উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রী।—নিজস্ব চিত্র।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে সোমবার উত্তরকন্যায় মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে এলেন না বিমল গুরুঙ্গ। বৈঠকে ছিলেন না জিটিএ-এর নির্বাচিত কোনও মোর্চা সদস্যও। তাঁদের যুক্তি, প্রশাসনের তরফে লিখিত কোনও আমন্ত্রণ জিটিএ পায়নি।
যদিও, মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বৈঠকের পরে জানিয়েছেন জিটিএ-এর প্রধান সচিব রবিন্দর সিংহের মাধ্যমে গুরুঙ্গদের বৈঠকে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘বিমল গুরুঙ্গকে বৈঠকে ডেকেছিলাম। ওঁরা ব্যস্ত থাকায় হয়ত আসতে পারেনি। আমি চাই ওঁরা ভাল থাকুক। দার্জিলিং ভাল থাকুক।’’এই বক্তব্যের মধ্যে দিয়েই তিনি পাহাড়ের মানুষকে বার্তা দিতে চেয়েছেন বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে মোর্চার সম্পর্ক বরাবর-ই নরমে-গরমে। গত জানুয়ারি মাসে দার্জিলিঙে মুখ্যমন্ত্রীর সফরের সময়ে মমতা-গুরুঙ্গের দেখা হলেও, দুজনেই নিজের মতো করে একে অপরের উপর চাপ বজায় রেখেছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে শেরপা সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ গঠন করেছেন, অন্যদিকে, মোর্চার তরফেও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে জিটিএ চুক্তি খেলাপের নানা অভিযোগ তোলা হয়েছিল। গত রবিবার শিলিগুড়ি এসে ভূমিকম্পে মৃতের পরিবারকে সমবেদনা জানাতে মুখ্যমন্ত্রী মিরিকে গিয়েছিলেন। সে দিনই মোর্চার তরফে জানানো হয়, সোমবারের বৈঠকে তাঁদের উপস্থিত থাকতে কোনও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। সোমবারের বৈঠকে জিটিএ-এর তরফে ছিলেন প্রধান সচিব রবিন্দর সিংহ। প্রশাসনিক দায়বদ্ধতার কারণেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকে উপস্থিত থাকতে হয়।
মোর্চা সূত্রের খবর, গত রবিবার মিরিকে যাওয়ার আগে মুখ্যমন্ত্রী গুরুঙ্গকে জানাননি। সে কারণেই গুরুঙ্গ মুখ্যমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিতির সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন বলে মোর্চা নেতাদের একাংশের দাবি।
মুখ্যমন্ত্রী অবশ্য এ নিয়ে বির্তকের মধ্যে ঢুকতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘এ সব ছোট ব্যাপার। এ নিয়ে এখন রাজনীতি থেকে দূরে থাকা ভাল। গুরুঙ্গরা পাহাড়ে ত্রাণ বিলি করুক। মানুষ যাতে ভাল থাকে সেটাই আমরা চাই।’’
তবে রাজ্য সরকারের তরফে যে গুরুঙ্গদের সরকারি ভাবে বৈঠকের কথা জানানো হয়েছিল, তা অবশ্য জিটিএ-এর প্রধান সচিবকে দিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে একরকম কবুল করিয়ে নেন মুখ্যমন্ত্রী। গুরুঙ্গদের আমন্ত্রণ এবং অনুপস্থিতি প্রসঙ্গে জিটিএ-এর প্রধান সচিব বলেন, ‘‘আমি নিজে বিমল গুরুঙ্গকে জানিয়েছিলাম যে ম্যাডাম বৈঠকে থাকতে অনুরোধ করেছেন। তবে গুরুঙ্গ জানিয়েছেন ত্রাণ বিলি এবং পুজোর কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি আসতে পারেননি।’’
মোর্চার তরফে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি কেউ। দলের সহ সম্পাদক জ্যোতি কুমার রাই শুধু বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী কী বলেছেন জানি না। তাই কোনও মন্তব্য করতে পারব না। তবে আমাদের চিফ আজকে মালিধূরায় একটি পুজোয় ব্যস্ত ছিলেন।’’