার মাঠে নামল স্কুলশিক্ষা দফতর।

Advertisement

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং মহকুমার বাসন্তী, গোসাবা, ক্যানিং-১, ক্যানিং-২— এই চারটি ব্লকের জুনিয়র হাই, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক মিলিয়ে ১৩৯টি স্কুলের কাছে সহ-স্কুল পরিদর্শক জানতে চেয়েছেন, রুটিন মেনে ক্লাস হচ্ছে কি না, ছুটির দিন বাদে অন্যান্য দিন ক্লাস ঠিকঠাক হচ্ছে কি না। এই বিষয়ে সহ-স্কুল পরিদর্শকের দফতরে সবিস্তার তথ্য দাখিলের জন্য নির্দেশ পাঠানো হয়েছে স্কুলে স্কুলে।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদ বছরের প্রথমেই স্কুলের জন্য ছুটি আর পরীক্ষার একটি বার্ষিক ক্যালেন্ডার বানিয়ে দেয়। সেই অনুযায়ী ছুটি বাদ দিয়ে অন্যান্য দিন ঠিকমতো ক্লাস হয় কি না এবং রুটিন অনুযায়ী আটটি পিরিয়ড হয় কি না, তার খোঁজ নেওয়াই সাম্প্রতিক নির্দেশের মূল লক্ষ্য। বুধবার এ কথা জানান সহ-স্কুল পরিদর্শক শুভেন্দু মিস্ত্রি। তাঁর অভিযোগ, বিশেষত ওই সব এলাকার স্কুলে শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব প্রকট। এই অবস্থায় ক্লাস কেমন চলছে, সেটা বোঝার জন্যই এই নির্দেশ। স্কুলগুলির থেকে জবাব পেলে পুরো পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা হবে। অল্প সংখ্যক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে আরও বেশি করে কী ভাবে কাজে লাগানো যায়, সেই বিষয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই সব স্কুলে সকাল ১০টা ৫০ থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত ক্লাস নেওয়ার কথা। পিরিয়ড মোট আটটি। অভিজ্ঞ মহলের বক্তব্য, অনেক সময়েই আট পিরিয়ড হয় না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পড়ুয়ারা।

Advertisement

এ ভাবে স্কুলের পঠনপাঠনের তথ্য চেয়ে পাঠানোয় আপত্তি তুলেছে শিক্ষক সংগঠন নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতি (এবিটিএ)। ওই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণপ্রসন্ন ভট্টাচার্য এ দিন বলেন, ‘‘স্কুলশিক্ষকদের বদলি ব্যবস্থা চালু হওয়ার পরে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষক-শিক্ষিকারা শহরের দিকে চলে আসছেন। তাই ওই সব স্কুলে শিক্ষকের অভাব খুবই প্রকট।’’ তবে পঠনপাঠন কী ভাবে চলবে, স্কুল দফতরের আধিকারিকদের বদলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক, অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলেরই সেটা দেখা উচিত বলে মনে করেন কৃষ্ণপ্রসন্নবাবু। তিনি জানান, ওই সব অঞ্চলের স্কুলে অনেক সময়েই যে শেষ পিরিয়ড হয় না, তার কারণ, অন্ধকার নামার আগেই ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষকদের বাড়ি ফেরার তাগিদ থাকে।

বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানান, রাজ্যে প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত প্রায় ৭০ হাজার শিক্ষক-পদ খালি। এর মধ্যে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ফাঁকা প্রায় ৫০ হাজার পদ। শূন্য পদ বেশি গ্রামাঞ্চলেই। প্রতিটি ক্লাসে আট পিরিয়ড করানোর মতো শিক্ষক নেই বহু স্কুলে। ‘‘এই সমস্ত বিষয়ই শিক্ষাকর্তাদের সরেজমিনে দেখা দরকার,’’ বলছেন স্বপনবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন