Illegal Sand Mining

রাতের অন্ধকারে বালি পাচারের নালিশ

এ বিষয়ে রসপুর পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের অর্জুন দলুই বলেন, ‘‘ছোট কলিকাতা দামোদর থেকে বালি তোলা হচ্ছে, তা জানতে পেরে ওখানে গিয়েছিলাম।

Advertisement

সুব্রত জানা

আমতা শেষ আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৭:৪২
Share:

দামোদর থেকে তোলা হচ্ছে বালি। —নিজস্ব চিত্র।

সেচ দফতরের অনুমতি নিয়ে কিছু দিন ধরে হাওড়ার আমতা রসপুর পঞ্চায়েতের ছোট কলিকাতা গ্রামে দামোদর থেকে বালি তুলছে একটি ঠিকা সংস্থা। সেই বালি নদীবাঁধ সংস্কারের কাজে লাগানো হচ্ছে। ওই সংস্থাটি চালান স্থানীয় এক তৃণমূল নেতা। অভিযোগ, সরকারি অনুমতিকে কাজে লাগিয়ে বালি তুলে রাতের অন্ধকারে ট্রাকে করে নিয়ে গিয়ে তা লক্ষ লক্ষ টাকায় বিক্রি করছেন
ওই নেতা।

Advertisement

গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বালি তোলার ফলে চাষজমি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। গ্রামের রাস্তাও খারাপ হচ্ছে বালির গাড়ির চাপে। স্থানীয় পঞ্চায়েতকে বলেও লাভ হচ্ছে না।

উলুবেড়িয়া উত্তর কেন্দ্রের তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা সমীরণ দেয়াসির বিরুদ্ধে উঠছে অভিযোগের আঙুল। তিনি অবশ্য বালি বিক্রির কথা মানেননি।
সমীরণের কথায়, ‘‘সেচ দফতরের অনুমতি নিয়ে বালি তোলা হচ্ছে। এই বালি নদীবাঁধ মেরামতির কাজে লাগছে।’’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘দিনের বেলায় ট্রাক্টর ও ছোট গাড়ি করে বালি যাচ্ছে ঠিক কথা, কিন্তু রাতের অন্ধকারে বড় বড় ট্রাক ও ডাম্পার ভর্তি হয়ে
বালি চলে যাচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। শাসক দলের নেতা বলে গ্রামের
মানুষ কিছু বলার সাহস পাচ্ছেন না।’’ আর এক গ্রামবাসীর কথায়, ‘‘বড়
বড় ট্রাক যাওয়ার ফলে রাস্তা খারাপ হচ্ছে। পঞ্চায়েতকে বলে কিছু লাভ হয়নি।’’

Advertisement

এ বিষয়ে রসপুর পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের অর্জুন দলুই বলেন, ‘‘ছোট কলিকাতা দামোদর থেকে বালি তোলা হচ্ছে, তা জানতে পেরে ওখানে গিয়েছিলাম। ওঁরা আমাকে সেচ দফতরের একটি অনুমতিপত্র দেখিয়েছেন। গ্রামের মানুষজন মৌখিক ভাবে অভিযোগ করছেন, বালি-বোঝাই করে রাতের অন্ধকারে বড় বড় ট্রাক ও ডাম্পারে নিয়ে গিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। তাতে রাস্তার ক্ষতি হচ্ছে। তবে বালি তোলার নিয়ম আমার সঠিক জানা নেই। নতুন প্রধান হয়েছি, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

কী বলছে সেচ দফতর?

দফতরেরর আমতা ডিভিশনের নির্বাহী আধিকারিক শমীক চৌধুরী বলেন, ‘‘নদী থেকে বালি তোলা এমনিতে নিষিদ্ধ। তবে সেচ দফতর নিজেদের কাজের প্রয়োজনে বালি তুলতে পারে।’’ দফতর সূত্রের খবর, হাওড়া জেলায় বিশ্বব্যাঙ্কের টাকায় বন্যা নিয়ন্ত্রণের কাজে বিভিন্ন নদীবাঁধ সংস্কারে বালি প্রয়োজন হচ্ছে। তাই একটি ঠিকাদার সংস্থাকে বালি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে তার কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। যেমন, সমস্ত বালি বস্তাবন্দি করে ট্রাক্টর বা ছোট গাড়ি করে নিয়ে যেতে হবে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত কাজ করা যাবে। বড় ট্রাক বা ডাম্পারে বালি তুলে রাতে গাড়ি চলাচল করবে না। বরাতপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থা যদি রাতের অন্ধকারে বালি পাচার করে, তা হলে অভিযোগ পেলে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দফতরের এক কর্তা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন