নারদ-ভিডিও

আপত্তি উড়িয়ে ফুটেজ যাচাই করাবে হাইকোর্ট

তৃণমূলের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও নারদ নিউজের ঘুষ-ভিডিওর ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে বদ্ধপরিকর কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ফুটেজের ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই মূল মামলার শুনানি হবে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:১৮
Share:

তৃণমূলের প্রবল আপত্তি সত্ত্বেও নারদ নিউজের ঘুষ-ভিডিওর ফরেন্সিক পরীক্ষা করাতে বদ্ধপরিকর কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুর জানিয়ে দিয়েছেন, ‘‘ফুটেজের ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই মূল মামলার শুনানি হবে।’’

Advertisement

নারদ নিউজের স্টিং অপারেশনের ফুটেজে গত লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের শাসক দলের প্রায় এক ডজন মন্ত্রী-সাংসদ-মেয়রকে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছে। তার পরেই অভিযুক্তরা দাবি করেন ফুটেজগুলি ভুয়ো। দায়ের হওয়া জনস্বার্থ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এ দিন পুনরায় বলেন, ‘‘আগে ফুটেজের ফরেন্সিক বিশ্লেষণ করা জরুরি। সাধারণ মানুষ জানতে চায়, এই ফুটেজ সত্য না ভুয়ো।’’ গত ১৯ এপ্রিল এই মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘‘নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের উপর মানুষের আস্থা নিয়েই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে এই ফুটেজ।’’ তিনি বলেছিলেন, এই ফুটেজ ভুয়ো হলে সমাজের পক্ষে যেমন বিপজ্জনক, সত্য হলেও একই ভাবে বিপজ্জনক। তবে এ দিন ডিভিশন বেঞ্চ কোনও রায় দেয়নি। প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, আগামী শুক্রবার ২৯ ফেব্রুয়ারি তিনি এ বিষয়ে রায় দেবেন। হাইকোর্টের আইনজীবীদের একাংশ মনে করছেন, ওই ফুটেজ দেশের কোন ফরেন্সিক পরীক্ষাগারে পাঠানো হবে, কোন বিশেষজ্ঞ তা পরীক্ষা করবেন, শুক্রবারের রায়ে প্রধান বিচারপতি সবই সুনির্দিষ্ট করে বলে দেবেন।

এর আগে হাইকোর্ট নারদ নিউজের কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে দ্বিতীয় দফায় একটি হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছিল। ১৯ এপ্রিল সেই হলফনামা আদালতে পেশ করেছিলেন ম্যাথুর আইনজীবী বিমল চট্টোপাধ্যায়। ঘুষ-কাণ্ডে অভিযুক্তদের আইনজীবীদের প্রধান বিচারপতি নির্দেশ দেন, ওই হলফনামা নিয়ে কোনও বক্তব্য থাকলে, পাল্টা হলফনামা পেশ করে তা জানাতে। সেই মতো এ দিন শুনানির গোড়াতেই তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, জয়দীপ কর, কিশোর দত্তরা জানান, তাঁরা হলফনামা পেশ করেছেন।

Advertisement

এর পরে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) জয়ন্ত মিত্রের উদ্দেশে বলেন, তাঁর কিছু বলার রয়েছে কি না। এজি জানতে চান, ‘‘ফুটেজ ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হলে তা কি তদন্তের অংশ বলে মনে করা হবে?’’ প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সেটা প্রাথমিক ধাপ। ফরেন্সিক রিপোর্ট খামবন্ধ অবস্থায় আদালতের কাছে থাকবে। এখনই তা প্রকাশ হবে না।’’ এর পরে এজি বলেন, ‘‘আদালত ম্যাথু স্যামুয়েলকে নির্দেশ দিয়েছিল, তাঁকে আদালতে হাজির হয়ে ওই ফুটেজ জমা দিতে। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে তিনি হাইকোর্টে এলেন না, কিন্তু কলকাতা ঘুরে গেলেন।’’ তা শুনে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘‘সেই কারণে কি আদালত ফুটেজ পরীক্ষা করবে না?’’

এর পরে প্রধান বিচারপতি অভিযুক্তদের আইনজীবীদের কাছে জানতে চান, তাঁদের কি বলার রয়েছে। কল্যাণবাবু অভিযোগ করেন, প্রথম হলফনামায় ম্যাথু জানান, ফুটেজের ‘টেপ’ রয়েছে। পরে তিনি বলেন, আই-ফোনে ওই ফুটেজ তোলা হয়েছে। এভিডেন্স অ্যাক্টে এই ফুটেজ প্রমাণ করা যায় না।

আইনজীবী জয়দীপ কর দাবি করেন, ‘‘তথ্য প্রযুক্তি আইনে এই ধরনের ফুটেজকে সুপ্রিম কোর্টও ধর্তব্যে আনে না।’’ আর এক আইনজীবী কিশোর দত্ত দাবি করেন, ‘‘ম্যাথু অরিজিনাল (আসল) ফুটেজ আদালতে জমা দেননি। আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, আন-এডিটেড (অসম্পাদিত) ফুটেজ জমা দিতে। কিন্তু তা জমা দেওয়া হয়নি।’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement