ফাইল চিত্র।
বন্দর কর্তৃপক্ষের ‘ব্যর্থতা’ এবং শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর বিরুদ্ধে ‘হেনস্থা’র অভিযোগ তুলে কাজ বন্ধ করেছেন ট্রান্সপোর্টাররা। ফলে সোমবার থেকে হলদিয়া বন্দরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। আমদানি-রফতানিকারীদের দাবি, এর জেরে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন শিল্প সংস্থায় তারা মালপত্র সরবরাহ করতে পারছে না। বন্দর কর্তৃপক্ষের পাল্টা দাবি, ট্রান্সপোর্টাররা চাহিদামত গাড়ি দিতে ব্যর্থ। এমনকী, বন্দরের বাইরে থেকেও গাড়ি আনতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে সমস্যা হচ্ছে।
হলদিয়া বন্দর সূত্রে খবর, দু’সপ্তাহের বেশি কার্গো ঠিক মতো খালাস না হওয়ায় কমপক্ষে ৩০টি জাহাজ দাঁড়িয়ে। গত সোমবার থেকে কার্গো বহন বন্ধ রেখেছেন ট্রান্সপোর্টাররা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রান্সপোর্টার সংস্থার মালিক জানান, ট্রান্সপোর্টারদের গাড়ি বন্দরে ঢোকানো হলে তিন–চার দিনের আগে বেরোতে পারছে না। একটি মাত্র প্রবেশপথ দিয়ে খালি ও কার্গো বোঝাই গাড়ি, ডাম্পার, ট্রেলার চলাচল করে। তা ছাড়া, শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনী অহেতুক ‘জরিমানা’ আদায় করে। হলদিয়া ট্রান্সপোর্টার ব্রোকার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক শেখ সাজাহান বলেন, ‘‘বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিলেও সমস্যা মেটেনি। ফলে আর্থিক ক্ষতির মুখে ট্রান্সপোর্টাররা। বাধ্য হয়েই গাড়ি বন্ধ রেখেছি।’’ ট্রান্সপোর্টার সূত্রে খবর, জাহাজ থেকে কার্গো নিয়ে বেরোনোর মুখে গাড়ির ওজন পরিমাপ করা হয়। একটি মাত্র ওয়েব্রিজে প্রায় সাতশো গাড়ির ওজন দেখতে গিয়ে অনেক সময় লাগে। তার উপর শিল্প নিরাপত্তা রক্ষী বাহিনীর হুজ্জুতি তো রয়েছেই। বাপ্পাদিত্য কাঁহালো নামে এক আমদানিকারী বলেন, ‘‘চার দিনে কমপক্ষে দুহাজার মেট্রিক টন কার্গো জমে রয়েছে।’’
এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে হলদিয়া বন্দরের প্রশাসনিক ম্যানেজার অমল কুমার দত্ত বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে ছুটিতে রয়েছি। বন্দরে কী ঘটেছে জানি না।’’ হলদিয়া বন্দরের (ট্রাফিক) ম্যানেজার স্বপন কুমার সাহা রায় বলেন, ‘‘কেউ লিখিত ভাবে আমাদের কাছে সমস্যা জানায়নি। তবে ট্রান্সপোর্টারদের সব অভিযোগও ঠিক নয়। বরং ওঁরাই পর্যাপ্ত গাড়ি দিতে পারছেন না। অন্য এলাকা থেকে গাড়ি আনলেও বাধা দিচ্ছেন।’’ এ ভাবে চললে নতুন জাহাজগুলি কার্গো নিয়ে পারাদ্বীপ কিংবা অন্য কোনও বন্দরে সরে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে ক্ষতি হবে হলদিয়া বন্দরেরই। উল্লেখ্য, মাস তিনেক আগে একই দাবিতে দশ দিন ধর্মঘট
ডেকেছিলেন ট্রান্সপোর্টাররা।