Educaton

TAB: ট্যাবের রসিদ দিতে আতান্তরে স্কুল-প্রধানেরা

অতিমারির দাপটে গত বছর থেকে ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। অনেক গরিব পড়ুয়ারই স্মার্টফোন বা ট্যাব নেই।

Advertisement

আর্যভট্ট খান

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২১ ০৬:১২
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্কুল বন্ধ থাকায় অধিকাংশ পড়ুয়ার সঙ্গেই যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এই অবস্থায় দোকানদারের দেওয়া ট্যাবের ভাউচার বা রসিদ দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে খুব দ্রুত বাংলা শিক্ষা পোর্টালে আপলোড করার নির্দেশ পালন করতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছেন প্রধান শিক্ষকেরা। জেলা স্কুল পরিদর্শকদের থেকে আসা সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকা ঘিরে বিতর্ক জোরদার হয়েছে। অধিকাংশ প্রধান শিক্ষকদের প্রশ্ন, স্কুলে ছুটির মধ্যে এত দ্রুত সব পড়ুয়ার রসিদ পোর্টালে আপলোড করা যাবে কী ভাবে? রসিদ আপলোড করতে সময় চান তাঁরা।

Advertisement

অতিমারির দাপটে গত বছর থেকে ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। অনেক গরিব পড়ুয়ারই স্মার্টফোন বা ট্যাব নেই। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত বছর ঘোষণা করেন, সরকারি, সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত এবং সরকার পোষিত স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির সব পড়ুয়াকে ট্যাব কেনার জন্য মাথাপিছু ১০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। গত বছর টাকা পেয়েছিল উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা। এ বারেও দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে টাকা পৌঁছেছে। তা দিয়ে পড়ুয়ারা ট্যাব কিনেছে কি না, তা দেখার জন্যই স্কুল-কর্তৃপক্ষকে পড়ুয়াদের ট্যাব কেনার রসিদ দ্রুত পোর্টালে আপলোড করতে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা দফতর। প্রধান শিক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, এত দ্রুত সব পড়ুয়ার রসিদ জোগাড় করা কার্যত অসম্ভব। বিশেষ করে সমস্যা হচ্ছে গ্রামাঞ্চলের স্কুলে। অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, “স্কুল বন্ধ থাকায় সব পড়ুয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ফোনেও নয়। ট্যাব কেনার রসিদ স্কুলে আনার কথা বলায় অনেক অভিভাবক ফোন কেটে দিচ্ছেন। প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পক্ষে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ট্যাব কেনার রসিদ জোগাড় করা কি সম্ভব? শিক্ষা দফতরকে অনুরোধ করছি, রসিদ আপলোড করার সময়সীমা বাড়ানো হোক।”

প্রধান শিক্ষক শিবিরের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, কোনও কোনও পড়ুয়ার অভিভাবক বছরের শুরুতেই নিজের টাকা দিয়েই ট্যাব কিনেছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের বালিচকের একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রের অভিভাবক বলেন, “পড়াশোনায় সুবিধা হবে বুঝে জানুয়ারিতেই ছেলেকে ট্যাব কিনে দিয়েছি। শিক্ষা দফতরের ১০ হাজার টাকায় আবার ট্যাব কিনে দেব কেন? বাড়িতে দু’টি ট্যাব নিয়ে কী করব?”

Advertisement

শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিঙ্কর অধিকারী বলেন, “নানা কারণে অনেক অভিভাবকই রসিদ দিতে অস্বীকার করছেন। সে-ক্ষেত্রে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কী করার আছে?” শিক্ষকদের একাংশের প্রশ্ন, ট্যাবের টাকা তো সরাসরি পড়ুয়াদের অ্যাকাউন্টে যায়। তা হলে সেই টাকা দিয়ে পড়ুয়া ট্যাব কিনছে কি না, তার দায়িত্ব স্কুল নেবে কেন? শিক্ষা দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, “ট্যাবের রসিদ জোগাড় করা খুব একটা সমস্যার নয়। সব পড়ুয়ার ফোন নম্বর তো শিক্ষকদের কাছে আছে। হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমেই তো ট্যাবের ভাউচার জোগাড় করা যায়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন