নতুন রকম নেমন্তন্ন

খাওয়ার জন্য হাত ধোওয়া চাই প্রতিদিন। কিন্তু শুক্রবার ‘বিশ্ব হাত ধোওয়া দিবস’-এ হাত ধোওয়ার জন্য হল জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। বাড়িতেও যাতে হাত ধোওয়ায় ঢিলে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে স্কুলপড়ুয়াদের বাবা-মায়েদের ডেকে খাইয়ে দিল স্কুল।

Advertisement

সীমান্ত মৈত্র

বনগাঁ শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫ ১৭:২৫
Share:

খাওয়ার আগে চলছে হাত ধোওয়া। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।

খাওয়ার জন্য হাত ধোওয়া চাই প্রতিদিন। কিন্তু শুক্রবার ‘বিশ্ব হাত ধোওয়া দিবস’-এ হাত ধোওয়ার জন্য হল জমিয়ে খাওয়া-দাওয়া। বাড়িতেও যাতে হাত ধোওয়ায় ঢিলে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতে স্কুলপড়ুয়াদের বাবা-মায়েদের ডেকে খাইয়ে দিল স্কুল।

Advertisement

বনগাঁর সুভাষপল্লি এলাকার কবি কেশবলাল বিদ্যাপীঠে (প্রাথমিক বিভাগ) দুপুর দেড়টা নাগাদ গিয়ে দেখা গেল, পড়ুয়ারা সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে। সঙ্গে অভিভাবকেরাও। শিক্ষকেরা সকলের উদ্দেশে হাত ধোয়ার উপকারিতা ব্যাখ্যা করেন। তারপর মহিলাদের শঙ্খধ্বনি দিয়ে শুরু হল অনুষ্ঠান। পড়ুয়াদের পাশপাশি অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকারাও হাত ধুলেন। তারপর সবাই আনন্দ করে খেতে বসলেন একসঙ্গে। প্রধান শিক্ষক আশিসকুমার হালদার বলেন, ‘‘খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্ব আরও বেশি করে বোঝানোর জ‌ন্যে অভিভাবকদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। বাড়তি খরচ আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকারাই বহন করেছি।’’ ডিমের ঝোল দিয়ে ভাত খেতে খেতে সোমা ঘোষ নামে এক অভিভাবক বলছিলেন, ‘‘এমন অভিজ্ঞতা অতীতে হয়নি।’’

পরিচ্ছন্নতা নিয়ে স্কুলের এই নির্দেশ অবশ্য অনেক আগেই পৌঁছে গিয়েছিল পড়ুয়াদের বাড়িতে। স্থানীয় গৃহবধূ শান্তি মাঝির মেয়ে সুপর্ণা চতুর্থ শ্রেণিতে, এবং ছেলে সৌরভ দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। শান্তিদেবী জানালেন,‘‘ আগে বাড়িতে ছেলেমেয়ে এবং আমরা খাবার আগে পরে জল দিয়েই হাত ধুতাম। কিন্তু স্কুলের শিক্ষকদের কাছ থেকে জানতে পারি সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার গুরুত্বের কথা। এখন বাড়ির সকলেই সাবান দিয়ে খাবার আগে হাত ধুয়ে থাকি।’’

Advertisement

হাত ধোয়া অভ্যাস করতে আগে বালতিতে জল ভরে দুই পড়ুয়া সাবান নিয়ে দাঁড়াত। তারা সব পড়ুয়ার হাতে সাবান মাখিয়ে দিত। তারপর পডু়য়ারা বালতির জলে হাত ধুয়ে মিড ডে মিলের খাবার খেত। কয়েকমাস আগে স্কুলে বসেছে পানীয় জলের কল। সেখানেই সাবান রাখা থাকে। এখন মিড ডে মিল খাওয়ার আগে সারিবদ্ধ ভাবে পড়ুয়ারা দাঁড়িয়ে যায় কলের সামনে।

স্বাস্থ্যের এই পাঠ অবশ্য নিয়মিত দেওয়া হয় এই স্কুলে। ক্লাস শুরুর আগে প্রার্থনা সঙ্গীতের সময়ে মাঝেমধ্যেই নানা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়া হয়। স্কুলে বাচ্চাদের দিতে এসে অভিভাবকেরাও তা শোনেন। তাদের উদ্দেশ্যেও নানা পরামর্শ দেওয়া হয়। পড়ুয়াদের স্বাস্থ্যবিধি শেখাতে বিশেষ গানও শেখানো হয়।

এমন উদ্যোগের ফলও মিলেছে। দ্বিতীয় শ্রেণির আয়েত্রী ঘোষ, চতুর্থ শ্রেণির স্নেহা দত্ত জানাল, ‘‘শিক্ষকেরা বলেছেন, হাতের আঙুলের নখের মধ্যে ময়লা থাকে। ফলে খাবার আগে হাত সাবান দিয়ে না ধুলে তা পেটের মধ্যে গিয়ে রোগ হতে পারে। বাবা-মাও এখন সাবান দিয়ে হাত ধুয়ে খায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন