Fraud

Scam Racket: ‘ভাগ্যবান’ হতে গিয়ে বাগনানে প্রতারিত বহু

প্রলোভনের পর প্রলোভন! প্রথমে লটারি জেতার হাতছানি। তারপরে ‘বিমা সংস্থা’য় লগ্নিতে ফুলেফেঁপে ওঠার আশ্বাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বাগনান শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:৫৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রলোভনের পর প্রলোভন! প্রথমে লটারি জেতার হাতছানি। তারপরে ‘বিমা সংস্থা’য় লগ্নিতে ফুলেফেঁপে ওঠার আশ্বাস। ‘ভাগ্যবান’ হতে গিয়ে শনিবার একই ছাদের তলায় দাঁড়িয়ে প্রতারিত হতে হল বাগনানের বেশ কিছু মানুষকে।

Advertisement

লটারির পুরস্কার জিতেছেনে জেনে এ দিন কয়েকশো লোক জড়ো হয়েছিলেন এলাকার একটি অনুষ্ঠান ভবনে। সেখানে নিজেদের বিমা সংস্থার লোক দাবি করে একটি দল সকলকে লগ্নির নানা ‘পলিসি’ বোঝায় বলে অভিযোগ। সেইমতো হাজির হওয়া লোকজনের মধ্যে অনেকেই বড় অঙ্কের টাকা বা চেক দিয়ে দেন। তাঁদের শংসাপত্র দেওয়া হয়। কিন্তু পরে লগ্নিকারীরা জানতে পারেন, শংসাপত্র ভুয়ো। পুলিশে অভিযোগ হয়। প্রতারণার অভিযোগে পুলিশ ১৭ জন মহিলা-সহ ২৪ জনকে গ্রেফতার করে। কয়েকজন পালায়। ১৩ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

বেশ কয়েক বছর আগে সারদা-সহ বিভিন্ন ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার প্রতারণার কথা সামনে আসার পর পুলিশ প্রশাসন এবং ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এ জাতীয় ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য সাধারণ মানুষকে বারবার সতর্ক করেছে। কিন্তু তারপরেও এক শ্রেণির মানুষ বাড়তি লাভের আশা যে ছাড়তে পারছেন না, এ দিনের ঘটনা তারই প্রমাণ বলে মনে করছেন হাওড়া জেলা গ্রামীণ পুলিশের এক আধিকারিক। তিনি বলেন, ‘‘গাড়িতে করে পালানোর সময়ে ওই ২৪ জনকে ধরা হয়। অভিযুক্তদের মধ্যে দু’তিন জন পলাতক। তাদের খোঁজ চলছে। চক্রে আরও কেউ জড়িত কি না, সেটাও দেখা হচ্ছে। বাকি টাকা উদ্ধারের
চেষ্টা হচ্ছে।’’

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে বাগনানে লটারি প্রতিযোগিতার নাম করে কয়েকজন যুবক-যুবতী কুপন বিলি করে। তারা জানায়, কুপনে দেওয়া নম্বরে লটারি হবে। ভাগ্যবানদের পুরস্কৃত করা হবে। যাঁরা কুপন নিয়েছিলেন, তাঁদের ফোন নম্বরও নিয়ে নেয় ওই যুবক-যুবতীরা।

পরে ওই যুবক-যুবতীরা ফোন করে কুপনধারীদের জানান, তাঁরা জিতেছেন। শনিবার পুরস্কার দেওয়া হবে বাগনানের ওই অনুষ্ঠান-বাড়িতে। সেইমতো এ দিন সেখানে কয়েকশো মানুষ জড়ো হন। কিন্তু ‘পুরস্কার’ পাওয়ার আগে তাঁরা জানতে পারেন, ওই যুবক-যুবতীরা একটি বিমা সংস্থার কর্মীর। এরপরই যুবক-যুবতীরা তাঁদের বিমার নানা রকম ‘পলিসি’ বোঝানো শুরু করেবলে অভিযোগ। কোনও ‘পলিসি’ তিন বছরে টাকা দ্বিগুণের, কোনওটা বছর বছর বাড়তি টাকা ফেরতের। অনেকেই আগ্রহ দেখিয়ে লগ্নি করে ফেরেন।

লগ্নিকারীদের মধ্যে ছিলেন বাগনানের বাইনানের বাসিন্দা সাফিয়ার রহমান মিদ্দা। তিনি সস্ত্রীক ওই ভবনে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘১২ হাজার ৬০০ টাকা আমার কাছ থেকে বিমার পলিসির জন্য ওরা নেয়। একটি সার্টিফিকেট দেয়। পরে যাচাই করে দেখি ভুয়ো। ঘণ্টাদুয়েক পরে আমি গিয়ে টাকা ফেরত চাই। ওরা দিতে অস্বীকার করে। পালানোর চেষ্টা করে। অনেকে প্রতিবাদ করায় ওরা কয়েকজনকে মারধর করে পালানোর চেষ্টা করে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। অনেক কষ্টে টাকাটা জমিয়ে ছিলাম ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য। প্রলোভন দেখিয়ে টাকাটা হাতিয়ে নিল।’’

একই রকম হাহুতাশ শোনা গিয়েছে আরও কয়েকজন প্রতারিতের মুখেও। ধৃতদের রবিবার উলুবেড়িয়া মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের এক দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আজ, সোমবার ফের তাদের আদালতে হাজির করানো হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন