Laxmi Puja 2023

বাজার চড়া, গেরস্থের হাত পুড়ছে শ্রী-আরাধনায়

শেওড়াফুলি বাজারে ফুলকপির দাম পিস প্রতি ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। ৪০ টাকার পটল বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। ঝিঙে কিলো প্রতি ৫০টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা কিলো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া ও হুগলি শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৫০
Share:

উলুবেড়িয়ার গরুঘাটায় মূর্তি কেনা চলছে। —নিজস্ব চিত্র।

ধনবৃদ্ধির কামনায় লক্ষ্মী আরাধনা চলে বাংলার ঘরে ঘরে। অথচ, ধনদেবীর পুজোর আয়োজন করতে গিয়ে পকেটে টান পড়ছে গেরস্থের। বৃহস্পতিবার হাওড়া ও হুগলির বিভিন্ন বাজারে ঘুরে সামনে এল তেমনই ছবি। ফল, ফুল, আনাজের পাশাপাশি মূর্তির দাম বেড়েছে বলেও জানিয়েছেন
ক্রেতারা। আবার বিক্রেতারা জানিয়েছেন, বিকিকিনি চললেও বাজার ভাল নয় তাঁদেরও।

Advertisement

লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে ভিড় আছে দশকর্মা ভান্ডারে। সব্জি বাজার, মুদির দোকান, ফলের দোকানেও ভিড় নজরে এসেছে। আরামবাগে ফলের দোকানে বেদানা ছাড়া বিশেষ দামের হেরফের হয়নি। বেদানা ২৫০ টাকা কিলোর জায়গায় হয়েছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা। সপ্তাহ খানেক ধরেই কাঁঠালি কলা বিকিয়েছে ৫ টাকা পিস হিসেবে। এ দিনও সেই দাম ছিল। শশার দাম তুলনামূলক কম, ৩০ টাকা কিলো। রাঙালু ও শাঁকালু এক লাফে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ৮০ টাকা।

তবে আনাজ বাজারে সব কিছুর দাম দু’দিনের মধ্যেই ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। মুঠো মাপের একটি ফুলকপির দাম ২০ টাকা। পেঁয়াজ কিলো প্রতি ৫৫ থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। বেগুন ৪০ টাকা, টোম্যাটো ৪৫ টাকা, ঝিঙে ৫০ টাকা, পটল ৫০ টাকা। এছাড়া পদ্মফুল ৩০ টাকা পিস। ধানের শিস গোছা
পিছু ১৫ টাকা।

Advertisement

এ দিন শেওড়াফুলি বাজারে ফুলকপির দাম পিস প্রতি ৪০-৫০ টাকা হয়েছে। ৪০ টাকার পটল বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। ঝিঙে কিলো প্রতি ৫০টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা কিলো হয়েছে। শশা ৫০ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা হয়েছে। করলা ৪০ টাকা প্রতি কিলো ছিল। তা বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। বেগুন ৫০ টাকা হয়েছে। ঢেঁড়স ৫০ টাকা থেকে বেড়ে হয়েছে ৬০ টাকা। কড়াইশুটি ২৫০, বাঁধাকপি ৬০, কাঁচা আম ২০০ টাকা কিলো, পালং শাক ১২০ টাকা কেজি ও গাজর ৬০ টাকা কেজি হয়েছে।

শেওড়াফুলি পাইকারি বাজারে শ্রীরামপুরের নওগাঁর বাসিন্দা শুভ্র সামন্ত বলেন, ‘‘প্রতি বছরই লক্ষ্মী পুজোর আগে বাজারে জিনিসের দাম বাড়ে। তবে এ বার দামটা আরও একটু উপরের দিকেই। তবে পুজো তো বন্ধ করতে পারব না। জিনিস কেনার পরিমাণ কমিয়েছি।’’

প্রতিমা বিক্রেতা দেবব্রত সাহার কথায়, ‘‘বিভিন্ন মাপের প্রতিমার দাম এক-দেড়শো টাকা চড়া দরে পাইকারি কিনতে হয়েছে। সামান্য লাভ রেখে আমাদের বিক্রি করতে হয়। তবে বড় প্রতিমার বিক্রি কমেছে। ক্রেতারা ছোট প্রতিমা দিয়েই কাজ সারছেন।’’ বিক্রি কমেছে বলে দাবি ফল বিক্রেতা উমেশ সাউ-এর। তিনি বলেন, ‘‘সকালে যে ফল ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, সেই ফল এখন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ক্রেতা থাকলেও বিক্রির পরিমাণ কমেছে।’’

উলুবেড়িয়া বাজারের ছবিও একই। দোকানদারদের দাবি, দুর্গাপুজোর আগেই কাঁচা বাজার, ফল ও ফুলের দাম চড়া। ছোট ছোট ছাঁচের প্রতিমা যেটার দাম ছিল ১৫০ টাকার মধ্যে, তার দাম এ দিন ছিল আড়াইশো টাকার উপরে। ছোট রজনী ও গাঁদা ফুলের মালার দাম ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকা। নারকেল ৫০ থেকে ৭০ টাকা পিস। উলুবেড়িয়ার স্বাতী সাহা হেসে বলেন, ‘‘লক্ষ্মীর আর এক নাম তো শ্রী। কিন্তু লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন করতে গিয়ে আমাদের শ্রী-হীন অবস্থা। তবু লক্ষ্মীকে ঘরে আনতেই হবে। না হলে শ্রী-বৃদ্ধি হবে কী করে?’’

তথ্য সহায়তা: পীযূষ নন্দী, কেদারনাথ ঘোষ ও সুব্রত জানা

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন