মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি।নিজস্ব চিত্র
দু’দিন ধরেই কুয়াশার চাদরে মোড়া কার্শিয়াং। কেমন যেন ঘুম-ঘুম ভাব। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফর ঘিরে আচমকা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে ‘টাউন অব স্কুলস’। শুক্রবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত রোহিণী থেকে কার্শিয়াঙের রাস্তার দু’ধারের উদ্দীপনা দেখে তেমনই মনে হতে পারে। কে, কোথায় রাস্তার ধারে খাদা নিয়ে দাঁড়াবেন, তা নিয়ে পুলিশের কাছে আব্দার চলছে। কোথায় কোন সম্প্রদায়ের মানুষ গান গেয়ে, বাজনা বাজিয়ে অভ্যর্থনা জানাবেন— তা নিয়েও ঠেলাঠেলি চলছে। জেলার পুলিশকর্তারা উৎসাহীদের তালিকা তৈরি করে পর্যায়ক্রমে রাস্তার কয়েক কিলোমিটার দূরে দাঁড়ানোর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
সব ঠিক থাকলে আজ বেলা ৩টে নাগাদ বাগডোগরা থেকে কার্শিয়াঙের দিকে রওনা হবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে রাতে থাকবেন। পরদিন, শনিবার সরকারি সভা থেকে উত্তরবঙ্গ উৎসবের উদ্বোধন-সহ একাধিক সরকারি কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। তাতে এলাকার তৃণমূল নেতারাই শুধু নয়, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দাদের অনেকেই উদ্দীপিত। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীকে সামনে পেলে এলাকার নানা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা স্থানীয় অনেক সমস্যা তুলে ধরার সুযোগ মিলবে বলে আশাবাদী।
যেমন কার্শিয়াঙের ব্যবসায়ী সংগঠনের একাধিক সদস্য জানান, এলাকায় পরিশ্রুত পানীয় জলের সমস্যা আজও মেটেনি। শহরে পার্কিংয়ের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। পর্যটক টানতে শহরের কাছেপিঠে নতুন পরিকাঠামোও তৈরি হয়নি। উপরন্তু, পাহাড়ি ভূমকম্পপ্রবণ শহরে তিন-চার-পাঁচ তলা বাড়ি তৈরির প্রবণতাও বাড়ছে। দার্জিলিং, কালিম্পঙের নিত্য নতুন পরিকাঠামো তৈরি হলেও কার্শিয়াংয়ে বাড়তি নজর দেওয়ার আর্জি জানাবেন তাঁরা। সেই সঙ্গে এলাকায় প্রেসিডেন্সি কলেজের ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত সম্পূর্ণ করা ও একটি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গড়ার আবেদনও করবেন তাঁরা।
সরকারি কর্মসূচি হলে কী হবে, তৃণমূল কোমর বেঁধে আসরে নেমেছে। কারণ, মার্চ কিংবা এপ্রিলেই পাহাড়ে পুরসভা-পঞ্চায়েত ভোট হতে পারে। তার মধ্যে কার্শিয়াঙের ডাকসাইটে মোর্চা নেতা প্রদীপ প্রধানকে দার্জিলিঙের তৃণমূলের পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাস দলে টেনে নিয়ে এলাকায় কর্তৃত্ব কায়েমের দিকে অনেকটাই এগিয়েছেন। তাই তৃণমূলের পাহাড় কমিটির মুখপাত্র বিন্নি শর্মা বলেন, ‘‘রোহিণী থেকে কার্শিয়াং, দু’ধারে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে বোর্ড টাঙানো হয়েছে। নানা আশায় মানুষ বুক বেঁধেছেন।’’ তাঁর দাবি, ‘‘দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) পাহাড়ে ভোটের রাজনীতি করেন না। এখানে শান্তি বজায় রেখে আরও উন্নয়ন করতে চান।’’