Dhaniakhali CPIM

রাজ্য নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, বিদ্রোহ বাড়ছে ধনেখালি সিপিএমে

দলের জেলা কমিটির তরফে ধনেখালির দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল হাই। তাঁর আচরণ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেই দলে ‘বিদ্রোহ’ দেখা দেয় মাস কয়েক আগে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায় 

ধনেখালি শেষ আপডেট: ১৪ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৭
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

সিপিএমের প্রাক্তন ধনেখালি জোনাল কমিটির সম্পাদক দিলীপ মুখোপাধ্যায় এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতা শক্তি দাস-সহ সেখানকার ১৬ জনকে দল ‘সাসপেন্ড’ করায় আড়াআড়ি বিভক্ত হয়ে গিয়েছে স্থানীয় সংগঠন। অধিকাংশ সদস্যই ‘বিদ্রোহী’দের দিকে। তাঁদের ক্ষোভ, ‘সাসপেন্ড’ হওয়া দলীয় নেতাদের বক্তব্য শোনার পরেও দলের রাজ্য নেতৃত্ব মুখ ফিরিয়ে রয়েছেন। সিপিএমের একটি সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জন দলীয় সদস্যপদ ছাড়তে চেয়ে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন দলের কাছে।

Advertisement

জেলা সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য গোটা বিষয়টি নিয়ে সংবাদমাধ্যমের কাছে মুখে কুলুপ এঁটেছেন। তবে, পরিস্থিতির জেরে ধনেখালিতে সদ্য দলের এরিয়া কমিটি ভেঙে প্রস্তুতি কমিটি গড়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তার দায়িত্বে থাকা নেতা সুনীলকুমার বাগ জরুরি বৈঠকে বসেছিলেন মঙ্গলবার সন্ধ্যায়। বৈঠক থেকেই তিনি বলেন, ‘‘এখানে দলের কোনও সমস্যা নেই। সাংগঠনিক কোনও বিষয়ে কাগজে কিছু বলব না।’’

দলের জেলা কমিটির তরফে ধনেখালির দায়িত্বে ছিলেন আব্দুল হাই। তাঁর আচরণ নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেই দলে ‘বিদ্রোহ’ দেখা দেয় মাস কয়েক আগে। পঞ্চায়েত ভোটে দলের খারাপ ফলের জন্য আঙুল তোলা হয় ‘বিদ্রোহী’দের দিকে। পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা নেতৃত্ব তদন্ত শুরু করে। তদন্ত কমিটির মাথায় বসানো হয় উত্তরপাড়ার প্রাক্তন বিধায়ক শ্রুতিনাথ প্রহরাজকে। দলকে দেওয়া তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে পরবর্তী পর্যায়ে জেলা নেতৃত্ব দলের বেশ কিছু সদস্যকে সাসপেন্ডের সুপারিশ করে। তাতে ক্ষোভের মাত্রা চড়ে। জেলা নেতৃত্বের সেই তদন্ত রিপোর্ট এবং সাসপেন্ড করার প্রক্রিয়ায় সিলমোহর দেন দলের রাজ্য নেতৃত্ব। তাতে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ে।

Advertisement

এক বিদ্রোহী নেতা বলেন, ‘‘জেলা নেতৃত্ব যাঁদের তদন্তের দায়িত্ব দিল, তাঁরা ধনেখালির মাটি কতটা চেনেন? কোনও অভিজ্ঞতা আছে? তাঁরা যে জায়গায় থাকেন, সেখানে পার্টির হাল কী করে ছেড়েছেন? একপেশে তদন্তে রাজ্য নেতৃত্ব চোখ বুজে অনুমোদন দিল। এরপর আর দলে থাকার মানে হয় না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে আমরা যদি অর্ন্তঘাত করেই থাকি, তা হলে একমাত্র পান্ডুয়ায় কিছুটা মন্দের ভাল ছাড়া জেলায় চারটি মহকুমার কোথায় ভাল ফল হয়েছে, দল দেখিয়ে দিক।’’

বিতর্ক নিয়ে সিপিএমের রাজ্য কমিটির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘দলের গঠনতন্ত্র অনুয়ায়ী তদন্ত করে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাঁদের সাসপেন্ড করা হয়েছে, পরে তাঁদের একাংশ রাজ্য কমিটির কাছে আসেন। কিন্তু তার আগেই তো প্রক্রিয়া শেষ। এরপর আর কী করার ছিল!’’ তাঁর কথায়, ‘‘একজনকেও বহিষ্কার করা হয়নি। যাঁরা দীর্ঘদিন দল করছেন, তাঁরা এই সব দলীয় প্রক্রিয়ার মানে বোঝেন। সবটা সংবাদমাধ্যমকে জানানোর নয়।’’

এই প্রসঙ্গে এক ‘বিদ্রোহী’ নেতার বক্তব্য, ‘‘জেলা কমিটি এবং তদন্ত কমিটির কাছে বিচার না পেয়ে কেউ যদি রাজ্য নেতৃত্বের দরজায় কড়া নাড়েন, সেই ক্ষেত্রেও তাঁরা দলীয় প্রক্রিয়ার দোহাই দেবেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন