বিমল গুরুঙ্গ
জিটিএ-র মেয়াদ ফুরোবে সামনের জুলাইয়ে। তার মাত্র ৬-৭ মাস আগে জিটিএ ছেড়ে দিয়ে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়লেন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সভাপতি তথা জিটিএ চিফ বিমল গুরুঙ্গ। গুরুঙ্গ বলেন, ‘‘জিটিএ-র কাজে নানা ভাবে রাজ্য হস্তক্ষেপ করায় সমস্যা হচ্ছে, সে জন্য পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের পথেই ফের নামব। তাই দু-আড়াই মাস বাদেই জিটিএ-র পদ ছাড়ব।’’
গুরুঙ্গের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে মোর্চার মধ্যেই। মোর্চার নেতাদের অনেকেরই অভিযোগ, ৪ বছরের বেশি সময় ধরে জিটিএ চালিয়ে শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ালে বিরোধীরা মোর্চার দিকে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলবে। এক প্রবীণ মোর্চা নেতা জানান, ছাড়ার হলে আগেই সরতে হত। দলের কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েক জনও জানান, মেয়াদ ফুরানোর ঠিক মুখে দায়িত্ব ছাড়লে বিরোধীরা ছেড়ে কথা বলবে না। এর ফলে পাহাড়ে পুরসভা ভোটে মোর্চা বিপদেও পড়তে পারে। মোর্চা সভাপতি অবশ্য দাবি করেছেন, বিরোধীরা নানা কথা বলতেই পারে। কিন্তু কেন্দ্রকে তিনি সব কথাই জানিয়ে রেখেছেন। তিনি বলেন, ‘‘সাংসদ মন্ত্রী সুরেন্দ্র
সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে সব জানানো হয়েছে। এটা নিয়ে দলের মধ্যে কোনও মতভেদ নেই।’’
কিন্তু বৃহস্পতিবার দার্জিলিঙের সরকারি ভবন গোর্খা রঙ্গমঞ্চে সাংবাদিকদের যখন গুরুঙ্গ যখন গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনে নামার কথা বলছেন, তখন তাঁর পাশে জিটিএ-র কোনও সদস্য পাশে ছিলেন না। মোর্চার অন্য নেতারা তাঁর সিদ্ধান্ত মেনে নিচ্ছেন কি না জিজ্ঞাসা করা হলে তাঁর জবাব, ‘‘এটা আমার সিদ্ধান্ত। এটা নিয়ে দলে আলোচনা করব। কিন্তু, অন্য সভাসদদের বিষয়ে এখন কোনও
মন্তব্য করব না। যদি তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন জিটিএ চালাবেন, তবে তাই করবেন। আমি আর জিটিএ পরিচালনা করতে পারব না।’’
কিন্তু এখনই না ছেড়ে, দু’আড়াই মাস পরে ইস্তফা দেওয়ার কথা বললেন কেন? মোর্চারই একটি অংশ জানাচ্ছে, সামনেই পুজো। তখন পর্যটনের ভরা মরসুম। তাই এখন পাহাড়ে কোনও অনিশ্চয়তা চান না গুরুঙ্গ। আবার আর একটি গোষ্ঠীর বক্তব্য, মোর্চা সভাপতি আসলে স্রেফ একটি হুমকিই দিয়েছেন। এরকম তিনি আগেও কয়েকবার করেছেন। জিটি গঠনের পরের বছর ২০১৩ সালের ৩০ জুলাই গুরুঙ্গ ইস্তফা দিয়েছিলেন। সে বছরের ডিসেম্বরেই ইস্তফা প্রত্যাহার করে নেন। এ বারেও কয়েকদিন আগে পাহাড়ের একটি সভায় একই কথা বলেছিলেন। দু’দিন পরেই দাবি করেন, তেমন কথা বলেননি।
এই পরিস্থিতিতে পাহাড়ের তৃণমূল নেতা বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘পাহাড়বাসী সব দেখছেন। যথাসময়ে যোগ্য জবাব দেবেন।’’