‘রেড মির্চি’র ঝাঁঝ কমেনি, সাফ তৎকাল

‘লাল লঙ্কার’ ঝাঁঝে সাফ হয়ে যাচ্ছে ট্রেনের তৎকাল টিকিট। বছরখানেক আগেই জানা যায়, হ্যাকিং সফটওয়্যার ‘রেড মির্চি’র কথা। ধরপাকড়ও চলছে। কিন্তু এখনও নাগালের মধ্যেই রয়েছে এই সফটওয়্যার। হ্যাকিংও চলছে দেদার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৫
Share:

‘লাল লঙ্কার’ ঝাঁঝে সাফ হয়ে যাচ্ছে ট্রেনের তৎকাল টিকিট। বছরখানেক আগেই জানা যায়, হ্যাকিং সফটওয়্যার ‘রেড মির্চি’র কথা। ধরপাকড়ও চলছে। কিন্তু এখনও নাগালের মধ্যেই রয়েছে এই সফটওয়্যার। হ্যাকিংও চলছে দেদার।

Advertisement

ই-টিকিটের কালোবাজারি রুখতে সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে পাঁশকুড়া থেকে সম্বিত মাইতি নামে একজনকে ধরে রেলের অপরাধ দমন শাখা। তার থেকে প্রশান্ত চক্রবর্তী নামে এক সফটওয়্যার বিক্রেতার নাম মেলে। তাঁর খোঁজ চলছে। সোমবারও মেদিনীপুর থেকে দুই টিকিট এজেন্টকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ১২৫টি পিএনআর-এর তৎকাল টিকিট, দু’টি কম্পিউটার ও নগদ আড়াই লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে।

রেল সূত্রে দাবি, ১৮০০-২৫০০ টাকা দিয়ে রেলের টিকিটের এজেন্টদের কম্পিউটারে ইনস্টল হচ্ছে এই সফটওয়্যার। টাকার লেনদেন হচ্ছে অনলাইনে। ইউটিউব থেকে সহজেই জানা যাচ্ছে সফটওয়্যার ব্যবহারের নিয়ম। এক বছর আগেই এই সফটওয়্যার তৈরিতে যুক্ত থাকার অভিযোগে অজয় গর্গ নামে সিবিআইয়ের এক সফটওয়্যার প্রোগ্রামার-সহ দু’জন গ্রেফতার হয়। তার পরেও বেআইনি এই সফটওয়্যারের ব্যবহার বন্ধে রেল কেন সক্রিয় হল না সেই প্রশ্ন উঠছে।

Advertisement

অভিযানের কথা বলেই দায় সারছেন খড়্গপুরে রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিউরিটি কমিশনার অশোককুমার রায়। তাঁর বক্তব্য, “এজেন্ট ধরতে অভিযান চালাচ্ছি। কিন্তু এই সফটওয়্যার যে ভাবে ছড়িয়ে গিয়েছে তা বন্ধ করা কঠিন।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রেলের সফটওয়্যার দেখভাল করে ক্রিস নামে একটি বেসরকারি সংস্থা। তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।” তবে রেল সূত্রে খবর, ‘ক্রিস’-এর পক্ষে সফটওয়্যারটি নির্মূল করা সম্ভব নয়। তারা রেলের ওয়েবসাইটগুলো সুরক্ষিত রাখবে। এ দিকে, তদন্তে জানা গিয়েছে, মূলত উত্তরপ্রদেশ থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে এই সফটওয়্যার। অনুমতি মিললে উত্তরপ্রদেশেও হানা দিতে পারে রেলের অপরাধদমন শাখা।

রেল সূত্রে খবর, আইআরসিটিসি স্বীকৃত এজেন্ট ও অন্য এজেন্টরাও এই চক্রে যুক্ত। রেলের সংরক্ষিত কামরার সাধারণ টিকিট কাটতে পারলেও এই এজেন্টদের তৎকাল টিকিট কাটার অধিকার নেই। স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ও আইআরসিটিসি-র অ্যাকাউন্টে ব্যক্তিগত ইউজার আইডি ব্যবহার করে যাত্রীরাই একমাত্র তৎকাল টিকিট কাটতে পারেন। দিনের নির্দিষ্ট সময়ে এই টিকিট কাটতে হয়। যদিও এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এজেন্টরা আগে থেকেই তৎকাল টিকিটের ফর্ম পূরণ করে রাখছেন। তৎকাল টিকিট কাটার সময় চালু হলে আইআরসিটিসি-র একাধিক ভুয়ো অ্যাকাউন্ট থেকে মুহূর্তে রেড মির্চির মাধ্যমে বিক্রি হচ্ছে একাধিক তৎকাল টিকিট। তারপর চলছে কালোবাজারি। যাত্রীরা ফিরছেন খালি হাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন