Howrah District Hospital

দুষ্কৃতী-দৌরাত্ম্য হাওড়া হাসপাতালে, ‘নিষ্ক্রিয়’ পুলিশ

গত বুধবার রাত সওয়া ৯টা নাগাদ হাসপাতাল চত্বরের এক জায়গায় স্তূপীকৃত হয়ে থাকা আবর্জনা ও চিকিৎসা-বর্জ্যে হঠাৎই আগুন ধরে যায়।

Advertisement

দেবাশিস দাশ

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ মার্চ ২০২৩ ০৭:১৬
Share:

হাওড়া জেলা হাসপাতাল। — ফাইল চিত্র।

হাসপাতাল চত্বরই হয়ে গিয়েছে গাঁজার ঠেক। ওই এলাকাদুষ্কৃতীদের অবাধ বিচরণক্ষেত্রও। নিত্যদিন হাসপাতালে আসা রোগী ও রোগীর আত্মীয়দের মোবাইল এবং সাইকেল চুরি হচ্ছে। পর পর অভিযোগের ঠেলায় ঘুম উড়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। যে হাসপাতালের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে তা যে সে হাসপাতাল নয়, হাওড়া শহর তথা জেলার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি হাওড়া জেলা হাসপাতাল। সেখানকার কর্তৃপক্ষের দাবি, পুলিশের কাছে বার বার অভিযোগ জানানো আজ পর্যন্ত কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। হাসপাতাল চত্বর থেকে হটানো যায়নি দুষ্কৃতীদের।

Advertisement

গত বুধবার রাত সওয়া ৯টা নাগাদ হাসপাতাল চত্বরের এক জায়গায় স্তূপীকৃত হয়ে থাকা আবর্জনা ও চিকিৎসা-বর্জ্যে হঠাৎই আগুন ধরে যায়। সেই আগুন দ্রুত ছড়াতে থাকে। ওই ঘটনায় হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়েরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরাই বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আনায় খবর যায় দমকলে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন এসে প্রায় আধ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিভিয়ে ফেলে। প্রাথমিক তদন্তে দমকল আধিকারিকদের অনুমান, হাসপাতালের পূর্ব দিক অর্থাৎ, ঋষি বঙ্কিম রোডের দিকে একটি পরীক্ষাগারের পিছনে জমে থাকা আবর্জনার স্তূপে কোনও ভাবে সিগারেট বা বিড়ির ফুলকি পড়েই আগুন লেগেছিল।

ওই ঘটনার তদন্তে নামেন পুলিশ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।প্রাথমিক তদন্তের পরেই জানা যায়, যে জায়গায় আগুন লেগেছিল, সেই জায়গায় সন্ধ্যা নামলেই নিয়মিত গাঁজার ঠেক বসে। পুলিশের ধারণা, সেখানে বসে গাঁজা খাওয়ার সময়ে আগুনের ফুলকি কোনও দাহ্য বস্তুতে পড়েই এমনটা হয়েছে। আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন পাশের ভবনে থাকা রোগীরা।

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, যে জায়গায় বুধবার রাতে আগুন লাগে, সেখানে একটি সংস্থার পরীক্ষাগার রয়েছে। সেখান থেকেই হাওড়া জেলাহাসপাতালে চিকিৎসা করতে আসা রোগীরা বিভিন্ন শারীরিক পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে যান। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, ওই পরীক্ষাগারের পিছনেই মাঝেমধ্যে জমা হয় নানা আবর্জনা। একদল যুবকনিত্যদিন সেখানে গাঁজার আসর বসায়। পুলিশ জানিয়েছে, আগুন লাগার ঘটনার পরে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, সেখানে গাঁজা বিক্রি করে হাওড়া পুলিশ মর্গের এক কর্মীর ভাই। পুলিশ এখন ওই যুবককে খুঁজছে।

হাওড়া জেলা হাসপাতালের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘গাঁজার ঠেক থেকে শুরু করে নিয়মিত সাইকেল ও মোবাইল চুরির বিষয়টি হাসপাতালের পক্ষ থেকে দফায় দফায় হাওড়া সিটি পুলিশ, এমনকি হাওড়ার নগরপালকেও চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। কিন্তু সে ভাবে কোনও ফল হয়নি।’’

অন্য দিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এই বক্তব্য প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘হাওড়া হাসপাতাল চত্বরে নিয়মিত হাওড়া থানা থেকে দু’টি করে টহলদারি ভ্যান রাখা হয়। সেখান থেকে নিরাপত্তার ব্যাপারে নজরদারি চালানো হয়। তার পরেও কেন এই ধরনের অভিযোগ করা হচ্ছেজানি না। তবুও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন