হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে রক্তের অভাবে ধুঁকছেন রোগী। হাসপাতাল বলছে, রোগীটির জন্য প্রয়োজনীয় গ্রুপের রক্ত নেই তাদের কাছে। কোথায় মিলবে, তা-ও বলতে পারছে না হাসপাতাল। দিশাহারার মতো ছোটাছুটি করছেন আত্মীয়পরিজন।
হাসপাতালে হাসপাতালে এই দৃশ্য প্রতিদিনের। তাই চটজলদি রক্তের সুলুকসন্ধান দিতে রাজ্যের সব ব্লাড ব্যাঙ্ক নিয়ে ই-পোর্টাল চালু করতে চলেছে সরকার। কোথায় কোন গ্রুপের রক্ত কত পরিমাণে মজুত রয়েছে, পোর্টাল দেখেই তা বোঝা যাবে। শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্য জুড়ে ব্লাড ব্যাঙ্কের পরিকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে শাসক ও বিরোধী দলের মধ্যে দীর্ঘ ক্ষণ চাপান-উতোর চলার পরে সভার বাইরে এ কথা জানান স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য।
বিধানসভায় স্বাস্থ্য নিয়ে প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্লাড ব্যাঙ্ক নিয়ে পরের পর অভিযোগ তোলেন কান্দির কংগ্রেস বিধায়ক অপূর্ব সরকার। তিনি জানান, মফস্সলের অনেক বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্কে প্যাথোলজিস্ট নেই। বিভিন্ন চিকিৎসকের সই করা প্যাডের পাতা সেখানে পৌঁছে যাচ্ছে এবং সেই পাতায় রিপোর্ট লিখে রোগীকে দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ রিপোর্ট যাচাই করছেন না কোনও চিকিৎসক। আবার যাঁরা পরীক্ষা করে রিপোর্ট তৈরি করছেন, তথাকথিত সেই সব টেকনোলজিস্টের অধিকাংশেরই কোনও বৈধ ডিগ্রি নেই। অথচ সেই সব ল্যাবরেটরি ঢালাও লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: কমিশন কই, ক্ষুব্ধ বিরোধীরা
তবে স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমাদেবীর পাল্টা বক্তব্য, রাজ্যে কোথাও কোনও লাইসেন্সহীন ব্লাড ব্যাঙ্ক চলছে না। এর পরে অপূর্ববাবু অভিযোগ তোলেন, পরিকাঠামো বা চিকিৎসক না-থাকা সত্ত্বেও রাজ্যে অনেক ব্লাড ব্যাঙ্ক লাইসেন্স পেয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রীর বক্তব্য, ক্লিনিক্যাল এস্টাব্লিশমেন্ট আইনের সব শর্ত পূরণ না-করলে কাউকে লাইসেন্স দেওয়া হয় না। স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘‘মফস্সলের অনেক ব্লাড ব্যাঙ্কে ডাক্তারদের সই করা খালি প্যাডের উপরে রিপোর্ট বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে বা অযোগ্য টেকনিশিয়ানরা পরীক্ষা করছেন, এমন কোনও অভিযোগ আমাদের কাছে আসেনি।’’
উত্তরবঙ্গের আরএসপি বিধায়ক নর্মদাচন্দ্র রায় এ দিন বিধানসভায় অভিযোগ করেন, যথেষ্ট চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ান ছাড়াই বহু সরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক চালু রয়েছে।
চন্দ্রিমাদেবী বলেন, ‘‘বাম আমলে ব্লাড ব্যাঙ্কে কোনও নিয়োগ হয়নি। যতটুকু যা নিয়োগ, তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসে করেছেন।’’