Hooghly Murder case

‘মা খুব খারাপ কাজ করেছে’! ফাঁসি চেয়েছিলেন ছেলেই, কিন্তু হুগলির আদালত যাবজ্জীবন কারাবাসের সাজা শোনাল

হুগলির পোলবা থানার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ মালকে গলা কেটে খুন করা হয় ২০১২ সালের ২৮ মার্চ। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে, কৃষ্ণের স্ত্রী রিনা মাল পুলিশকে জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। তাঁর আর ছেলের হাত বেঁধে রেখে স্বামীকে খুন করে গয়না, টাকাপয়সা লুট করেছে তারা।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০২৫ ২০:২২
Share:

আদালতে হাজির করানো হচ্ছে রিনাকে। —নিজস্ব চিত্র।

প্রেমিকের সঙ্গে সংসার করতে ‘পথের কাঁটা’ স্বামীকে সরানোর পরিকল্পনা করে দুষ্কৃতীদের সুপারি দিয়েছিলেন স্ত্রী। ছেলের সাক্ষ্যে বারো বছর পর দোষী সাব্যস্ত হলেন সেই মা। ছেলেই চেয়েছিলেন, মায়ের ফাঁসি হোক! কিন্তু আদালত যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে। দোষী সাব্যস্ত করে একই সাজা দেওয়া হয়েছে মহিলার প্রেমিক এবং পাঁচ ভাড়াটে খুনিকেও।

Advertisement

হুগলির পোলবা থানার পাটনা গ্রামের বাসিন্দা কৃষ্ণ মালকে গলা কেটে খুন করা হয় ২০১২ সালের ২৮ মার্চ। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে, কৃষ্ণের স্ত্রী রিনা মাল পুলিশকে জানান, বাড়িতে ডাকাত পড়েছিল। তাঁর আর ছেলের হাত বেঁধে রেখে স্বামীকে খুন করে গয়না, টাকাপয়সা লুট করেছে তারা।

পোলবা থানার পুলিশ তদন্তে নেমে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তদন্তে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। কৃষ্ণের সঙ্গে রিনার বয়সের ফারাক ছিল প্রায় ২০ বছর। ছেলের বয়স ১২। স্বামীর সঙ্গে সুখী ছিলেন না রিনা। বলাগড়ের জিকো পাল নামে এক যুবকের সঙ্গে প্রেম হয় তাঁর। বাইকে করে বলাগড় থেকে পোলবায় রিনার সঙ্গে দেখা করতে আসতেন জিকো। তাঁর সঙ্গে শলাপরামর্শ করে পাঁচ জনকে সুপারি দেওয়া হয়। ঘটনার দিন দুষ্কৃতীরা গভীর রাতে কৃষ্ণের বাড়িতে ঢোকেন। দরজা খুলে দেন রিনাই।

Advertisement

তদন্তে বিষয়টি স্পষ্ট হতেই অভিযুক্ত রিনা, প্রেমিক জিকো এবং বাকি পাঁচ জন—দীপঙ্কর পাল, বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী, লক্ষীকান্ত চক্রবর্তী, অভিজিৎ চক্রবর্তী এবং রাজা দাসকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চুঁচুড়া আদালতের সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায় চৌধুরী বলেন, ‘‘এই মামলায় ১৮ জন সাক্ষ্য দেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল মৃতের ছেলের বয়ান। আমি আদালতে বলেছিলাম, এটা বিরল থেকে বিরলতম ঘটনা। তাই সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি দেওয়া হোক। আদালত সেটা মনে করেনি। চুঁচুড়া আদালতের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা দায়রা বিচারক কৌস্তভ মুখোপাধ্যায় সাত জনকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন। প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা। অনাদায়ে দু’বছর জেল।’’

মৃতের ছেলে কুশল বলেন, ‘‘মা যে অপরাধ করেছে, তার জন্য ফাঁসি হওয়া দরকার ছিল।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement