Duare sarkar

‘দুয়ারে সরকার’ সরকারি স্কুলে, বন্ধ রইল পড়াশোনা

মিড ডে মিল বিলি ও পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। পঞ্চায়েতের দাবি, স্কুল ভবনের শুধমাত্র এক তলায় কর্মসূচি চলছে। ফলে বাকি দু’তলায় পঠনপাঠন বন্ধ থাকার কোনও কারণ নেই।

Advertisement

সুব্রত জানা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২২ ০৭:০৩
Share:

স্কুল বন্ধ রেখে দুয়ারে সরকার। প্রতীকী চিত্র।

সরকারি স্কুল ভবন দখল করে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের জোয়ারগোড়িতে চলল ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি। তার জেরে মিড ডে মিল বিলি ও পঠনপাঠন বন্ধ থাকায় ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। পঞ্চায়েতের দাবি, স্কুল ভবনের শুধমাত্র এক তলায় কর্মসূচি চলছে। ফলে বাকি দু’তলায় পঠনপাঠন বন্ধ থাকার কোনও কারণ নেই। আর স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, এমন বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে কোনওভাবে পড়ানো সম্ভব নয়। তাই স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। উলবেড়িয়া-২-এর বিডিও অতনু দাশ বলেন, ‘‘যতদূর জানি, পঞ্চায়েতের তরফে স্কুলের কয়েকটা ঘর চাওয়া হয়েছিল। কেন স্কুল বন্ধ থাকল, খোঁজ নিয়ে দেখব।’’

Advertisement

বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ফের রাজ্য জুড়ে শুরু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’। বৃহস্পতিবার জোয়ারগোড়ি পঞ্চায়েতের এই কর্মসূচি চালানো হয় জোয়ারগোড়ি ইউনিয়ন হাই স্কুলে। এ দিন সকাল থেকে মাইক বাজিয়ে চলে গ্রামবাসীকে কর্মসূচি জানানো হয়। ভিড়ও ছিল শিবিরে। এক অভিভাবকের ক্ষোভ, ‘‘দু’বছর ধরে তো পড়াশোনা বন্ধ ছিল। স্কুল খোলার পর নানা অজুহাতে সেটা বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। গরমের লম্বা ছুটি চলল, পুজোর ছুটির পর এ বার ‘দুয়ারে সরকার’। এমন করে পড়াশোনা হয়?’’

স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা অনুপমা দত্ত বলেন, ‘‘দিনভর যেখানে মাইক বাজছে, সেখানে পড়াশোনা হবে কী করে? তাছাড়া স্কুল চত্বরে এত বাইরের লোকের আনাগোনা থাকলে নিরাপত্তারও সমস্যা হয়। তাই এ দিন স্কুল ছুটি দেওয়া হয়েছিল। মিড ডে মিলও দেওয়া হয়নি।’’ তাঁর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের সামনেই একটি নতুন স্কুল-ভবন রয়েছে। সেখানে এখনও ক্লাস হয় না। সেটাই পঞ্চায়েতকে নিতে বলেছিলাম। ওরা রাজি হল না। তাহলে আমাদের এই স্কুল খোলা রাখতে সমস্যা হত না।’’

Advertisement

জোয়ারগোড়ির তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান মানিক মাখালের সাফাই, ‘‘স্কুলের তরফে ঘর চেয়েছিলাম ঠিকই। তা বলে পড়াশোনা বন্ধ করতে তো বলিনি। আর ওই নতুন ভবনে বিদ্যুৎ নেই। ফলে কাজ করতে অসুবিধা হত।’’ কিন্তু সেখানে তো জেনারেটরের মাধ্যমেও কাজ চালানো যেত? আর কোনও উত্তর দেননি প্রধান।

বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। স্থানীয় বিজেপি নেতা চিরণ বেরা বলেন, ‘‘তৃণমূল নিয়ম ভাঙায় সেরা। ওদের আমলে সরকারি স্কুল এ ভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে। ওরা কাউকে পড়তে দেবে না। তা হলে আর টাকা দিয়ে চাকরি ওরা কাকে দেবে?’’ স্থানীয় সিপিএম নেতা নবকুমার দুয়ারিও বলেন, ‘‘বাংলার শিক্ষাকে শেষ করে দিচ্ছে তৃণমূল। পড়াশোনা বন্ধ রাখতেই ওই স্কুলে শিবির করা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন