রক্ত দিতেই মিলল হেলমেট, মাথা বাঁচাতে উদ্যোগী ক্লাব

তোমরা আমাদের রক্ত দাও, আমি তোমাদের প্রেশার কুকার দেব! পছন্দ নয়? বেশ, তাহলে হাতঘড়ি কিংবা চামড়ার ব্যাগ। নিদেনপক্ষে স্টিলের থালা-বাটি।এ বার উপহারের সেই তালিকায় নয়া সংযোজন—হেলমেট!

Advertisement

সুস্মিত হালদার

কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৫ অগস্ট ২০১৬ ০১:৪৯
Share:

এই হেলমেটই তুলে দেওয়া হয়েছে রক্তদাতাদের।— নিজস্ব চিত্র।

তোমরা আমাদের রক্ত দাও, আমি তোমাদের প্রেশার কুকার দেব!

Advertisement

পছন্দ নয়? বেশ, তাহলে হাতঘড়ি কিংবা চামড়ার ব্যাগ। নিদেনপক্ষে স্টিলের থালা-বাটি।

এ বার উপহারের সেই তালিকায় নয়া সংযোজন—হেলমেট!

Advertisement

রবিবার রক্তদানের পরে ২৫ জন রক্তদাতাদের প্রত্যেকের হাতে হেলমেট তুলে দিল কৃষ্ণনগরের মল্লিকপাড়া ক্লাব ইউনিক বারোয়ারি। হঠাৎ হেলমেট কেন?

ক্লাবের সম্পাদক জয়দীপ বিশ্বাস বলছেন, ‘‘যাঁরা রক্ত দিয়ে মানুষের জীবন বাঁচাচ্ছেন, তাঁদের জীবন বাঁচানোর দায়িত্ব তো আমাদের। আর হেলমেটই সেটা করতে পারে। তাই অন্য কিছু না ভেবেই আমরা এ বার হেলমেটের কথাই ভেবেছিলাম। সেই মতো ২৫ জন রক্তদাতাকেই আমরা রক্তদানের পরে হেলমেট তুলে দিয়েছি।’’

এতদিন রক্তদানের পরে মিলত সিঙ্গাপুরি কলা, ঠান্ডা ডিম আর দু’পিস পাঁউরুটি। কিন্তু গত কয়েক বছর থেকে ছবিটা বদলেছে। রক্তদানের পরে উপহার না দিলে যেন মান থাকে না। কিন্তু রক্তদানের বিনিময়ে এই উপহার দেওয়া নিয়ে বিতর্কও কম হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও (হু) এই উপহারের ব্যাপারে আপত্তি জানিয়েছে। কিন্তু তার পরেও উপহারে ভাঁটা পড়েনি।

কৃষ্ণনগরের ওই ক্লাবের সদস্যরা অবশ্য এটাকে উপহার বলতে নারাজ। তাঁদের দাবি, মুখ্যমন্ত্রী সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফের কথা বলছেন। জেলার পেট্রোল পাম্পগুলিও হেলমেট ছাড়া পেট্রোল দিচ্ছে না। পুলিশও হেলমেটের ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করছে। সেই কারণেই হেলমেট নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে তাঁদের এই উদ্যোগ।

রক্তদাতাদের একজন বাপি দাস বলছেন, ‘‘অনেক বার অনেক জায়গায় রক্ত দিয়েছি। নানা উপহারও দেওয়া হয়। যদিও উপহারটা কখনই গুরুত্বপূর্ণ হওয়া উচিত নয়। তবুও বলব এই হেলমেটের ব্যাপারটি অভিনব। বিষয়টি জানার পরে উচ্ছ্বসিত কৃষ্ণনগরের পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা। তিনি বলেন, “এটাকে কিন্তু উপহার বলা যায় না। মানুষকে সচেতন করতে এমন অভিনব উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়।’’

জেলার পুলিশ সুপার শীষরাম ঝাঝারিয়াও ওই ক্লাবের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “এ ভাবে জেলার ক্লাবগুলো এগিয়ে এলে হেলমেটের ব্যাপারে একশো শতাংশ সফল হওয়া কেউ আটকাতে পারবে না।’’ দাতাদের হাতে হেলমেট তুলে দেওয়ার পরে ক্লাব সদস্যরা অত্যন্ত বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করেছেন, ‘‘দাদা, এটাকে কিন্তু আলমারির মাথায় তুলে রাখবেন না। প্লিজ, পরবেন কিন্তু।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন