water logging

Howrah Water Logging: নোংরা জলে এক মাস ধরে ডুবে হাওড়ার ওয়ার্ড

তিন নম্বর নিকাশি খাল উপচে পড়ায় এক মাস ধরে এমনই অবস্থা কোনার পেয়ারাবাগান, রামকৃষ্ণপল্লি এবং কাশীপুরের অলিগলির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৭:৫৪
Share:

অসহনীয়: দীর্ঘ দিন ধরে জমে থাকা কালো জলে ভেলা ভাসিয়ে পানীয় জলের সন্ধানে মা ও ছেলে। সোমবার, হাওড়ার পেয়ারাবাগান এলাকায়। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

‘‘কী ভাবে বেঁচে আছি, দেখতে পাচ্ছেন? বাড়িতে খাবার ফুরিয়ে এসেছে। পানীয় জলও নেই। সব ক’টা কল জলের তলায় ডুবে আছে। আমার বৌমা ভেলায় চড়ে গিয়ে জল কিনে আনছে। কিন্তু এ ভাবে আর কত দিন? প্রশাসন বলে কি কিছু নেই?’’ ঝাঁঝিয়ে উঠলেন অশীতিপর মায়ারানি দাস।

Advertisement

ওই বৃদ্ধার টালির চালের একতলা ঘরে এখনও জমে জল। সংসার উঠেছে বিছানার উপরে। ঘরের বাইরেটা এক ঝলক দেখলে মনে হবে যেন, বন্যায় ভেসে যাওয়া কোনও গ্রাম। চার দিকে শুধু জল আর জল। তবে বন্যার জলের মতো ঘোলাটে নয়। এই জল কালো, নোংরা, আর প্রবল দুর্গন্ধযুক্ত।

হাওড়া পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের ওই এলাকার নাম পেয়ারাবাগান। স্থানীয়দের অভিযোগ, তিন নম্বর নিকাশি খাল উপচে পড়ায় এক মাস ধরে এমনই অবস্থা কোনার পেয়ারাবাগান, রামকৃষ্ণপল্লি এবং কাশীপুরের অলিগলির। ঘরবাড়ির ভিতরে হাঁটুজল, কোথাও বেশি। এলাকার বাসিন্দা, সরকারি কর্মী স্বরূপ দেব বললেন, ‘‘বৃষ্টির পূর্বাভাস শুনলেই আতঙ্কে কেঁপে উঠি। আরও বেশি জল ঠেলে অফিস যেতে হবে?’’ মঙ্গল ও বুধবার ফের অতিবৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় তাই তটস্থ তাঁরা।

Advertisement

কেন এই অবস্থা? ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলর ত্রিলোকেশ মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘এই এলাকা দিয়ে হাওড়ার অন্যতম প্রধান নিকাশি পথ তিন নম্বর খাল গিয়েছে। কিন্তু খালের পলি ২০১৩-’১৪ সালে শেষ বার পরিষ্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে খালের গভীরতা পাঁচ ফুটে এসে দাঁড়িয়েছে। তাই এমন অবস্থা।’’

হাওড়া পুরসভার নিকাশি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ৭, ৮, ৯, ৪৯ ও ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের জমা জল এবং হাওড়ার অধিকাংশ নর্দমার জলই তিন নম্বর খালে গিয়ে পড়ে। পুরসভার বক্তব্য, প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই খালটির সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে সেচ দফতর। কিন্তু খাল থেকে তারা পলি না তোলায় সেটির জলধারণ ক্ষমতা এখন তলানিতে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই শহর ভাসছে।

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সেচ দফতরের এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি বছরই পলি তোলা হয়। এ বছর অতিবৃষ্টির কারণে গঙ্গার জলস্তর বেড়ে যাওয়ায় খালের জল বেরোতে পারছে না।’’

পুরসভার প্রশাসকমণ্ডলীর চেয়ারপার্সন সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘ওই সমস্ত এলাকায় শুকনো খাবার আর পানীয় জল পাঠানো হচ্ছে। বৃষ্টি থামলেই পলি তোলার কাজ শুরু করবে সেচ দফতর। দু’-এক দিনের মধ্যেই পুরসভার ইঞ্জিনিয়ার ও আইআইইএসটি-র সিভিল ইঞ্জিনিয়ারেরা এলাকা পরিদর্শন করে ব্যবস্থা নেবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন