Dearness Allowance

কত জন ডিএ প্রাপক রয়েছেন, সব দফতরের কাছে জানতে চাইল নবান্ন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কার্যকর করতে উদ্যোগ?

সব দফতরকে পৃথক ভাবে ডিএ প্রাপকদের সংখ্যা জানাতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে কর্মরত কত জন ডিএ পাওয়ার যোগ্য, সঙ্গে কতজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী এই ডিএ পাওয়ার আওতাভুক্ত, তা-ও সব দফতরকে জানাতে হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২৫ ১১:৫৬
Share:

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

গত ১৬ মে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের মহার্ঘভাতা (ডিএ) সংক্রান্ত মামলায় রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। ওই নির্দেশে বলা হয়েছিল, আদালতের নির্দেশের ছ’সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে ওই পরিমাণ বকেয়া মিটিয়ে দিতে হবে। সম্প্রতি রাজ্যের অর্থ দফতর জানতে চেয়েছে, রাজ্যের সমস্ত দফতরে কত জন মহার্ঘভাতা প্রাপক রয়েছেন। যে পদক্ষেপ থেকে মনে করা হচ্ছে যে, মোট বকেয়ার ২৫ শতাংশ মিটিয়ে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে নবান্ন।

Advertisement

বর্তমানে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দফতরে কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা আড়াই লক্ষের কিছু বেশি। এ ছাড়াও রাজ্যে স্কুলশিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার। বিভিন্ন পঞ্চায়েত, পুরসভা, পুরনিগম-সহ সরকারপোষিত স্বশাসিত সংস্থায় কর্মরত কর্মচারীর সংখ্যা প্রায় এক লক্ষ। সব মিলিয়ে প্রায় আট লক্ষ কর্মচারী ওই বকেয়া ডিএ পাওয়ার যোগ্য। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরাও ডিএ প্রাপকদের তালিকায় রয়েছেন। সব মিলিয়ে সংখ্যাটি ১০ লক্ষে পৌঁছে যেতে পারে বলেই দাবি বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠনের।

এমতাবস্থায় সব দফতরকে পৃথক ভাবে ডিএ প্রাপকদের সংখ্যা জানাতে বলা হয়েছে। সে ক্ষেত্রে বর্তমানে কর্মরত কত জন ডিএ পাওয়ার যোগ্য, সেটা তো বটেই, তারই পাশাপাশি কত জন অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ওই ডিএ পাওয়ার আওতাভুক্ত, তা-ও সমস্ত সরকারি দফতরকে জানাতে হবে। কারণ, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৯ সালে পঞ্চম বেতন কমিশনের অধীনে জারি হওয়া রোপার মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৯ সালে। তাই ২০১৯ সালের পরে পশ্চিমবঙ্গে সরকারি চাকরিপ্রাপ্ত কোনও সরকারি কর্মচারী এই ২৫ শতাংশ ডিএ পাবেন না। যাঁরা ২০০৯ সাল থেকে বা তার আগে থেকে সরকারি চাকরিতে কর্মরত রয়েছেন বা কর্মরত ছিলেন, তাঁরাই শুধু এই ১০ বছরের সময়কালে বকেয়া থাকা ডিএ-র সুবিধা পাবেন। তার সঙ্গে ২০০৯ সালের পরের ১০ বছরে নিযুক্ত সরকারি কর্মচারীরাও নিজেদের সময়কালের ভিত্তিতে এই ডিএ-র সুবিধা পাবেন। ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলের যে সমস্ত শিক্ষক চাকরি পেয়েছিলেন, সম্প্রতি তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চাকরিহারা হয়েছেন। চাকরিহারা শিক্ষকেরা এই ডিএ পাবেন না বলেই নবান্ন সূত্রের খবর।

Advertisement

সিপিএম সমর্থিত সরকারি কর্মচারী সংগঠন কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দ্রুত বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দেওয়ার দাবিতে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। কো-অর্ডিনেশন কমিটির নেতা বিশ্বজিৎ দত্তচৌধুরী বলেন, ‘‘বর্তমান রাজ্য সরকার সরকারি কর্মচারীদের প্রাপ্য ডিএ থেকে বঞ্চিত রেখেছে দীর্ঘ দিন। তাই আমরা বাধ্য হয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে নিজেদের দাবি আদায়ের জন্য লড়াই করছি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মোট বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সেই নির্দেশের পর থেকে সরকার এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি। এখন রাজ্য সরকার কোথায় কী খোঁজখবর নিচ্ছে, তা আমরা জানি না। আমরা আমাদের অধিকার পাওয়ার দাবিতে আবার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিচ্ছি।’’ স্কুলশিক্ষক সংগঠনের তরফে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী মঞ্চের স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘কে কোথায় কী খোঁজ নিচ্ছে আমরা বলতে পারব না। তবে আদালতের নির্দেশের পর ছ’সপ্তাহের মধ্যে আমাদের বকেয়া ডিএ-র ২৫ শতাংশ রাজ্য সরকারকে দিতেই হবে। ইতিমধ্যেই দু’সপ্তাহের বেশি সময় কেটে গিয়েছে।’’ অন্য দিকে, তৃণমূল সমর্থিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী ফেডারেশনের আহ্বায়ক প্রতাপ নায়েক বলেন, ‘‘আমাদের মুখ্যমন্ত্রী আইনত বকেয়া ডিএ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেই সিদ্ধান্তকে ফেডারেশন সমর্থন জানাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement