বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। ফাইল চিত্র।
তিন মাস ধরে বন্ধ কুন্তীঘাটের কেশোরাম রেয়ন কারখানা। অবিলম্বে উৎপাদন চালুর দাবি করছেন শ্রমিকরা। কিন্তু নানা অজুহাতে কর্তৃপক্ষ কারখানা খুলছেন না বলে অভিযোগ করলেন বলাগড়ের তৃণমূল বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারী। এর আগে শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্নার সঙ্গে অন্তত চার বার বৈঠক বসেছেন কর্তৃপক্ষ। সমাধানসূত্র মেলেনি।
শুক্রবার, বিশ্বকর্মা পুজোর বিকেলে মনোরঞ্জন কার্যত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার সব রকম ভাবে কারখানা কর্তৃপক্ষের পাশে আছেন। কিন্তু নানা অজুহাতে কর্তৃপক্ষ কারখানা খুলছেন না। কারখানার দরজা আগে খুলতে হবে। তার পরে কর্তৃপক্ষের আর্থিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলুক। তবে, কোনও শ্রমিক ছাঁটাই চলবে না।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘রাজ্য সরকারকে ওঁরা ব্যাঙ্কঋণের ব্যাপারে সহযোগিতা করতে বলেছিলেন। ফের আশ্বস্ত করছি, সব রকম ভাবে আমরা কর্তৃপক্ষের পাশে আছি। তবে, যা সিদ্ধান্ত নেওয়ার, আগামী সোমবারের মধ্যে নিতে হবে।’’ রাজ্য সরকারের সহযোগিতার উদাহরণ দিতে বিধায়কের বক্তব্য, একটি বৈঠকে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানান, ১ কোটির বেশি টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি পড়েছে। রাজ্যের তরফে সহানুভুতির সঙ্গে বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়। পরে, কর্তৃপক্ষ জানান, বিল মিটিয়ে দিয়েছেন।
কারখানা সূত্রের খবর, মালিকপক্ষের তরফে রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করা হয়েছিল, ব্যাঙ্কঋণের ক্ষেত্রে তারা যেন জামিনদার (গ্যারান্টার) হিসেবে থাকে। যদিও এক শ্রমিক নেতা বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষ স্থায়ী শ্রমিক ছাঁটাই করে ঠিকাকর্মী দিয়ে কারখানা চালাতে চাইছেন। এটা মানা যায় না। রাজ্য সরকারও এতে সহমত নয়। সেই কারণেই জট খুলছে না।’’ ওই শ্রমিক নেতার অভিযোগ, পঁয়তাল্লিশোর্ধ্ব শ্রমিকদের ছাঁটাই করতে চাইছেন কর্তৃপক্ষ। অন্য একটি শ্রমিক সংগঠনের নেতা বলেন, ‘‘সুষ্ঠু বিদায়-নীতির সঙ্গে ভাল প্যাকেজের বিষয়টি জড়িত। সে ক্ষেত্রে অন্তত ৫৫ বছরের ঊর্ধ্বে এবং যাঁরা কারখানার অচলাবস্থায় কাজের নিরাপত্তা নিয়ে সন্দিহান এবং স্বেচ্ছ্বাবসরে ইচ্ছুক, শুধু তাঁদের কথাই ভাবা যেতে পারে। জোর করে ছাঁটাই করা যাবে না।’’
কারখানা কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, আগে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে শ্রমিকদের বকেয়া মেটানো হবে। তার পরে কারখানা খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।