সাইবার তথ্য পেতে অভিন্ন নীতির আর্জি

ফেসবুক ঘাঁটতে গিয়ে চমকে উঠেছিলেন এক গোয়েন্দা অফিসার। প্রেসি়ডেন্সি জেলে বন্দি এক আন্তর্জাতিক অপরাধী দিব্যি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন! এবং এতটাই সুকৌশলে যে তিনি এবং তাঁর নেটবন্ধুরা ছাড়া সেই ফেসবুকের গতিবিধি কেউ ধরতে পারবে না।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৭ ০৪:৫৫
Share:

ফেসবুক ঘাঁটতে গিয়ে চমকে উঠেছিলেন এক গোয়েন্দা অফিসার। প্রেসি়ডেন্সি জেলে বন্দি এক আন্তর্জাতিক অপরাধী দিব্যি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেছেন! এবং এতটাই সুকৌশলে যে তিনি এবং তাঁর নেটবন্ধুরা ছাড়া সেই ফেসবুকের গতিবিধি কেউ ধরতে পারবে না।

Advertisement

সাইবার দুনিয়ায় ওই অপরাধীর গতিবিধির তথ্য চেয়ে ফেসবুককে চিঠি লিখেছিলেন গোয়েন্দারা। কিন্তু ঝক্কিঝামেলায় সেই সব তথ্য পেতে কালঘাম ছুটে গিয়েছিল তাঁদের।

ঘটনাটা পাঁচ বছর আগেকার। গোয়েন্দারা বলছেন, সাইবার দুনিয়ার এই ধরনের তথ্য জোগাড়ের ঝক্কি আদৌ কমেনি। মার্কিন মুলুকে সংস্থার সার্ভার থেকে তথ্য পেতে এত বেশি শ্রম ও সময় ব্যয় করতে হয়ে যে, অপরাধী তত দিনে ছা়ড়া পেয়ে যেতে পারে। সব সময় তথ্য মিলবেই, এমন কোনও নিশ্চয়তাও নেই। সম্প্রতি আমেরিকার হনলুলুতে সাইবার অপরাধের আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিষয়টি জানিয়েছেন সাইবার অপরাধ বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

বিভাসবাবু জানান, বিভিন্ন ধরনের তদন্তে তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা যে হচ্ছেই, তা মেনে নিয়েছেন জার্মানি, জাপান-সহ উন্নত দেশগুলির গোয়েন্দা ও সাইবার বিশেষজ্ঞেরাও। তদন্তের ক্ষেত্রে তথ্য আদানপ্রদানে আন্তর্জাতিক অভিন্ন নীতি তৈরি করা যায় কি না, সেই বিষয়ে আলোচনাও শুরু হয়েছে ওই সম্মেলনে।

গোয়েন্দা সূত্রের খবর, বর্ধমান স্টেশনে ধৃত আইএস জঙ্গি মুসার ক্ষেত্রেও সাইবার যোগই সব থেকে বড় হয়ে উঠেছিল। ফেসবুকেই মুসার মগজধোলাই করেছিল বাংলাদেশে থাকা জঙ্গি আবু সুলেমান। কিন্তু সেই সব তথ্য সহজে মিলছিল না। গত ডিসেম্বরে মার্কিন গোয়েন্দা বাহিনী এফবিআইয়ের একটি দল এ রাজ্যে এসে সেই সব ‘লিঙ্ক’ ঘেঁটে তথ্য দেওয়ার পরে মুসার বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (এনআইএ)। সাইবার অপরাধের তদন্তকারীরা জানান, হুগলির এক যুবকও ফেসবুক ঘাঁটতে ঘাঁটতেই জড়িয়ে পড়েছিল আইএস চক্রে।

শুধু জঙ্গিদের খোঁজখবর নয়, সাইবার দুনিয়ায় মেয়েদের চরিত্রহনন এবং জালিয়াতির ঘটনাতেও সমান ভাবে তথ্য-ঘাটতিতে ভুগতে হয় গোয়েন্দাদের। তদন্তের তথ্য আদানপ্রদানে অভিন্ন আন্তর্জাতিক নীতি প্রণয়নের বিষয়টি হনলুলুর ওই সম্মেলনে উঠেছিল শুনে এক তদন্তকারী অফিসারের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এমনটা হলে খুবই ভাল হয়। কিন্তু সত্যিই সেটা হবে তো!?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন