অসচেতন: রবিবার উলুবেড়িয়া বাজারে ভিড়। মানা হল না দূরত্ববিধি। ছবি: সুব্রত জানা।
বিধিনিষেধেও রোখা যাচ্ছে না। সহসা এক ধাক্কায় করোনার দৈনিক সংক্রমণের হার বেড়ে গেল হাওড়ায়। জেলা স্বাস্থ্য দফতর বৃদ্ধির এই প্রবণতাতে উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতি সামাল দিতে দোকান-বাজার বন্ধ রাখার সময়সূচি যাতে সবাই কঠোর ভাবে পালন করেন, তা দেখতে পুলিশের নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক মুক্তা আর্য।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, বর্তমান অবস্থা গোষ্ঠী সংক্রমণের চেয়েও বিপজ্জনক। হাওড়া জেলায় সেটাই ঘটেছে। একটা সময়ে সংক্রমণ শুধুমাত্র শহর এলাকায় সীমাবদ্ধ ছিল। এখন তা গ্রামেও ছড়াচ্ছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘সংক্রমণ বাড়ার হার বিপজ্জনক।’’ মাস্ক পরা, বিভিন্ন এলাকা জীবাণুমুক্ত করা এবং সেফ হোমের সংখ্যা বাড়ানোর জন্য নানা পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জেলাশাসক জানান।
গত ৮ মে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিনে দেখা যাচ্ছে, সে দিন জেলায় সংক্রমণ ঘটেছে ১১৯৬ জনের। আগের দিন সেই সংখ্যা ছিল ৯৩৪। অর্থাৎ, ২৪ ঘণ্টায় ২৬২ জনেরও বেশি সংক্রমিত হয়েছেন। ৮ তারিখের রিপোর্টে মৃত দেখানো হয়েছিল ৬ জনকে। আগের দিন মৃত ছিল ৪ জন। অর্থাৎ, মৃত্যুও বেড়েছে। অথচ, ৭ মে পর্যন্ত কিন্তু দৈনিক সংক্রমণের ক্ষেত্রে তেমন কোনও বড় ধরনের হেরফের ছিল না। বরং, মাঝেমধ্যে তা কমতেও দেখা গিয়েছিল। দৈনিক সুস্থতার হারও ছিল সন্তোষজনক।
সংক্রমণের নিরিখে ৮ মে শুধু আগের এক সপ্তাহের রেকর্ডই ভাঙেনি, সংক্রমিতের অনুপাতে সুস্থতার হারও আগের ছ’দিনের চেয়ে বেশ কম দেখা গিয়েছে। ওইদিন সুস্থ হয়েছেন ৯৬৩ জন।
কেন এই অবস্থা?
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা জানান, অনেক বেশি পরীক্ষা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও উপসর্গহীন রোগীরা এর বাইরে থেকে যাচ্ছেন। তাঁদের কাছ থেকেই দ্রুত ছড়াচ্ছে করোনা। এর একমাত্র প্রতিবিধান দূরত্ব বাড়ানো, মাস্ক পরা।
জেলাশাসক জানান, পুলিশের সঙ্গে শনিবারেই বৈঠক হয়েছে বাজারগুলি যাতে নিয়ম মেনে খোলা এবং বন্ধ হয় তা কড়া ভাবে অনুসরণ করার জন্য। মাস্ক পরার জন্য নজরদারিও বাড়াতে বলা হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে জেলায় যে সব সেফ হোম ছিল, সেগুলি ফের খোলার জন্যেও তোড়জোড় চলছে বলে জেলাশাসক জানান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার দাবি, ‘‘বাজার-দোকান খোলার সময় বেঁধে দেওয়ার পরে ১৫ দিন দেখতে হবে। আশা করা যায় তারপর থেকে সংক্রমণ কমতে থাকবে।’’ তবে, বর্তমান পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁরা প্রস্তুত আছেন এবং জেলার করোনা হাসপাতালগুলির শয্যা বাড়ানোর পরিকল্পনাও করা হচ্ছে বলে ওই স্বাস্থ্যকর্তা জানান।