পুলিশের দালালি বরদাস্ত নয়, বৈঠকে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী

শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে বারুইপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মণ্ডল বললেন, ‘‘পুলিশ সম্পর্কে মানুষের খুব খারাপ ধারণা হচ্ছে। তারা মানুষের কথা শুনতে চায় না। দুর্ব্যবহার করে, টাকা নেয়।’’

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

পৈলান শেষ আপডেট: ০৩ জুন ২০১৭ ০৩:৪৫
Share:

আলোচনা: দক্ষিণ ২৪ পরগনার পৈলানে প্রশাসনিক বৈঠকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার। ছবি: সুমন বল্লভ।

কথাটা এল এমন এক জন নেতার মুখ থেকে, যিনি তিন-তিনবার বিধায়ক হয়েও ট্রেনে-বাসেই যাতায়াত করেন। তাঁর অভিযোগ ফেলতে পারলেন না খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

Advertisement

শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সামনে উঠে দাঁড়িয়ে বারুইপুর (পূর্ব) কেন্দ্রের বিধায়ক নির্মল মণ্ডল বললেন, ‘‘পুলিশ সম্পর্কে মানুষের খুব খারাপ ধারণা হচ্ছে। তারা মানুষের কথা শুনতে চায় না। দুর্ব্যবহার করে, টাকা নেয়।’’

কথাটা আর বিশেষ বাড়াতে দেননি মুখ্যমন্ত্রী। তবে নির্মলবাবুর মতো লোকের মুখে এ-হেন অভিযোগ শুনে যা বোঝার বুঝে গিয়েছেন। কোন থানা এই কাজ করে জানতে চাইলে নির্মলবাবু বলেছেন জয়নগর ও বারুইপুর থানার নাম। মুখ্যমন্ত্রী তত ক্ষণে দাঁড় করিয়ে দিয়েছেন দুই থানার আইসি-কে। প্রশ্ন করেছেন, ‘‘মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করেন না কেন? এ সব চলবে না। আপনাদের কাজ তো মানুষের সঙ্গে কথা বলা। আর আপনাদের নীচের অফিসাররাও নানা দালালি করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। আমি কিন্তু সব সরিয়ে দেব।’’

Advertisement

আরও পড়ুন:‘শ্বশুরের কামাই, খাচ্ছে জামাই!’ শোভনকে মমতা

তবে সমস্যাটা যে শুধু দুই থানার নয়, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি মমতার। পুলিশকর্তাদের তিনি বলেন, ‘‘মানুষ আপনাদের কাছেই আসেন। ওঁদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করবেন না।’’ এর পরেই ডিজি সুরজিৎ করপুরকায়স্থর হাতে মাইক তুলে দেন মমতা। নিচুতলার পুলিশদের কী করতে হবে, তা বলতে বলেন। ডিজি বলেন, ‘‘পুলিশ সুপাররা মাসে তিন দিন প্রতিটি থানায় যাবেন। সিআই, এসডিপিও-রা যাবেন রোজ।’’ সাধারণ মানুষের মনের কথা প্রকাশ্যে তুলে আনার জন্য নির্মলবাবুর উপরে যাতে প্রতিহিংসামূলক আচরণ না করা হয়, সে ব্যাপারেও পুলিশকে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী।

পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা তাঁর নির্দেশ ঠিকমতো মানছেন কি না, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি ‘অ্যাপ’ চালুর নির্দেশও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি থানার প্রতিদিনের কার্যকলাপ ওই ‘অ্যাপ’-টিতে নিয়ে আসতে হবে। কোথাও কোনও লোককে বসিয়ে রাখা হচ্ছে কি না, তা দেখা যাবে এই অ্যাপে।’’ এর পর মমতা তাঁর মোবাইলে ওই অ্যাপটি বার করে সবাইকে দেখান কী করে স্বাস্থ্য দফতর এর সাহায্যে সব হাসপাতালে নজরদারি চালাচ্ছে। মঞ্চে বসেই তিনি বলেন, ‘‘এই দেখুন এসএসকেএম দেখা যাচ্ছে।’’

কিন্তু শুধুই কি পুলি‌শ? প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছে গিয়েও কি তিক্ত অভিজ্ঞতা হয় না আমজনতার! সেই কথা মাথায় রেখেই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, জেলাশাসক, বিডিও সকলের কাজেই নজরদারি দরকার। তিনি বলেন, ‘‘এক জনকে আধ ঘণ্টা বসিয়ে রাখুন। কিন্তু তার থেকে বেশি সময় বসিয়ে রাখাটা অমানবিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন