midnapore

মোরাম মাফিয়ার হামলা, রক্তাক্ত ভূমি আধিকারিক

সন্ধ্যা থেকেই ওই এলাকায় অভিযানে নেমেছিলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা। খোদ মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক প্রবীরকুমার রায়ের নেতৃত্বে চলছিল অভিযান। দলে ছিলেন ভূমি রাজস্ব আধিকারিক মানস ঘোষ, স্বরূপ বসাক, শেখ ইয়াসিন, কৌশিক সাহু, স্বপন সিংহ ও দফতরের তিন কর্মী। তবে সঙ্গে পুলিশ ছিল না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০২:৩২
Share:

জখম: শেখ ইয়াসিন। নিজস্ব চিত্র

বেআইনি বালি ও মোরাম খাদান বন্ধে কড়া নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ দাপটেই চলছে কারবার। বেআইনি মোরাম পাচার রুখতে গিয়ে মাফিয়াদের হামলায় এ বার রক্তাক্তও হলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা!
বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে খড়্গপুর গ্রামীণের সাদাতপুরে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে। সন্ধ্যা থেকেই ওই এলাকায় অভিযানে নেমেছিলেন ভূমি দফতরের আধিকারিকেরা। খোদ মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক প্রবীরকুমার রায়ের নেতৃত্বে চলছিল অভিযান। দলে ছিলেন ভূমি রাজস্ব আধিকারিক মানস ঘোষ, স্বরূপ বসাক, শেখ ইয়াসিন, কৌশিক সাহু, স্বপন সিংহ ও দফতরের তিন কর্মী। তবে সঙ্গে পুলিশ ছিল না। জাতীয় সড়ক ধরে ডাম্পারে নিয়ে যাওয়া মোরাম ও বালির বৈধ কাগজপত্র পরীক্ষা করাকালীনই হামলা হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

ভূমি দফতরের আধিকারিকদের অভিযোগ, একটি মোরাম বোঝাই ডাম্পার রাস্তার ধারে দাঁড় করাতেই লাঠি, বাঁশ, লোহার রড নিয়ে চড়াও হয় কয়েকজন। বেধড়ক মারধর করা হয় ভূমি দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের। আহত হন প্রবীরকুমার -সহ ৭জন। বাঁশের ঘায়ে মাথায় গুরুতর চোট পান এক আধিকারিক শেখ ইয়াসিন। পুলিশ আসতেই পালিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। জখমদের নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। পরে শেখ ইয়াসিনকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

রাতেই সাদাতপুরের বাসিন্দা শেখ মুসলেম, তার শ্যালক শেখ শাজাহান-সহ প্রায় ২৫জনের নামে খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। ডাম্পার মালিক মুসলেম বহু দিন ধরে বেআইনি মোরাম ও বালি কারবারে যুক্ত বলে জানা গিয়েছে। মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক প্রবীরকুমার বলেন, “রোজকার মতোই বেআইনি মোরাম ও বালি পাচার রুখতে সন্ধ্যা থেকে অভিযান চলাচ্ছিলাম। একটি গাড়িকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করছিলাম। তখন মুসলেম-সহ জনা পঞ্চাশেক বাঁশ, লাঠি, ধারাল অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়। সকলকেই মারধর করেছে। ইয়াসিনকে বাঁশ দিয়ে মাথায় মেরেছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”

Advertisement

পুলিশ জানায়, অভিযুক্তেরা সকলেই পলাতক। তবে ডাম্পার চালক ঝাড়খণ্ডের বাসিন্দা বাবন আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার পরে পুলিশি অভিযানে মোরাম ও বালি বোঝাই ১৫টি ডাম্পারও আটক করা হয়। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমাদের না জানিয়েই অভিযানে গিয়েছিলেন ভূমি আধিকারিকেরা। তবে ঘটনার পরেই আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।”

কেন পুলিশকে অভিযানের কথা আগাম জানানো হয়নি? মহকুমা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক প্রবীরকুমার বলেন, “আমরা এ ভাবেই অভিযান চালাই। প্রয়োজন বুঝলে পুলিশের সাহায্য নিই। মাধ্যমিক চলায় পুলিশ ব্যস্ত রয়েছে বলে আর পুলিশকে জানাইনি।” পশ্চিম মেদিনীপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) উত্তম অধিকারীরও বক্তব্য, “আমাদের দফতর থেকে সব সময় পুলিশকে জানিয়ে অভিযান হয় না। তবে যেখানে বিপদ রয়েছে সেখানে পুলিশকে অবশ্যই জানাতে হয়। আমরা আরও কড়া পদক্ষেপ করতে জেলা পর্যায়ে বৈঠক করব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন