National level Long Jump Competition

জাতীয় জুনিয়রে সোনা, নন্দিনীর আরও লম্বা লাফ চান বাবা

খেলার মাঠে সফল হতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পাশাপাশি পরিবারের অনটনকেও হারাতে হচ্ছে পুরশুড়ার ভাঙামোড়া সারদামমি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নন্দিনীকে।

Advertisement

পীযূষ নন্দী

পুরশুড়া শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৬
Share:

সোনা হাতে নন্দিনী সাঁতরা। —নিজস্ব চিত্র।

৩৮তম জাতীয় জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতায় লং জাম্পে সোনা জিতল হুগলি জেলার পুরশুড়ার সাহাপুর গ্রামের কিশোরী নন্দিনী সাঁতরা। তামিলনাড়ুর কোয়েম্বত্তুরের নেহরু স্টেডিয়ামে ওই প্রতিযোগিতা গত ৭ নভেম্বর শুরু হয়। প্রতিযোগিতা শেষ হয় ১০ তারিখে। ৮ তারিখে অনূর্ধ্ব-১৬ বিভাগে লং জাম্পে
৫.৪৬ মিটার লাফিয়ে সোনা পায় পুরশুড়ার মেয়েটি।

Advertisement

আরামবাগ মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক নয়ন তরফদারের
উচ্ছ্বাস, ‘‘আমাদের জেলার গর্ব বাড়িয়েছে নন্দিনী।’’

খেলার মাঠে সফল হতে প্রতিদ্বন্দ্বীদের পাশাপাশি পরিবারের অনটনকেও হারাতে হচ্ছে পুরশুড়ার ভাঙামোড়া সারদামমি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নন্দিনীকে। তার প্রশিক্ষক তারকেশ্বরের রাজদীপ কারক। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম বার জাতীয় স্তরের প্রতিযোগিতায় গেল নন্দিনী। প্রথম বারেই দুর্দান্ত ফলাফল করল। ওর মধ্যে অনেক প্রতিভা রয়েছে। এখন দেশের চ্যাম্পিয়ন হল। এই ধারা বজায় রাখতে পারলে ভবিষ্যতে
আন্তর্জাতিক স্তরে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবে এবং সেখানেও ভাল ফল করে গোটা দেশকেই গর্বিত করবে বলে আমার বিশ্বাস।’’

Advertisement

২০১৯ সালে ডিসেম্বরে প্রাথমিক, নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা ছাত্রছাত্রীদের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার রাজ্য স্তরে ২০০ মিটার দৌড়, লং জাম্প এবং রিলে দৌড়ে প্রথম হয়েছিল নন্দিনী। তখন তার কোচ ছিলেন দিনমজুর বাবা নকুল সাঁতরা। রাজদীপ জানান, ওই প্রতিযোগিতায় নন্দিনীকে দেখেই তাঁর ভাল লেগে যায়। তারকেশ্বরের মাঠে গিয়ে তাঁর কাছে অনুশীলনের জন্য তিনি প্রস্তাব দেন নন্দিনীর বাবা-মাকে। এর পর থেকে সেখানেই
অনুশীলন শুরু করে মেয়েটি। যদিও করোনা-পর্বে প্রশিক্ষণে ছেদ পড়েছিল। তবে, তাতে তার ধার কমেনি।

নকুল জানান, পরিবারের আর্থিক অবস্থার কারণে তাঁর নিজের ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। এখন কষ্ট করেও একমাত্র সন্তানকে খেলাধুলোয় প্রতিষ্ঠিত করাই তাঁর স্বপ্ন। বাবার তৃপ্তি, ‘‘মেয়ে সেই স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছে। তবে, আরও অনেক দূর যেতে হবে ওকে। আরও বড় লাফ দিতে হবে। আমার বিশ্বাস, মেয়ে পারবে।’’ নন্দিনীর মা টুসি সাঁতরা গৃহবধূ। তাঁর কথায়, ‘‘মেয়ে খুব ছোট থেকেই
বিভিন্ন খেলায় আগ্রহী। আমরা সব সময় ওর পাশে থাকার চেষ্টা করি। ওকে উৎসাহ জোগাই।’’

আর নন্দিনী বলেছে, ‘‘ভবিষ্যতে দেশের হয়ে খেলতে চাই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন