Political Conflict

পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি গঠনে নিয়ে দ্বন্দ্ব তৃণমূলে

জয়দেবও একটি তালিকা বের করেন। ভোটাভুটির দাবি ওঠে। তখনই দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়ায়। জেলা পরিষদের তিন সদস্য সভাকক্ষ ছেড়ে চলে যান।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

চণ্ডীতলা শেষ আপডেট: ২৯ অগস্ট ২০২৩ ০৫:৫৫
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

আসনসংখ্যা ২৭। ২৫টিই তৃণমূলের দখলে। তা সত্ত্বেও চণ্ডীতলা-২ পঞ্চায়েত সমিতিতে মসৃণ ভাবে স্থায়ী সমিতি গঠন করতে পারল না শাসকদল।

Advertisement

কোন পক্ষ প্রাধান্য পাবে, তা নিয়ে সোমবার স্থায়ী সমিতি গঠনের সভার মাঝেই তৃণমূল সদস্যদের দু’পক্ষের মধ্যে তুমুল বিতণ্ডা হল। এক পক্ষ সভা বয়কট করে বেরিয়ে যায়। শেষে, দলীয় নির্দেশের বাইরে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি জয়দেব রক্ষিতের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ওই সমিতি তৈরি হয়। সব মিলিয়ে, ভোটে জিতে পঞ্চায়েত সমিতি কাজ শুরুর আগেই শাসকদলের দু’পক্ষের ফাটল কার্যত প্রকাশ্যে চলে এল।

পঞ্চায়েত সমিতির হলঘরে এ দিন স্থায়ী সমিতি গঠনের সভা হয়। তৃণমূলের ২৩ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। ওই ব্লক থেকে জয়ী দলের ৩ জেলা পরিষদ সদস্যও আসেন। ব্লকের ৯টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টির প্রধান এসেছিলেন। স্থায়ী সমিতির সদস্য কারা হবেন, দলীয় নির্দেশ অনুযায়ী সেই তালিকা বের করেন সমিতির সদস্য তথা ব্লক সভাপতি বিকাশ ঘোষ।

Advertisement

অন্য দিকে, জয়দেবও একটি তালিকা বের করেন। ভোটাভুটির দাবি ওঠে। তখনই দু’পক্ষ নিজেদের মধ্যে বচসায় জড়ায়। জেলা পরিষদের তিন সদস্য সভাকক্ষ ছেড়ে চলে যান। এর পরে বিকাশ-সহ সমিতির ১০ জন সদস্যও সভা বয়কট করে বেরিয়ে যান। তৃণমূল সূত্রে খবর, বিকাশ স্থানীয় বিধায়ক স্বাতী খন্দকারের গোষ্ঠীর লোক বলে পরিচিত। জয়দেব দলের অন্য গোষ্ঠীর নেতা।

বিকাশের ক্ষোভ, ‘‘দলীয় প্রতীকে যাঁরা জয়লাভ করলেন, তাঁরা দলীয় নির্দেশ অমান্য করে স্থায়ী সমিতি গঠন করলেন। দলের উচ্চ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানানো হবে।’’ একই বক্তব্য বিধায়ক স্বাতীরও। তবে, জয়দেবের প্রতিক্রিয়া, ‘‘দলীয় নির্দেশ অমান্য করা হয়নি। স্থায়ী সমিতি গঠনের নাম প্রস্তাবের সময় আর একটি তালিকা বলা হয়েছে। ফলে, ভোটাভুটি হত। সমিতির সদস্যদের মধ্যে আলোচনায় যে যে নাম উঠে এসেছে, সেই তালিকা আমি দিয়েছি।’’ সমিতির জয়দেব-ঘনিষ্ঠ এক সদস্য বলেন, ‘‘ভোটের আগে দলের তরফে যে প্রার্থীদের নাম পাঠানো হয়েছিল, তাঁদের পরিবর্তে অন্যেরা কী ভাবে এলেন, সেই জবাব আগে দিন। সে ক্ষেত্রে দলীয় নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে।’’

শাসক দলের অভ্যন্তরীণ এই গোলমালে ‘টাকা কামানোর লড়াই’ দেখছেন বিরোধীরা। সমিতিতে সিপিএমের দু’টি আসন রয়েছে। ওই দলের চণ্ডীতলা-২ এরিয়া কমিটির সম্পাদক অপূর্বকুমার পাল বলেন, ‘‘তৃণমূলের জনপ্রতিনিধিদের লক্ষ্য কাটমানির টাকায় নিজেদের সম্পদ বাড়ানো।‌ তাই, পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী কমিটির গঠনের সময় ওঁরা একে অপরের প্রতিপক্ষ। কাটমানির টাকা পেলে, আবার সব এক হয়ে যাবে।’’ একই সুরে বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি মোহন আদকের মন্তব্য, ‘‘আগামী পাঁচ বছর মধুভাণ্ডের ভাগ নিয়ে তৃণমূলের লড়াই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন