কুষ্ঠ রোধে গ্রামের পথই আশা কলকাতার

গ্রামে সুফল মিলেছে। এ বার তাই কলকাতায় কুষ্ঠ দমনে গ্রামের ‘আবসুলস’ (আশা বেসড  সার্ভেল্যান্স লেপ্রসি সাসপেক্টস) মডেলেই আস্থা রাখছে স্বাস্থ্য দফতর।

Advertisement

সৌরভ দত্ত

শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩১
Share:

গ্রামে সুফল মিলেছে। এ বার তাই কলকাতায় কুষ্ঠ দমনে গ্রামের ‘আবসুলস’ (আশা বেসড সার্ভেল্যান্স লেপ্রসি সাসপেক্টস) মডেলেই আস্থা রাখছে স্বাস্থ্য দফতর। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের খবর, কলকাতা পুরসভাকে সঙ্গে নিয়ে আগামী এপ্রিল মাস থেকে ব্লক স্তরের মডেলে কুষ্ঠরোগী চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হবে। তাই ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সারা রাজ্যে ‘লেপ্রসি কেস ডিটেকশন ক্যাম্প’ (এলসিডিসি) চললেও, কলকাতায় কোনও শিবির করা হয়নি।

Advertisement

২০১৫-১৬ সালে স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত ‘হেলথ অন দ্য মার্চ’ রিপোর্টে যে আটটি জেলায় কুষ্ঠরোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি ছিল, তার অন্যতম কলকাতা। স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, কলকাতায় এখন বছরপিছু নতুন কুষ্ঠরোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচশো। ২০১৬ সালে রাজ্যে সার্বিক ভাবে কুষ্ঠরোগ প্রতিরোধের হার ছিল ০.৭৪। ২০১৮-১৯ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ০.৬৪। কুষ্ঠ প্রতিরোধের আদর্শ মাপকাঠি হল, রোগের হার প্রতি ১০ হাজার জনে একের কম থাকতে হবে।

স্বাস্থ্যকর্তাদের দাবি, গ্রামীণ এলাকায় ভাল কাজ করেছেন ‘আবসুলস’ কর্মসূচিতে নিযুক্ত আশা কর্মীরা। স্বাস্থ্যভবনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নতুন মডেলে প্রতি মাসে ১২৫ জনের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সমীক্ষা করবেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার জন্য পুরসভার চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’’ বাড়ি বাড়ি ঘুরে রোগী চিহ্নিতকরণের কাজ শুরু হলে শহরে প্রকৃত রোগীর সংখ্যা কত, সে বিষয়েও স্বচ্ছ ধারণা পাওয়া যাবে। ওই আধিকারিক জানান, স্বাস্থ্যের মানচিত্রে কলকাতা জেলা হলেও এখানে দুই ২৪ পরগনা, হুগলির পাশাপাশি ঝাড়খণ্ডের রোগীরাও চিকিৎসার জন্য আসেন। স্বাস্থ্যভবনের পরিভাষায় কলকাতা ‘টারশিয়ারি সেন্টার’।

Advertisement

জাতীয় কুষ্ঠ দূরীকরণ কর্মসূচির নির্দেশিকাতেও জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের আওতায় ‘আবসুলস’ মডেল সামনে রেখে রাজ্যগুলিকে এগোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তাই কলকাতার পাশাপাশি ৮৭টি পুরসভাতেও ভবিষ্যতে এই মডেলে কুষ্ঠ দূরীকরণের কাজ হবে বলে খবর।

তবে শহরাঞ্চলে লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে কিছু প্রতিকূলতাও রয়েছে। স্বাস্থ্যভবন সূত্রের মতে, গ্রামের মতো শহরে জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের পরিকাঠামো যথেষ্ট পোক্ত নয়। বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে যুক্ত কর্মী এবং নতুন মডেলে নিযুক্ত চিকিৎসকদের মধ্যে কুষ্ঠ নিয়ে যাতে ছুৎমার্গ কাজ না করে, তা-ও নিশ্চিত করতে হবে। নোডাল অফিসার হিসেবে ‘এপিডেমোলজি কনসালট্যান্ট’ এবং পাবলিক হেলথ ম্যানেজার থাকার কথা। সব পুরসভায় এই পদে যোগ্য ব্যক্তি পাওয়া নিয়ে সমস্যা রয়েছে। পুরসভাগুলির সহযোগিতা ছাড়া লক্ষ্যে পৌঁছনো সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।

কলকাতা পুরসভার ডেপুটি মেয়র তথা মেয়র পারিষদ (স্বাস্থ্য) অতীন ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের ১৪৪টি ওয়ার্ডেই স্বাস্থ্য ইউনিট রয়েছে। পরিকাঠামোগত সমস্যা নেই। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকা মোতাবেক পুরসভা সহযোগিতা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন