বকেয়া মেটাতে স্বাস্থ্য দফতরের মাথায় হাত

দু’টিই সরকারি দফতর। এক পক্ষ বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রাপক আর অন্য পক্ষ সেই পরিষেবার মূল্য প্রাপক। দু’পক্ষের মধ্যে বকেয়া টাকা মেটানো নিয়ে চাপানউতোর তুঙ্গে।

Advertisement

পারিজাত বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৬ ০৩:২৯
Share:

দু’টিই সরকারি দফতর। এক পক্ষ বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রাপক আর অন্য পক্ষ সেই পরিষেবার মূল্য প্রাপক। দু’পক্ষের মধ্যে বকেয়া টাকা মেটানো নিয়ে চাপানউতোর তুঙ্গে। ১৬ বছর ধরে স্বাস্থ্য দফতরের অন্তর্গত অন্তত ৯০০টি সরকারি হাসপাতাল দেদার বিদ্যুৎ খরচ করেছে। কিন্তু কোটি-কোটি টাকার বিদ্যুৎ-বিল মেটায়নি।

Advertisement

এত বছরের ক্ষতির পরেও চুপ করে ছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা। তাদের যুক্তি, চিকিৎসা একটি মানবিক বিষয় ও জরুরি পরিষেবার অন্তর্গত। অবশ্য বিল মেটানো নিয়ে বিদ্যুৎ কর্তারা চাপাচাপি কম করেননি। কিন্তু তাতে লাভ কিছু হয়নি। শেষ পর্যন্ত বকেয়া বিল ২০ কোটি টাকার সঙ্গে আরও ৫ কোটি টাকা জরিমানা ধার্য করে স্বাস্থ্য দফতরকে চিঠি দিয়েছে বিদ্যুৎ সংস্থা।

‘ফ্রি’ পরিষেবা দিয়ে এমনিতেই এখন স্বাস্থ্য দফতরে টাকা ‘বাড়ন্ত’। ক্যানসার, কিডনির রোগ, বা রক্তের রোগের দামি ওষুধ ও চিকিৎসা সামগ্রী নিখরচায় দিতে গিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তার উপর বিদ্যুতের বকেয়া বিলের ধাক্কা কী ভাবে সামলাবেন, ভেবে পাচ্ছেন না স্বাস্থ্য কর্তারা।

Advertisement

গত ২০ নভেম্বর টাকা চেয়ে স্বাস্থ্যসচিব রাজেন্দ্র শুক্লর কাছে চিঠি পাঠায় বণ্টন সংস্থা। তার দু’দিনের মধ্যে বিল না-মেটানোর বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক’ বলে উল্লেখ করে এবং তার কারণ জানতে চেয়ে রাজ্যের সব জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকদের চিঠি পাঠিয়েছিলেন স্বাস্থ্য দফতরের তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব (অডিট-অ্যাকাউন্টস-ভেরিফিকেশন) অশোক রায়। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘বিদ্যুৎ বিলের খাতে টাকা বরাদ্দ না থাকলেও দফতর বিল জমা দিলেই ট্রেজারি সেই টাকা ছেড়ে দেয়। তাই বোঝাই যাচ্ছে, অতগুলি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এত বছর ধরে গুচ্ছ গুচ্ছ বিদ্যুৎ-বিল ট্রেজারিতে জমাই দেননি।’’ সব শুনে স্বাস্থ্য অধিকর্তা বিশ্বরঞ্জন শতপথী বলেন, ‘‘কী করে এমন হতে পারে! তদন্ত করা হবে। বিদ্যুৎ-বণ্টন কর্তৃপক্ষের কাছেও অনুরোধ জানিয়েছি, তাঁরা যেন জরিমানাটা অন্তত মকুব করেন।’’

বণ্টন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এত ক্ষতির বোঝা নিয়ে পরিষেবা দেওয়াই মুশকিল হচ্ছে। সূত্রের খবর, শুধু স্বাস্থ্যেরই নয়। বিভিন্ন পুরসভারও প্রায় ২২০ কোটি টাকা বাকি। তাই এ বার সব বকেয়া দ্রুত মিটিয়ে দিতে বলা হয়েছে। তবে জরিমানা মকুব হবে কি না সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি।

জেলা বকেয়া

• বর্ধমান ৮০ লক্ষ

• দার্জিলিং ৬ কোটি

• দক্ষিণ ২৪ পরগনা ৮৮ লক্ষ

• উত্তর ২৪ পরগনা ১৫ লক্ষ

• বীরভূম ২.২৪ কোটি

• পঃ মেদিনীপুর ৯৩ লক্ষ

• মুর্শিদাবাদ ৫৬ লক্ষ

তথ্যসূত্র: রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন