নিজস্ব সংবাদদাতা

আলোচনায় রাজি সরকার, ‘সেজ’ নিয়ে আশার আলো

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (সেজ) অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আশ্বাস নেই। তবে এই তকমা থাকলে একটা শিল্প সংস্থা যে সব সুবিধা পায়, তার সবই দিতে রাজি রাজ্য সরকার।

Advertisement

কলকাতা

শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০১৬ ০৪:২০
Share:

ছবি:পিটিআই

বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের (সেজ) অনুমোদন দেওয়ার ব্যাপারে কোনও আশ্বাস নেই। তবে এই তকমা থাকলে একটা শিল্প সংস্থা যে সব সুবিধা পায়, তার সবই দিতে রাজি রাজ্য সরকার। এমনকী, এ ব্যাপারে ইনফোসিস এবং উইপ্রোর সঙ্গে আলোচনাতেও আগ্রহী তারা। এবং এই সংস্থার লগ্নির দরজা খোলা রইল বলেই মত শিল্পমহলের।

Advertisement

গত পাঁচ বছরে একটিও শিল্প সংস্থাকে ‘সেজ’ অনুমোদন দেয়নি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ইনফোসিস বারবার আর্জি জানানো সত্ত্বেও রাজারহাটে ৫০ একর জমিতে তাদের প্রস্তাবিত ক্যাম্পাসকে ‘সেজ’ তকমা দিতে রাজি হননি মুখ্যমন্ত্রী। ফলে ঝুলে রয়েছে ৫০০ কোটি টাকার লগ্নি। এ রাজ্যে উইপ্রোর প্রথম ক্যাম্পাস ‘সেজ’ হলেও রাজারহাটে তাদের প্রস্তাবিত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস সেই অনুমোদন পায়নি। আটকে গিয়েছে দু’টি প্রকল্প মিলিয়ে প্রায় ৪০ হাজার কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও।

কিন্তু এই ছবিতে সম্প্রতি কিঞ্চিৎ বদল এসেছে উইপ্রো কেন্দ্রীয় সরকারের সেজ সংক্রান্ত পরিচালন পর্ষদ বা বোর্ড অব অ্যাপ্রুভালসের কাছে রাজারহাটে ‘সেজ’ তৈরির ব্যাপারে নতুন করে আবেদন জানানোয়। তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প মহলের অনেকেই মনে করেন, রাজ্যের থেকে ন্যূনতম ইঙ্গিত না পেলে দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে এই আবেদন করত না উইপ্রো।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ‘সেজ’ প্রসঙ্গ উত্থাপন করেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর কাছে তিনি জানতে চান, ‘সেজ’-এর অনুমোদন চেয়ে যে দাবি ইনফোসিস করছে, তা কি রাজ্য সরকার মানবে? নাকি ওরা রাজ্য ছেড়ে চলে যাবে? জবাবে ব্রাত্য বলেন, ‘‘কোনও নির্দিষ্ট সংস্থার দিকে নজর না দিয়ে সঠিক নীতি প্রণয়নের দিকে আমাদের নজর দেওয়া উচিত। আমাদের রাজ্যে সকলেই স্বাগত। আলোচনার রাস্তা খোলা। আইটি কোম্পানিগুলিকে সব সুযোগ-সুবিধা দিতে রাজ্য তৈরি।

আলোচনার রাস্তা খোলা রাখার কথা বলে রাজ্য সরকার ইনফোসিস ও উইপ্রোর বিনিয়োগ নিয়ে আশা জিইয়ে রাখল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। তবে আলোচনার টেবিলে বসতে নতুন সমাধান সূত্র প্রয়োজন বলেও মনে করছে তারা। সমাধান সূত্র হিসেবে ‘সেজ’-এর বিকল্প প্রস্তাব তৃণমূল সরকারের প্রথম দফাতেও উঠেছিল। তৎকালীন তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় আর্থিক সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ‘সেজ’-এর সমান লাভজনক বিকল্প প্রস্তাব দিতে পারেনি রাজ্য। কর্পোরেট কর, আমদানি শুল্ক, পরিষেবা কর, উৎপাদন শুল্ক, কেন্দ্রীয় বিক্রয় কর ছাড়ই ‘সেজ’-এর প্রধান আকর্ষণ। তা দেওয়ার ক্ষমতা রাজ্যের নেই।

শিল্প মহলের আশার কারণ, গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূলের ইস্তাহারে ‘সেজ’ নিয়ে কিছু না লেখা। ২০১১-র ইস্তাহারে কিন্তু স্পষ্টই বলা ছিল, দল ‘সেজ’-এর বিরোধী। সম্প্রতি মমতা যে ভাবে কর্মসংস্থানে জোর দিয়েছেন, তাতেও আশা বেড়েছে। এই আবহেই কেন্দ্রের কাছে উইপ্রোর আবেদন। ২২ জুন উইপ্রোর আবেদন নিয়ে পর্ষদের বৈঠকে আলোচনা হয়। রাজ্যের সুপারিশ ছাড়া কেন্দ্র ছ’ মাসের জন্য প্রাথমিক ছাড়পত্র দিতে পারে। তার মধ্যে পেতে হবে রাজ্যের চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত। উইপ্রোর ক্ষেত্রে এ পথে হাঁটেনি কেন্দ্র। সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রাজ্যের আলোচনা শুরু হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন