Senior Citizen Allowance

ভাতা পাননি হাওড়ার ৯০ হাজার বৃদ্ধ, ক্ষোভ

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বঞ্চিতদের তালিকায় আছেন মূলত তাঁদেরই একটা বড় অংশ, যাঁরা চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ০৯:০৮
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচিতে গিয়ে নাম লিখিয়ে এসেছেন। তারপরও হাওড়ার প্রায় ৯০ হাজার বৃদ্ধ, ভাতা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে জেলা জুড়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন বয়স্করা। আর লোকসভা ভোটের আগে এটাই গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে তৃণমূল নেতৃত্বের।

Advertisement

জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ জুলফিকার মোল্লা বলেন, ‘‘সমস্যাটির কথা জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে আমাদের বলা হয়েছে, শীঘ্রই সব যোগ্যরা বার্ধ‍ক্য ভাতা পেয়ে যাবেন।’’ অন্য দিকে, জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তা জানান, বিষয়টি নবান্ন দেখছে।

২০২১ সালে বিধানসভা নির্বাচনের ঠিক আগে ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি শুরু হয়। এ পর্যন্ত মোট আটটি শিবির হয়েছে। তাতে অন্যান্য প্রকল্পের সঙ্গে ‘জয় বাংলা’ প্রকল্পে ষাটোর্ধ্ব প্রবীণদের জন্য বার্ধক্য ভাতার জন্য অনেকে আবেদন করেছিলেন। তাঁদের অনেকেই ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু বঞ্চিতের সংখ্যাও কম নয়।

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, বঞ্চিতদের তালিকায় আছেন মূলত তাঁদেরই একটা বড় অংশ, যাঁরা চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শিবিরে নাম লিখিয়েছিলেন। এমনকি ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে যে সপ্তম ও অষ্টম শিবির হয়, তাতেও যাঁরা নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের ভাতা চালু হয়ে গিয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার কথায়, ‘‘যাঁরা পরে নাম লেখালেন, তাঁদের ভাতা অনুমোদন হয়ে গেল। অথচ যাঁরা আগে নাম লিখিয়েছেন, তাঁদের সিংহভাগ বঞ্চিত হচ্ছেন। এটা বেশ দৃষ্টিকটু ঠেকছে। পুরো বিষয়টি নবান্নকে জানানো হয়েছে।’’

বিড়মবনায় পড়েছেন তৃণমূল নেতারাও। অনেকেই জানিয়েছেন, বঞ্চিতরা তাঁদের কাছে এসে জানতে চাইছেন কেন তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না। এক তৃণমূল নেতার কথায়, ‘‘আমাদের কাছে এই বৈষম্যের কোনও উত্তর নেই।’’

সমস্যাটি ঠিক কোথায়?

এই ভাতা দেয় রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতর। এই দফতর সূত্রের খবর, একটা সময়ে সময়ে বার্ধক্যভাতা কত জনকে দেওয়া হবে তার একটা কোটা থাকত। ‘দুয়ারে সরকার’ শিবির চালু হওয়ার পরে সেই কোটা তুলে দেওয়া হয়। চালু হয় ‘জয় বাংলা’ পোর্টাল। ষাটোর্ধ্ব সব প্রবীণদের আবেদন করতে বলা হয় এই পোর্টালের মাধ্যমে।

প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শিবিরে যাঁরা আবেদন করেছিলেন, তাঁদের ভাতা চালুও করে দেওয়া হয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ শিবিরের ক্ষেত্রে। এত বেশি আবেদন জমা পড়ে যে চূড়ান্ত প্রাপকদের তালিকা করতে গিয়ে সেই সময় বহু আবেদনকারীর নাম বাদ পড়ে। অন্য দিকে, যেহেতু আগের তিনটি শিবিরে বেশির ভাগ আবেদন জমা পড়ে গিয়েছিল, তাই সপ্তম ও অষ্টম শিবিরে আবেদনকারীর সংখ্যা ছিল কম। তাই এই দুটি শিবিরের সবার ভাতা অনুমোদন করে দেওয়া হয়।

জানুয়ারি মাস থেকে চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শিবিরে আবেদনকারীদের ভাতা দেওয়া
শুরু হয়। তাতেই আর তিনটি
শিবিরের আবেদনকারীদের মধ্যে যাঁদের নাম বাদ পড়েছিল তাঁদের
নাম আর অন্তর্ভূক্ত করা হয়নি। ফলে তাঁদের বাদ দিয়েই বাকিদের ভাতা
চালু করে দেওয়া হয়। বিপত্তি দেখা দেয় তাতেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন